ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়, ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, আপনি কি ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়, এবং ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়? এই সকল বিষয় সম্পর্কে জানতে আগ্রহী? তাহলে আমার আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় এবং ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়? এই সকল যাবতীয় তথ্য সম্পর্কে।
তাই বন্ধুগণ আপনি যদি ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় এবং ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয় এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান। তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ুন। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্যগুলো জেনে রাখি।
ভূমিকা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই জানে না ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় ও ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয় এই সম্পর্কে। আমাদের শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব দূর করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে থাকি। এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ভিটামিন ই ক্যাপসুল কখন খেতে হয়, ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়,
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতদিন খেতে হয়, ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৪০০ খাওয়ার নিয়ম, ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা সম্পর্কে। এ সকল বিষয় সম্পর্কে যদি বিস্তারিত জানতে চান তবে এই আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন। এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয় এর সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা ভিটামিন ই ক্যাপশন খেয়ে থাকেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল আমাদের দেহে ইউনিটি সিস্টেমকে খুব সহজ করে। সাধারণত ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়া হয় শরীরের ত্বক উজ্জ্বল রাখার জন্য। এছাড়া চেহারায় বয়সের ছাপ দূর করতে এবং বিশেষ করে হাড়ের ও চুলের যত্নে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করা হয়।
এছাড়াও এই ক্যাপসুল খেলে চুল লম্বা হয় মজবুত হয় এবং চুল ভালো থাকে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে শরীর সতেজ থাকে এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও সৌন্দর্য চর্চার ক্ষেত্রেও এই ক্যাপসুল খাওয়া হয়ে থাকে। অনেকে আবার শরীরের বিভিন্ন রকম ক্ষত সারাতে ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে থাকে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করলে ছোটখাটো ক্ষতগুলো খুব দ্রুত ভালো হয়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কখন খেতে হয়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কখন খেতে হয় অনেকে এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো রাত। তবে আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা সকালেও এই ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেয়ে থাকেন। কিন্তু আমরা যখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় তখন চিকিৎসক পরামর্শ স্বরূপ রাতে এই ক্যাপসুল সেবন করার পরামর্শ দেন। তাই আমাদের সকলের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রাতে ই ক্যাপসুল সেবন করা।
ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়
আমরা দৈনন্দিন জীবনের যে সকল খাবারগুলো খেয়ে থাকি সেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে পরিপূর্ণ বা বিদ্যমান থাকে। এ সকল পুষ্টি উপাদানের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকম ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইটোনিউট্রেশন। আমাদের শরীরে এই ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর দৈনন্দিন জীবনে ভিটামিনের চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা বিভিন্ন রকম ভিটামিন যেমনঃ
ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন কে ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করি বা ব্যবহার সেবন করি। আমরা অনেকেই জানি না এ সকল ভিটামিন গুলোর মধ্যে ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়। নিম্নে ভিটামিন ই এর অভাবজনিত সমস্যাগুলো আলোচনা করা হলো। তাহলে দেরি না করে এখনই জেনে নিন ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়।
- ভিটামিন ই এর অভাবে চুল পাতলা হয়ে যায়। ছেলে মেয়ে উভয়েরই চুল পাতলা হয়ে ঝরে যায়। চুল দুর্বল হয়ে ও চুলের গড়ো নরম হয়। এর ফলে চুল দ্রুত পড়তে শুরু করে।
- ভিটামিন ই এর অভাবে পেশি বা স্নায়ুর দুর্বলতা দেখা দেয়। বেশি দুর্বলতার কারণে শরীর ও দুর্বল হয় ফলে কাজকর্মে মন বসে না।
- শরীরে ভিটামিন ই এর অভাব হলে শরীর ভারসাম্যহীন বোধ করে। এই ভিটামিনের অভাবজনিত কারণে স্নায়ুগুলোতে অক্সিডেটিক স্ট্রেস এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।
- ভিটামিন ই এর অভাবে চোখে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টিহীনতা সমস্যার সৃষ্টি হয়। ভিটামিন ই চোখে রেটিনা কে সুরক্ষা দান করে। ফলে ভিটামিন ই এর অভাবে চোখে ঝাপসা সহ সইরে রক্তশূন্যতাও হতে পারে।
