জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানার জন্য আপনি কি গুগলে খোঁজাখুঁজি করছেন? এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার জন্য যদি খোঁজাখুঁজি করে থাকেন তবে আমার এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করব জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে।
জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
তাই জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি আপনাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লাগবে। তাহলে সময় নষ্ট না করে চলুন জেনে নেয়া যাক জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে।

ভূমকা

আমার আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয়বস্তু হলো জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ। এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন, জলাতঙ্ক রোগের জীবাণুর নাম কি, জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, জলাতঙ্ক রোগের কারণ, জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার, জরতাঙ্ক রোগের টিকার মেয়াদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

তাই অনুরোধ রইলো এই আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ার জন্য। আমার এই আর্টিকেলটিতে আমি চেষ্টা করেছি জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার এবং জলাতঙ্ক রোগের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার। আশা করি নিম্নোক্ত আলোচনা গুলো পড়ে আপনি উপকৃত হবেন। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

জলাতঙ্ক রোগের জীবাণুর নাম কি

জলাতঙ্ক রোগ হলো ভাইরাসজনিত এক ধরনের জুনেটিক রোগ। জলাতঙ্কের ইংরেজি Rabies। জলাতঙ্ক রোগটি বিভিন্ন রকম প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ছড়ায়। রেবিজ ভাইরাস নাম ক এক ধরনের নিউরোটপিক ভাইরাসের জন্য এই রোগ হয়। এ ভাইরাস বা রোগটি সর্বপ্রথমে গৃহপালিত প্রাণী ও বন্যপ্রাণীর সংক্রমিত করে।

এই সংক্রমিত গৃহপালিত প্রাণীগুলো সংস্পর্শে মানুষ যখন আসে বা এই সংক্রমিত প্রাণী গুলো যখন মানুষকে কামড়ায় বা নখের আঁচড় দেয় তখন এই ভাইরাসটি মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং ছড়িয়ে যায়। প্রতিটি মহাদেশে এই জলাতঙ্ক রোগটি বিস্তার লাভ করেছে। বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশে এই জলাতঙ্ক রোগের ভয়াবহতা ব্যাপক। বিশ্বের প্রতিবছর এই জলতঙ্ক রোগের কারণে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ শুধুমাত্র কুকুর কামড়ানোর ফলে, যে হবে ঠিক এমনটা না। কোন ব্যক্তিকে কুকুর না কামড়ালেও যদি আঁচড় দেয় এবং সেখান থেকে যদি ক্ষতর সৃষ্টি হয়। তাহলে মানুষের শরীরে জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস প্রবেশ করে। সাধারণত মানুষ সবথেকে বেশি কুকুরের কামড় বা আঁচড় দ্বারা জলাতঙ্ক রোগের শিকার হয়। মানুষের শরীরে জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস প্রবেশ করার ফলে মানুষের শরীরে বিভিন্ন রকম লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায়।

 লক্ষণগুলো দেখার সাথে সাথে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করার ফলে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ করা সম্ভব। আপনার আশেপাশে কোন ব্যক্তি যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়। সে সম্পর্কে অনুভব করার বা বোঝার জন্য আপনাকে অবশ্যই জলাতঙ্ক রোগে লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে।নিম্নে কুকুরের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ গুলো আলোচনা করা হলোঃ

  • বমি বমি ভাব হয় এবং মাথা ঘোরা দেখা দেয়।
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের সমন্বয়ের অভাব দেখা দেয় এবং শ্বাসকষ্ট হয়।
  • জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির ঘন ঘন জ্বর আস...
  • খাওয়া-দাওয়ার প্রতি অনীহা করে। পানি পান করার সময় গলায় ব্যথা অনুভব করে।
  • জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর মুখ থেকে লালারস ঝরতে থাকে।
  • মুখ থেকে ঝরতে থাকা লালারসের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকে।
  • জলাতঙ্ক রোগীর ক্ষতস্থানে চুলকানি সৃষ্টি হয়।
  • অনেক সময় রোগী কোমায় চলে যেতে পারে।
  • উজ্জল লাইটের আলোতে ও জনগণের কোলা হলে অনেক বিরক্ত বোধ করে।
  • বিভিন্ন রকম উত্তেজনামূলক কাজ করে। যেমন চিল্লাচিল্লি, মারধর, জিনিসপত্র ভাঙচুর।
  • পানি পান করার চেষ্টা করে কিন্তু পানি দেখলে ভয় পায়।
  • অ্যারোফোবিয়া বা বাতাসের প্রতি ভয় দেখাবে।
  • জলাতঙ্ক রোগের আক্রান্ত রোগী সবার সাথে পাগলামি মূলক আচরণ করে।

