সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

 প্রিয় পাঠক আপনি কি সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান?আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা কালোজিরা কিভাবে খেতে হয়,কখন খেতে হয়,সে সম্পর্কে জানেন না। কালোজিরা কে বলা হয় মহাঔষধ।এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমি আপনাদের সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত  জানাতে চেষ্টা করব।

কালোজিরা
সকালে কিভাবে কালোজিরা খেতে হয় সেই সম্পর্কে আজ আমরা জানবো।এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো কিভাবে কালোজিরা খেতে হয়,কালোজিরার বিভিন্ন উপকারী গুণ সম্পর্কে এবং কি পরিমান কালোজিরা খেতে হয় সে বিষয়ে জানব।সুতরাং সময় নষ্ট না করে জেনে নেই কালোজিরা খাওয়ার বিস্তারিত তথ্য।

ভূমিকা

সাধারণত কালোজিরা রান্নার ফ্রম দেয়ার জন্য বেশি প্রচলিত।Nigella sativa হলো কালোজিরার বৈজ্ঞানিক নাম।কালোজিরা কিছু নাম রয়েছে যেমন কালো কেওড়া,রোমান ধনে,নিজেলা,কালঞ্জি ইত্যাদি।কালোজিরাকে যে নামেই ডাকা হোক না কেন এর উপকারিতা গুণ অপরিসীম।

সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া ছাড়াও কালোজিরা রান্নাঘরের খাবার খেয়ে সুবাসিত করে।তরকারিতে অন্য সব মসলার সাথেও কালোজিরা ব্যবহার করা হয়।কালোজিরাতে পুষ্টি উপাদান অনেক থাকে।তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক সকালে খালি পেটে কালোজিরা কাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

সকালে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

কালোজিরার উপকারী গুণ পেতে হলে আমাদের নিয়মিত সকলে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।আমরা বিভিন্নভাবে কালোজিরা খেতে পারি।তবে যেভাবে খায় না কেন প্রতিদিন খেলেই এর উপকারী গুণ পাওয়া যাবে।আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা এটা প্রতিদিন সকালে খান। তাহলে চলুন বন্ধগণ আমরা এই আর্টিকেলর মাধ্যমে জেনে নেই কালোজিরা খাওয়ার কিছু নিয়ম।

সাধারণত প্রতিদিন সকালবেলায় খালি পেটে পানির  অথবা মধু মিশেও আমরা কালোজিরা খেতে পারি। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা চাপা গরম ভাতের সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খান।এছাড়াও যে কোন তরকারি বা ভর্তায় কালোজিরা মিশিয়ে খাওয়া হয়।বিভিন্ন রকম মুখরোচক খাবার তৈরিতে কালোজিরা ব্যবহার করা হয় এতে খাবারের সাধারণ দ্বিগুণ হয়।খাবারের সাথে কালোজিরা মেশালে এর পুষ্টিগুণ আরো বেড়ে যায় যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

যৌবন ধরে রাখতেঃসকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করলে তারুন্য বজায় থাকে। পরিমাণ মতো প্রতিদিন সকালে কালোজিরা খেলে কোনরকম জন সমস্যা দেখা দেয় না।কালোজিরা খেলে যৌন শক্তি দ্বিগুণ হয়।এটি সেবনের ফলে সহবাসের সময় বাড়ায় ও লিঙ্গ শক্ত হয়।কালোজিরা যৌন অক্ষমতা দূর করে।

বাতের ব্যথা কমাতেঃ আমাদের মধ্যে যাদের বাতের ব্যথার সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। বাতের ব্যথা দূর করতে কালোজিরা তেলের মালিশ করলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।এছাড়াও এক চা চামুচ কালোজিরা সাথে এক চামুচ মধু মিশিয়ে কয়েক সপ্তাহ খেলে বাত ব্যথা কমে যায়।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কালোজিরা সাহায্য করে।কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়।

সর্দি কাশি সারাতেঃ সর্দি কাশি হলে কালোজিরার সাথে মধু ও তুলসী পাতা মিশে খেলে সর্দি-কাশি ভালো হয়ে যায়।কালোজিরা তেল পিঠে ও বুকে মালিশ করলে সর্দি তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।

