জান্নাতের স্তর, জান্নাতের ফুল, ফল ও খাবারের নাম জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম। আপনি কি জান্নাতের স্তর, জান্নাতের ফুল, ফল ও খাবারের নাম জানতে চান। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব জান্নাতের স্তর, জান্নাতের ফুল, ফল ও খাবারের নাম সম্পর্কে।
জান্নাতের স্তর, জান্নাতের ফুল, ফল ও খাবারের নাম
এই আর্টিকেলটি যদি আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আপনি জানতে পারবেন। জান্নাতের স্তর, জান্নাতের ফুল, ফল ও খাবারের নাম সম্পর্কে। তাই ধৈর্য ধরে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল তাহলে করে। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

ভূমিকা

অনেকে জানেন যে জান্নাতের স্তর সমূহ আটটি কিন্তু এই আটটি স্তরের নাম কি কি ও এর অর্থ কি তা অনেকেই জানেন না। এই আর্টিকেলটির সম্পন্ন পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন। জান্নাত কি? জান্নাতের স্তর কয়টি ও কি কি? এবং আরো জানতে পারবেন জান্নাতের ফুল জান্নাতের ফল ও জান্নাতের খাবার সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লাগবে। নিম্নলিখিত আলোচনার মাধ্যমে এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নিন।

জান্নাত

জান্নাত শব্দের অর্থ বাগান, উদ্যান, আবৃত স্থান। ফারসি ভাষায় জান্নাতকে বলা হয় বেহেস্ত। বাংলায় ভাষায় একে বলা হয় স্বর্গ। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় আখিরাতে ঈমানদার ও নেক্কার বান্দাদের জন্য যে চিরস্থায়ী আবাসস্থলের ব্যবস্থা তৈরি করে রাখা হয়েছে তাকেই জান্নাত বলা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা তার প্রকৃত মুমিন ও নেক্কার বান্দাদের নেক আমলের ফলস্বরূপ হিসেবে এ জান্নাতে প্রেরণ করবেন।জান্নাতের জীবন চিরস্থায়ী এখানে মুমিনগণ শুধু সুখ আর সুখ ভোগ করবে।

জান্নাতের স্তরের নাম অর্থসহ

  • জান্নাতুল ফিরদাউস অর্থ  জান্নাতের বাগান
  • দারুল মাকার অর্থ বাড়ি
  • দারুস সালাম অর্থ শান্তির নীড়
  • জান্নাতুল মাওয়া অর্থ বসবাসের জান্নাত
  • দারুল খুলুন অর্থ চিরস্থায় বাগান
  • জান্নাতুল আদনা অর্থ অনন্ত সুখের বাগান 
  • জান্নাতুল নাঈম অর্থ নেয়ামত পূর্ণ কানন বা বাগান

জান্নাতের এই আটটি স্তরের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাত হল জান্নাতুল ফেরদৌস। আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত হয়েছে যেঃ 

তিনি বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি যে সকল ব্যক্তিগণ ইমান আনবে, সালাত আদায় করবে, সিয়াম পালন করবে এবং আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করবে। সে সকল ঈমানদার ও মমিন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবে স্বয়ং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। সাহাবীগণ বলেছেন, হে আল্লাহর প্রিয় বন্ধু ও রাসূল। আমরা কি এসব সংবাদ সকলের মধ্যে পৌঁছে দিব না? রাসূল (সাঃ) বলেন নিশ্চয়ই।

তিনি আরো বলেন আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য মহান আল্লাহতালা জান্নাতে একশরও বেশি মর্যাদার স্তর প্রস্তুত করে রেখেছেন। দুইটি স্তরের পার্থক্য আসমান ও জমিনের ব্যবধানের মতো। তোমরা আল্লাহর কাছে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস চাইবে। কেননা এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম বলেছেন এর উপরে রয়েছে আরও সেই রহমান আর সেখান থেকে জান্নাতে নহর সমূহ প্রবাহিত হয়।

জান্নাতের কিছু ফুলের নাম অর্থসহ 

প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চলেছি জান্নাতে কিছু ফুলের নাম এবং সেগুলোর অর্থ সম্পর্কে। আপনাদের মধ্যে যারা জান্নাতের ফুলের নাম ও এর অর্থ সম্পর্কে জানতে অনুসন্ধান করে যাচ্ছেন তাদের জন্য এই আলোচনাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।নিম্নোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন মহান আল্লাহ তালার অপরূপ সৃষ্টি জান্নাতি ফুল সম্পর্কে।