উপরোক্ত পয়েন্টগুলো হল জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীর কিছু সাধারন লক্ষণ। এ সকল লক্ষণগুলো যে সকল ব্যক্তিদের মধ্যে পরিলক্ষিত হবে তারাই জলাতঙ্ক রোগের আক্রান্ত। এই সকল লক্ষণ গুলো বুঝতে পারার সাথে সাথে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। এই সকল লক্ষণ গুলো জানার ফলে আমরা সবাই সচেতন থাকতে পারবো।

জলাতঙ্ক রোগের কারণ

মানুষের জলাতঙ্ক রোগের কারণ প্রাণীর কামড়ে ফলে হয়ে থাকে। আমাদের চারপাশে থাকা বিভিন্ন রকম প্রাণীর লালার মাধ্যমে এই জলাতঙ্ক ভাইরাসটি ছড়ায়। মানুষ যখন এ সকল প্রাণীদের সংস্পর্শে আসে এবং কামড় খায় তখন মানুষ জলতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়। কুকুর , বিড়াল ,গর্‌ ঘোড়া ,খরগোশ ও বন্যপ্রাণী যেমন বাদুর ,শিয়াল ,হয়েনার কামড়ে জলাতঙ্ক হয়ে থাকে।

 বিশেষ করে ল্যাবরেটরীতে জলাতঙ্ক ভাইরাস গবেষণা করা, যেখানে বাদুড় রয়েছে সেখানে গমন করার সময় কামড় খেলে জলাতঙ্ক হয়। পালিত পশু যদি মানুষের কোন ক্ষতস্থান চাটে তবে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। মানুষের শরীরের ঘা ড় এবং মাথার ক্ষতস্থানগুলো সাধারণত খুবই বিপদজনক হয়ে থাকে। এর কারণ হলো এ সকল ক্ষতস্থান গুলো থেকে জলাতঙ্কের ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি মস্তিষ্কে ছড়ায়।

জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার

জলাতঙ্ক রোগের প্রতিকার হিসেবে সর্বপ্রথম যে কাজটি করা দরকার। সেটা হল জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ গুলোকে সনাক্ত করা এবং যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা। জলাতঙ্ক হতে পারে এমন কোন সন্দেহজন ক প্রাণীর কামড় বা আঁচড় খেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত ভ্যাকসিন নেওয়া। জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাসের জন্য বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিন বা টিকা রয়েছে। জলাতঙ্ক রোগের ট্রিগার গুলো হলোঃ
  • নার্ভ টিস্যু ভ্যাকসিন
  • ডাক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন
  • হিউম্যান ডিপ্লয়েড সেল ভ্যাকসিন
  • পিউরিফাইড চিক ইমব্রিও সেল ভ্যাকসিন
কুকুর গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে আমাদের বাসা বাড়িতে যেমন থাকে। ঠিক তেমনি গ্রামগঞ্জে, হাটবাজারে সবখানে দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের বাংলাদেশে ৯৫ ভাগ জলাতঙ্ক রোগ ছড়ায় কুকুরের মাধ্যমে। তাই প্রতিবছর সরকারি ও বেসরকারিভাবে কুকুরকে বিভিন্ন রকম ভ্যাকসিনের টিকা দেয়া হয়। এ ভ্যাকসিনের টিকার ফলে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করা অনেকটা সহজ হয়। জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় হল সঠিক সময়ে ভ্যাকসিনের টিকা গ্রহণ করা। তাই এ রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের টিকা গ্রহণ করতে হবে।

জলাতঙ্ক রোগের টিকার মেয়াদ

জলাতঙ্ক রোগের টিকা সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে এক ধরনের টিকা মাংসপেশীতে ব্যবহার করা হয় এবং অন্যটি চামড়ায় পুশ করতে হয়। তবে এ দুইটা টিকার মধ্যে চামড়ায় যে টিকাটি পুশ করা হয় সেই টিকাটি সবচেয়ে বেশি কার্যকরী। এই টিকাটির দাম তুলনামূলক কম এবং টিকাটি ব্যপক প্রচলিত ও পরিচিত। টিকা দেয়ার পর বুস্টার ডোজের মেয়াদ থাকে প্রায় এক বছর। তাই প্রতি এক বছর পর পর পুনরায় আবার জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে হবে। বিড়াল বাক্য করে মারাত্মক ও প্রাণঘাতিক রোধ করতে বেশ ভ্যাকসিন করুক থেকে সুরক্ষা দেয়।

জলাতঙ্ক কি ছোঁয়াচে রোগ
জলাতঙ্ক রোগের জীবাণুর নাম কি

মন্তব্য

প্রিয় পাঠক এ আর্টিকেলটি একেবারে শেষ পর্যায়ে প্রান্তে চলে এসেছে। আশা করি আর্টিকেলটি আপনি ধৈর্য ধরে ও মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক তথ্যগুলো। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার মতামত আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্ট বক্সে জানাবেন। এরকম এছাড়া এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন। অনুরোধ রইল এই আর্টিকেলটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url