চর্মরোগ সারাতেঃ শরীরে যে স্থানে চর্ম রোগ হয়। সেই অংশটুকু পরিষ্কার করে ধুয়ে সেখানে কালোজিরা তেল মালিশ করলে খুব দ্রুত চর্মরোগ সেরে যায়। এছাড়াও প্রতিদিন কালোজিরা খেলে শরীরে ক্ষত তাড়াতাড়ি সেরে যা

ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণেঃ খালি পেটে কালোজিরা সেবন করলে ডায়াবেটিক হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। ১ থেকে ২ চিমনি পরিমাণ কালোজিরা এক বা আধা গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে আমাদের শরীরের গ্লকোজের মাত্রা ঠিক থাকে।

গ্যাস্টিকের সমস্যা দূরীকরণেঃ থেকে সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাবার অভ্যাস করতে হবে। দুই থেকে তিন সপ্তাহ খালি পেটে কালোজিরা সেবন করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

শিশুর দৈহিক বৃদ্ধিতেঃ দুই বছরের বেশি শিশুদের কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। এতে শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বিকাশ সাধিত হবে। শিশুদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও এ কালোজিরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত

কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়

কালোজিরা খাওয়ার সুন্নত নিয়ম

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ কালোজিরা খুব পছন্দ করতেন এবং নিজে ব্যবহার করতেন। কালোজিরা এমন একটা ঔষধ যা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাহি সাল্লাম বলেছেন যখন রোগের কারণে যন্ত্রনা খুব বেশি হবে তখন এক চিমনি কালোজিরা নিয়ে।

তাতে পানি ও মধু দিয়ে সেবন করলে যে কোন রোগের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণায় দেখা গেছে একেক ধরনের রোগের জন্য কালোজিরার ব্যবহারও একক রকমের হয়ে থাকে।কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে কালোজিরা বেশ উপকারী।

এবং এমন কিছু রোগ রয়েছে যার জন্য কালোজিরার তেল বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।খালিদ ইবনে সাদ( রা।)থেকে বর্ণিত,আমরা যখন যুদ্ধের জন্য বের হতাম তখন সাথে কালোজিরা নিয়ে যেতাম।কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে কয়েকটা কালোজিরার দানা  পিষে তার মধ্যে জয়তুনের কয়েকটা ফোটা তেল ঢেলে দিয়ে অসুস্থ রোগীর নাকে মুখে দিলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যেত।

আয়েশা রাদিযয়াল্লাহু তা'আলা বর্ণনা করেছেন যে তিনি হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে বলতে শুনেছেন সকল রোগের মহাঔষধ কালোজিরা।প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময়েও মানুষ বিভিন্ন রোগ মুক্তির জন্য কালোজিরা সেবন করেন।

কালোজিরার প্রধান পুষ্টি উপাদান কি কি

এক গ্রাম পরিমাণের কালোজিরায় পুষ্টি উপাদানগুলো হলোঃ
  • আমিষ ২১%
  • শর্করা ৩৮%
  • চর্বি ৩৫%
  • ভিটামিন বি১ ১৫ মাইক্রোগ্রাম
  • নিয়াসিন ৫৭ মাইক্রোগ্রাম
  • প্রোটিন ২০৮ মাইক্রোগ্রাম
  • আয়রন ১০৫ মাইক্রোগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম ১.৮৫ মাইক্রোগ্রাম
  • ফসফরাস ৫.২৬ মাইক্রোগ্রাম
  • কপার ১৮ মাইক্রোগ্রাম
  • জিংক ৬০ মাইক্রোগ্রাম
এছারাও কালোজিরার তেলে যেসকল পুষ্টি উপাদানগুলো রয়েছে সেগুলো হলোঃ
  • ফসফেট
  • লৌহ
  • ফসফরাস
  • লিনোলিক এসিড
  • অলিক এসিড
  • ক্যালসিয়াম
  • পটাশিয়াম
  • ম্যাগনেশিয়াম
  • সেলেনিয়াম
  • আয়রন
  • জিংক
  • ভিটামিন-এ
  • ভিটামিন-বি
  • ভিটামিন-বি২
  • ভিটামিন-সি
  • আয়রন

প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠাক,আজকে আমরা জানলাম খালি পেটে কলজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।আশা করি আপনাদের এই পোস্টটি পড়ে ভালো লেগেছে এবং উপকৃত হয়েছেন।চাইলে আপনিও খালি পেটে করজিরা  খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।এরকম আরো ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করুন এবং প্রিয়জনদের শেয়ার দিয়ে পাশেই থাকুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url