আপনি কি খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাইছেন? তাহলে আজকেরএই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা যদি করলার জুস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারি তাহলে আমরা অনেক রোগ বালাই থেকে মুক্তি পাবো।
তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।এর জন্য প্রিয় পাঠক আপনাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ প্রর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।এখন দেরি না করে আসুন জেনে নেওয়া যাক খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
ভূমিকা
করলা এক প্রকার সবজী।ইংরেজিতে একে bitter gourd বলে।করলা প্রচুর তেতো তাও আমাদের সকলের কাছে খুব প্রিয়।করলা খেতে তিতো বলে আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা করলা খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু করলার স্বাদ তেতো হলেও এর উপকারিতা গুণ অনেক।খালি পেটে করলার জুস,করলার সবজি,চপ আমাদের রুচিবর্ধক সবজি হিসেবে কাজ করে।স্বাস্থ্যের জন্য করলার জুসের উপকারী গুন বলে শেষ করা যাবে না।
ছোট-বড় সকলের শরীরের জন্য করলা খুব উপকারী।করলা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বৃদ্ধির জন্য সকালে খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার অভ্যাস করা খুব জরুরী। খালি পেটে করার জুস খেলে শরীর সুস্থ সবল থাকে।করলার পুষ্টি ভান্ডার অনেক তাই এর উপকারিতাও অনেক।
করলার জুস এর উপকারিতা
হজমে সাহায্য করেঃআমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা হজমের সমস্যায় ভোগেন।খাদ্যে সমস্যা থাকার কারণে হজমের সমস্যা হয়ে থাকে।অনেকের আবার খাদ্য পরিপাকে বাধাগ্রস্ত হয়। আমাদের মধ্যে যারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার জুস খায়।
তাদের খাদ্য হজমে তেমন সমস্যা হয় না। করলা জুস হজমসহ বিভিন্ন রকম সমস্যা দূর করে। তাই আমরা যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কররা জুস খাওয়ার অভ্যাস করি তাহলে আমাদের হজমজনিত সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ বর্তমানে সকলেই রক্তে সুগার জনিত সমস্যায় ভোগে।আমাদের সকলের চেষ্টা করতে হবে যেন রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের রক্তে যদি সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকে তবে আমরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবো।ডায়াবেটিস হলে অনেক খাবার থেকে আমাদের বিরত থাকতে হয়। তাই যদি নিয়মিত খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার অভ্যাস করি তাহলে আমাদের রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কালা জুস খেলে রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
ওজন কমাতেঃ যাদের ওজন জনিত সমস্যা রয়েছে সে সকল ব্যক্তিগণ করার জুস খেতে পারেন।দ্রুত ওজন কমানোর জন্য করলার জুস খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।করলার জুসে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকে যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।একই সাথে করলার জুস অতিরিক্ত চর্বি ছাড়াতেও সাহায্য করে। তাই যারা নিয়মিত সেবন করেন তাদের ওজন জনিত সমস্যা থাকে না।
লিভার ভালো রাখতেঃলিভার ভালো রাখতে করলার জুসের জুড়ি নেই।আমাদের লিভার ভালো করোলা সাহায্য করে।এ করোলার জুস আমাদের লিভারে জমে থাকা টক্সিন জাতীয় পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের লিভার ভালো থাকে এবং আমরা সুস্থ থাকি।
ত্বক ভালো রাখতেঃ করলার জুসে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে।এছাড়া করলায় রয়েছে ভিটামিন সি, আয়রন পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম।এ সকল উপাদান ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু ধ্বংস করে এবং থককে আরো উজ্জ্বল করে।এছাড়াও যাদের মুখে ব্রণ জাতীয় সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য করলা জুস ম্যাজিক এর মত ব্রণ ভালো করে তোলে।
কষ্টি কাঠিন্য দূর করতেঃ কষ্টি কাঠিন্য দূর করতে করলার জুস খুব উপকারী। আপনাদের মধ্যে যাদের কষ্ঠি কাঠিন্য রয়েছে তারা করলার জুস সেবন করতে পারেন।