- এছাড়াও ভিটামিন ই এর অভাবে শিশুদের বেরিবেরি, স্কার্ভি, হৃদরোগ, মেয়েদের বন্ধ্যাত্ব রোগ, ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট সহ রক্ত ঘাটতিও হয় এই ভিটামিন ই এর অভাবজনিত কারণে।
- ভিটামিন ই এর অভাবে আমাদের শরীর নিস্তেজ হয়ে যায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতদিন খেতে হয়
ভিটামিন ই ক্যাপসুল কতদিন খেতে হয় এই বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে চিকিৎসক বা ডক্টরের চিকিৎসার উপর। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে চিকিৎসকগণ একেক জনকে ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে এই ক্যাপসুল সেবন করতে বলেন। শারীরিক সমস্যার কারণে চিকিৎসা হিসেবে ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করার জন্য ডোজের পরিমাণ নির্ধারণ করেন ডাক্তারগণ।
তাই ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবনে পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা বা রোগের উপর ভিত্তি করে এই ই ক্যাপসুল সেবন করতে হবে। তবে একটা না তিন মাসের অধিক সময় ধরে এই ক্যাপসুল খাওয়া উচিত নয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কয়েক সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবার খাওয়া যায়।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৪০০ খাওয়ার নিয়ম
প্রথমেই বলতে চাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধি সেবন করা উচিত না। রোগের ওপর ভিত্তি করে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করা উচিত। চিকিৎসকগণ রোগীদের বয়স ভেদে রোগীদের বিভিন্ন আই ইউ মাত্রায় ই ক্যাপসুল সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। নিম্নে রোগের ধরন এবং রোগীদের বয়স ভেদে ই ক্যাপসুল সেবন বিধি বা খাওয়ার নিয়ম দেওয়া হল।
- চুলের যত্নে ও ত্বকের সমস্যার কারণে ২০০ থেকে ৪০০ আই ইউ প্রতিদিন
- হৃদ রোগীদের হৃদ যন্ত্রের সুস্থতার জন্য ৪০০ থেকে ৮০০ আই ইউ প্রতিদিন
- শিশুদের শরীরে ভিটামিন ই এর ঘাটটির জন্য ২০০ আই ইউ প্রতিদিন
- পূর্ণবয়স্কদের ঠান্ডা জনিত সমস্যার জন্য ২০০ আই ইউ প্রতিদিন
- প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের যৌন সমস্যার জন্য ২০০-৪০০ আই ইউ প্রতিদিন
- থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সুস্থতার জন্য ৮০০ আই ইউ প্রতিদিন
আপনি সহ আপনাদের সকলের উদ্দেশ্যে বলবো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই এই ই ক্যাপসুল সেবন করবেন না। এতে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন তারপর ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৪০০ সেবন করুন। প্রতিটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৪০০ এর বাজার মূল্য ৬ থেকে ৬.৫ টাকা। তবে স্থান ভেদে এই ই ক্যাপসুলের দাম কম বেশি হতে পারে। সুতরাং ভিটামিন ই ক্যাপসুল ৪০০ খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানুন এবং সেবন করে সুস্থ থাকুন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা
ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর যেমন উপকারী দিক রয়েছে ঠিক তেমনি অপরদিকে কিছু অপকারিতাও রয়েছে। আমাদের সব সময় মনে রাখা উচিত যে কোন জিনিসে অত্যাধিক পরিমাণ সেবন বা গ্রহণ আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দাঁড়ায়। নিম্নে ই ভিটামিন ই ক্যাপসুল এর অপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলোঃ
- অতিরিক্ত পরিমাণে ই ক্যাপসুল ব্যবহার করলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এর ফলে বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়াজনিত সমস্যা হতে পারে।
- অনেকের ক্ষেত্রে আবার মাথা ব্যাথা সমস্যা হয়ে থাকে। ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে মাথাব্যথা সহ মাথা ঘুরতে পারে
- গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য অতিরিক্ত ভিটামিন ই ক্যাপসুল সেবন করা ঝুঁকির কারণ হতে পারে তাই গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন ই ক্যাপসুল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
- যে সকল রোগীদের ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হাই কোলেস্টেরল জনিত সমস্যা রয়েছে। তাদের ই ক্যাপসুল অতিরিক্ত সেবন করা উচিত না। শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এ সকল রোগীগণ ই ক্যাপ্সুল সেবন করতে পারবেন।
- অতিরিক্ত ই ক্যাপসুল সেবনের ফলে ক্লান্তি বিষণতা ও দুর্বলতা অনুভূত হয়। এছাড়াও যাদের এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ই ক্যাপসুল না খাওয়াই উচিত। ই ক্যাপসুল এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। যার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি,চুলকানি ও মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক মহোদয়, আমি এই আর্টিকেলের একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন ভিটামিন ই ক্যাপসুল খেলে কি হয়, ও ভিটামিন ই এর অভাবে কি হয়। এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
এতক্ষণ অতি মূল্যবান সময় দিয়ে আমার সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে চাইলে আপনি কমেন্ট বক্সে মতামত জানাতে পারেন। আবারও দেখা হবে কোন আর্টিকেলের একটি নতুন টপিক নিয়ে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকবেন এবং প্রিয়জনদের ভালবাসবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url