এই পৃথিবীতে ফুল ভালোবাসে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টকর। অপরূপ এই পৃথিবীর সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করে ফুল। মহান রাব্বুল আলামিন এই পৃথিবীতে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল দান করেছেন ঠিক তেমনি জান্নাতেও অনেক ফুলের সমাহার সৃষ্টি করে রেখেছেন। ফুলের সৌন্দর্য অপরূপ এবং ফুল মানুষকে সহজে আকৃষ্ট করে। জান্নাতে কয়েকটি ফুলের নাম তার অর্থসহ দেয়া হলোঃ

  • আফনার অর্থ ফুলের শাখা
  • জুনাইরা অর্থ সুন্দরী মেয়ে 
  • আরিজ অর্থ সুগন্ধী বা ফুলের সুগন্ধ
  • জারা অর্থ ভদ্র মহিলা, রানী
  • রেহান অর্থ সুগন্ধি উদ্ভিদ
  • মানাল অর্থ স্বর্গের বিষেশ ফুল
  • জারা অর্থ জান্নাতের রাণী

জান্নাতের ফলের নাম  

জান্নাতে রয়েছে হরেক রকমের গাছ এবং গাছে আছে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল। জান্নাতে ফলমূলের কথা উল্লেখ করে মহান রাব্বুল আলামীন বলেন। অর্থঃ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তা'আলা আল্লাহর প্রকৃত মমিন ও আল্লাহভীরুদের জন্য রেখেছেন এ জান্নাতি ফলমূল। আল্লাহ ভীরু ও প্রকৃত মুমিনগান জান্নাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে এবং সেখানে তারা তাদের ইচ্ছামত ফলমূল খেতে পারবে।

জান্নাতের যে সকল ফল রয়েছে সেগুলোর নাম দুনিয়ার ফলের মতই কিন্তু সেগুলোর স্বাদ এক নয়। জান্নাতের ফলের স্বাদ অতুলনীয়। জান্নাতের নেয়ামতের বিষয়ে হাদীসে এসেছে। জান্নাতে নিয়ামত এমন এক ধরনের আল্লাহর নিয়ামত যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেননি এবং কোন মানুষের অন্তরে তার সঠিক ধারণা জন্মায়নি। জানাতে ফলের নামগুলো হল খেজুর, আঙ্গুর, আনার, বড়ই, আনজির, ডালিম, ডুমুর, লেবু ও কলা।

জান্নাতের খাবারের নাম

অনেকের ধারণা জান্নাতে খাবার খাওয়ার কোন প্রয়োজন নাই। এর মানে হলো জান্নাতের খাবার সম্পর্কে মানুষের ধারণা খুব একটা নেই বললেই চলে। মহান আল্লাহতালা পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে জান্নাতের খাবারের কথা উল্লেখ করে দিয়েছেন। আল্লাহর প্রকৃত মুমিন ও ঈমানদারগণদের নেক আমলের পুরস্কারস্বরূপ মহান আল্লাহতালা জান্নাতে তাদের জন্য বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার দাবার ও পানিয়ের ব্যবস্থা রেখেছেন।

জান্নাতে প্রকৃত মোমিনদারগণ জান্নাতে যখন প্রবেশ করবে তখন জান্নাতীদের জন্য রুটি, গরুর গোশত ও মাছ দিয়ে মহান রাব্বুল আলামিন আপ্যায়ন করবেন। জান্নাতের খাবারের স্বাদ পৃথিবীর খাবারের সাথে কোন সামর্থ্য থাকবে না। জান্নাতেবাসী যখন মন যা চাইবে তখন সে খাবার হাতে সামনে পেয়ে যাবে।জান্নাতের খাবারের স্বাদ অতুলনীয় যা পৃথিবীর খাবারের তুলনায় অনেক অনেক গুণ বেশি।

মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে আপনি জেনে গেছেন জান্নাতে বিস্তার কয়টি ও কি কি জান্নাতের ফুলের নাম জান্নাতের ফল ও খাবার নাম সম্পর্কে। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার পড়তে ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন। এছাড়া আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। চাইলে কমেন্ট বক্সে আপনি আপনার মতামত জানাতে পারেন। সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url