গনোরিয়া রোগের লক্ষণ - গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানার জন্য অনেকে গুগলে সার্চ দিয়ে থাকেন? আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হন তাহলে এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আলোচনা করব গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে।
তাই এই পোস্টটি যদি আপনি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে আপনিও জানতে পারবেন গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। তাই আপনার এ অজানা বিষয়টি জানার জন্য আমার এই পোষ্টের বিষয়বস্তু গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা এর সাথেই থাকুন।
ভূমিকা
আজকের এই পোষ্টের মূল বিষয়বস্তু হল গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা। আমাদের আশেপাশে এমন অনেকেই আছেন যারা এই গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছেন কিন্তু কারো সাথে আলোচনা করতে বিব্রত বোধ বা লজ্জাবোধ করেন।
সে সফল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমার এই পোস্টটি মাধ্যমে জেনে নিন গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ, গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, গনোরিয়া কি ভালো হয়, গনোরিয়া টেস্টের নাম, গনোরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সম্পর্কে। আমার পোষ্টের এই আলোচ্য বিষয়গুলো আপনি পড়লে বুঝতে পারবেন গনোরিয়া রোগ কতটা ভয়াবহ এবং মারাত্মক।
তাই অনুরোধ রইলো এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আমার এই পোস্টটিতে আমি চেষ্টা করেছি গনোরিয়া রোগের লক্ষণের রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
পুরুষের গনোরিয়ার লক্ষণ
পুরুষ গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে তাদের শরীরে যে সকল লক্ষণ বা উপসর্গ গুলো দেখা দেয় সেগুলো হল। পুরুষের বিভিন্ন গ্রন্থী যেমন প্রোস্টেট গ্রন্থি, শুক্রনালি, এপিডিডাইমিসে তীব্র জ্বালাপোড়া করে। যে সকল ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হয় তাদের পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগে পুঁজজাতীয় তরল পদার্থ বের হয় এবং পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগে ব্যথা ব্যথা অনুভব হয়।
এছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগে লাল লাল ভাব দেখা দেয়। এ সময় ব্যথা অনুভব হয় এবং নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়। ত্বকে অস্বাভাবিক অনুভূতি সহ মাংসপেশীতে খিচুনি বা টান ধরে এবং পেটে তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভূত হয়।
গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির যদি দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যায় ভোগে তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তির শুক্রনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে এবং উপ-শুক্রনালী এপিডিডাইমিস নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর ফলে গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি পিতা হওয়া সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।
মহিলাদের গনোরিয়ার লক্ষণ
গনোরিয়ায় আক্রান্ত পুরুষের তুলনায় নারীদের লক্ষণ বা উপসর্গগুলো একটু কম পরিলক্ষিত হয়। গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলাদের লক্ষণ ও উপসর্গ হলো যোনিপথের গ্রন্থি, বিশেষ করে জরায়ু মুখের পন্থিগুলো এই জীবানুতে বেশি আক্রান্ত হয়। পরবর্তীতে এই জীবাণুগুলো ডিম্বানালিকে আক্রমণ করে। ফলে যোনিপথ ও মূত্র পথ দিয়ে পুঁজ বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এছাড়া যোনি দিয়ে শ্রাবনির্গত হয় এর ফলে প্রসাবে তীব্র ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া শুরু হয়। গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এই গনোরিয়ায় আক্রান্ত থাকলে মহিলাদের ডিম্বালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে ফলে মহিলারা সন্তান ধারণ ক্ষমতা হারায়। এছাড়াও গণদেয়ায় আক্রান্ত নারী যদি সন্তান প্রসব করে তাহলে ওই সন্তানের চোখ এ রোগের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়
গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
অনেকেই গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসার কথা বলে থাকে। আসলে গনোরিয়া রোগের জন্য ঘরোয়া তেমন কোন চিকিৎসা নেই বললেই চলে। তবে কিছু সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করলে গনোরিয়া রোগ থেকে অনেকটা পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
তবে গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা বা সাবধানতা স্বরূপ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত বিশেষ করে টয়লেট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।টয়লেটে ব্যাকটেরিয়ার নাশক ব্যবহার করতে হবে। একজন জনসঙ্গে ব্যতীত অন্য কারো সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। মহিলাদের পিরিয়ডের সময় প্যাড পরিবর্তন করতে হবে।
এবং সর্বদা চেষ্টা করতে হবে পরিষ্কার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। যৌন মিলনের সময় অবশ্যই কনডম ব্যবহার করা। পাবলিক টয়লেটগুলো খুব অপরিষ্কার থাকে এবং সেখানে হাজার হাজার মানুষ প্রসাব ও পায়খানা করে। সেখান থেকে গনোরিয়া ছড়াতে পারে। তাই সাধানতা ও সচেতনতা হিসেবে পাবলিক টয়লেটে প্রসাব ও পায়খানা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গনোরিয়া কি ভালো হয়?