হার্ট অ্যাটাক রোধেঃকরলা যেহেতু রক্তের চর্বি কমায় তাই উচ্চ রক্তচাপ হওয়া সম্ভবনা থাকে না। প্রতিদিন যারা করলার জুস খায় তাদের হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমে যায়।
ক্যান্সারের প্রতিরোধে করলাঃ করলায় লৌহ, ভিটামিনএ,ভিটামিন সি এবং আঁশ রয়েছে।এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ এবং সি বার্ধক্য বিলম্বিত করে থাকে।এছাড়াও করলায় রয়েছে লুটিন এবং লাইকোপিন যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
করলার জুস বানানোর নিয়ম
আমরা অনেকেই জানিনা কিভাবে করলার জুস বানাতে হয়।যেহেতু আমরা অনেকেই বানাতে জানিনা তাই করলার জুস খাওয়া থেকে বিরত থাকি।তাহলে আসুন বন্ধুগণ জেনে নেয়া যাক করলার জুস কিভাবে বানাতে হয়।করলার জুস বানানো খুবই সহজ।এই জুস বানানোর জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটা করলা নিতে হবে এবং করলা গুলো পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে।তারপর বটি বা ছুরি দিয়ে করলার উপরের যে সবুজ অংশটা থাকে সেগুলো ছোট ছোট করে ভালোভাবে কেটে নিতে হবে।
কুচি কচি করা করলার অংশ গুলো একটি পাত্রে নিয়ে সেখানে কয়েকটা কাঁচা মরিচ কেটে নিতে হবে। এরপর সেখানে স্বাদমতো লেবুর রস চিপে দিতে হবে।কিছু ধনেপাতা দিতে হবে।ধনেপাতা দিলে করলার জুসের স্বাদ আরও দ্বিগুণ হয়।তারপর সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে বিলিনডারে ব্লিন্ড করতে হবে।ব্লিন্ড করা হয়ে গেলে জোশ গুলোই একটি গ্লাসে ঢালতে হবে এবং সেখানে সামান্য একটু বিট লবণ,স্বাদমতো চিন, ও পরিমান মত পানি দিয়ে একটু নাড়িয়ে নিতে হবে।তারপর পরিবেশন করতে হব।চাইলে আপনারাও এভাবে করলা জুস বানিয়ে খেতে পারেন।
করলার জুসের অপকারিতা
করলার যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি কিছু অপকারিতাও রয়েছে।চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক করলার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে।
- গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে।গর্ব অবস্থায় মহিলাদের বেশি পরিমাণে করার জুস খাওয়া মোটেও ঠিক না।এছাড়া অত্যাধিক পরিমাণ তেতো খেলে মেয়েদের মাসিকের সমস্যা হয়ে থাকে।
- বেশি পরিমাণে করলা খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।যাদের শর্করা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটি গ্রহণ করুন।
- যাদের এলার্জির জনিত সমস্যা রয়েছে।সে সকল ব্যক্তিদের অতিরিক্ত পরিমাণে করলা খাওয়া ঠিক না।
- অল্প বয়সী শিশুরা করলা খেলে তাদের পেটে ব্যথা, বমিবমি ভাব এবং পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়।
- আমাদের শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য আমরা করলা খেয়ে থাকি।বেশিরভাগ ডায়াবেটিস রোগীরা প্রচুর পরিমাণে করলা খেয়ে থাকেন।অতিরিক্ত করলা খেলে লিভারে ইনফ্লামেশন হতে পারে।
করলার পুষ্টি উপাদানসমূহ
একটি সতেজ করলায় প্রতি ১০০ গ্রামের পরিমাণ (গ্রামে) যে সকল পুষ্টি উপাদান গুলো রয়েছে সেগুলো হলঃ
- ক্যালরি ২১ গ্রাম
- প্রোটিন ১ গ্রাম
- শর্করা ৫ গ্রাম
- চর্বি ০গ্রাম
- কলেস্টেরল ০গ্রাম
- ক্যালসিয়াম এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- লোহা এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- প্টাসিয়াম এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- দস্তা এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- তামা এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- ম্যাগ্নেজসিঅ্যাম্ এক্সএনইউএমএক্স মিলিগ্রাম
- পানি ৮৭.৪৫জিএল
- ফাইবার ২.৬ গ্রাম
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠাক,আজকে আমরা জানলাম খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।আশা করি আপনাদের এই পোস্টটি পড়ে ভালো লেগেছে এবং উপকৃত হয়েছেন।চাইলে আপনিও খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।এরকম আরো ভালো ভালো পোস্ট পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করুন এবং প্রিয়জনদের শেয়ার দিয়ে পাশেই থাকুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url