গণিয়া কি ভালো হয়? এই বিষয়ে কম-বেশি সকলেই জানতে চায়। যে সকল ব্যক্তি এ বিষয়ে জানতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে বলবো গনোরিয়া রোগ অবশ্যই ভালো হয়। যদি গনোরিয়ায় আক্রান্ত রোগী খুব দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহন করে। গনজিয়া রোগে গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে পুরুষ ও মহিলাদের শরীরে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়।
এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারার সাথে সাথে ধরনের আক্রান্ত ব্যক্তি যদি দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করে তাহলে এ রোগটি থেকে মুক্তি পেতে পারে। যদিও এ গনোরিয়া রোগের চিকিৎসা কিছুটা ব্যয়বহুল তারপরেও সঠিক চিকিৎসা নিলে এবং সময়মতো ওষুধপত্র সেবন করলে গনোরিয়া রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
গনোরিয়া টেস্টের নাম
রক্তের নমুনা গ্রহণ করে এইচআইভি এবং সিফিলিস টেস্ট করা হয়। ক্ল্যামিডিয়া এবং গনোরিয়া মহিলাদের মধ্যে সোয়াব এবং পুরুষদের মধ্যে প্রস্রাবের নমুনা দ্বারা টেস্ট করা হয় এবং প্রয়োজন হলে, সোয়াবগুলোও টেস্ট করা হয়। যদি আপনার উপসর্গ না থেকে থাকে তবে আপনি নিজেই এই নমুনাগুলো নিতে পারেন এই টেস্টের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন আপনি বনরিয়া পজেটিভ না নেগেটিভ।
গনোরিয়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ
সাধারণত মানুষের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন আস্তে আস্তে কমতে থাকে তখন বাইরে থেকে সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বৃদ্ধি করার জন্য এন্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগ করা হয় বা দেওয়া হয়। শরীরে কোন রোগ হলে সে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই অ্যান্টিবায়োটিক। তাই গনোরিয়া রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গনোরিয়া রোগীকে কোন এন্টিবায়োটিক ওষুধ দিতে হবে। এই বিষয়টি একমাত্র নির্ভর করে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের উপর। কারো গনোরিয়া হলে গনোরিয়া রোগীকে কোন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয় সে বিষয়ে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব।সাধারণত গনোরিয়া প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়।
গনোরিয়া রোগীদের সেফট্রিয়াক্সন ১০০০ এম জি ইনজেকশন (Ceftriaxone 1000 MG Injection), সেফালসপোরিন অ্যান্টিবায়োটিক নামে পরিচিত ওষুধগুলো দেয়া হয়। এই ওষুধগুলো যদি আপনি ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সুফল পেতে পারেন। এ ধরনের এন্টিবায়োটিক ওষুধগুলো সাধারনত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ গণনিয়া রোগীদের জন্য লিখে থাকেন।
তবে আপনাদের কাছে অনুরোধ রইলো এই পোস্ট দেখে এই ওষুধগুলো সেবন না করার। কারণ যেকোনো রোগের জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আমাদের চিকিৎসা গ্রহণ করে তারপর ওষুধ সেবন করা উচিত। তাই আপনি যদি গনোরিয়ার আক্রান্ত রোগী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন তারপর এ সকল ওষুধগুলো সেবন করুন।
মন্তব্য। গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
প্রিয় পাঠাক, আমি এই পোস্টের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এতক্ষণ আমি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করেছি। গনোরিয়া রোগের লক্ষণ ও গনোরিয়া রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। আশা করি উক্ত আলোচনা থেকে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। রোগ বালাই যেমন আছে তেমনি তার চিকিৎসাও আছে। তাই গনোরিয়া রোগের লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং ওষুধ সেবন করুন। তাহলে দ্রুত সুস্থতা অর্জন করবেন।
আমার এই পোস্টট পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আবারও দেখা হবে কোন এক নতুন পোষ্টের মাধ্যমে। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url