ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম, রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ
সুপ্রিয় পাঠক, ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম ও রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করছেন। যদি অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয় হতে চলেছে। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম-রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ সম্পর্কে।
এজন্য এ আর্টিকেলটি আপনাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়তে হবে। তাহলে আপনি জানতে পারবেন ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম- রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো। তাহলে চলুন মূল আলোচনা গুলো জেনে নিন।
উপস্থাপনা
ইউরিন ইনফেকশন একটি অতি পরিচিত রোগ। এই রোগটি শরীরে বাসা বাঁধলে প্রসাব করার সময় প্রসাবে জ্বালাপোড়া হয় ও তীব্র জ্বর আসে। তাই ইউরিন ইনফেকশনের মত রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করার জন্য ইউরিন ইনফেকশনের ওষুধের নাম আমাদের সকলের জানা উচিত। এর সাথে ইউরিন বা মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সম্পর্কে জানাটাও অতি জরুরী।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ইউরিন ইনফেকশন ঔষধের নাম ও রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বা ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরিচিতি। আরো জানতে পারবেন ইউরিন ইনফেকশনের কারণ, ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ ও প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হয় এবং ইউরিন ইনফেকশনের চিকিৎসা। তাহলে চলুন মূল আলোচনা যাওয়া যাক।
ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম
ইউরিন বা প্রসাবে ইনফেকশন হলে কোন ঔষধের গুলো সেবন করতে হবে ওই ঔষধের গুলো সম্পর্কে আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরী। ইউরিন ইনফেকশন বা বাধাগ্রস্ত হয় সাধারণত ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যার কারণে। তাই এই ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধ সেবন করতে হয়। ছোট বড় সকল বয়সের মানুষ এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে ইউরিন ইনফেকশনে ভোগেন।
তাই ইউরিন ইনফেকশন দূর করতে বিশেষজ্ঞ মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ বা ইউরোলজিস্টের সমস্যা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আপনার শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে যে ওষুধগুলো সেবন করতে পরামর্শ দিবেন এমন কিছু ইউরিন ইনফেকশনের ঔষধের নাম আপনাকে জানানোর সুবিধার্থে নিম্নে দেয়া হলো-
- সেফিক্সিম (Cefixime)
- সেফুরক্সিম (Cefuroxime)
- মনোসেফ ২০০ (Monocef 200)
- লিভোফ্লক্সাসিন ৫০০ (Levofloxacin 500)
- গ্লেভো ৫০০ (Glavo 500)
- অফলক্সাসিন ট্যাবলেট (Ofloxacin Tablets)
- অফলোম্যাক ২০০ (Oflomac 200)।
- সিপ্রোফ্লক্সাসিন (Ciprofloxacin)
- সেফপোডক্সাইম ২০০ (Cefpodoxime 200)
- সিপ্লক্স ৫০০ (Ciplox 500)
- সিফ্রান ৫০০ (Cifran 500)
ইউরিন ইনফেকশনের কারণ
পায়খানায় থাকা বিভিন্ন রকম রোগ জীবাণু মূত্রতন্ত্র দিয়ে মূত্রনালীতে প্রবেশ করার ফলে ইউরিন বা প্রসাব ইনফেকশনের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ইউরিন ইনফেকশন হয়ে থাকে। তবে বিশেষ করে মহিলাদের ইনফেকশনের প্রবণতার হার সবথেকে বেশি। এর প্রধান কারণ হলো, মহিলাদের মূত্রনালী পুরুষের মূত্রনালী তুলনায় দৈর্ঘ্যে অনেক ছোট।
এছাড়াও মহিলাদের মূত্রনালী পায়ুপথের খুব কাছাকাছি যার কারণে ব্যাকটেরিয়া পায়ুপথ থেকে নির্গত হয়ে মূত্রনালীতে সহজে প্রবেশ করে এবং ইনফেকশনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আপনার জানার সুবিধার্থে নিম্নে ইউরিন ইনফেকশনের সম্ভাব্য কিছু কারণ আলোচনা করা হলো-
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করার ফলে ইউরিন ইনফেকশন হয়।
- প্রসাবের বেগ আটকে রাখলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
- কোন কারনে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে।
- পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে, শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের কারণে।
- বিভিন্ন অপারেশনের সময় প্রসাবের রাস্তায় নল বা ক্যাথেটার ব্যবহার করলে।
- পরিধেয় কাপড় নিয়মিতভাবে পরিষ্কার না করলে।
- অনিরাপদ যৌন বা শারীরিক মিলন করলে।
ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ
ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ গুলো আপনার জানা থাকলে আপনি সহজেই এই রোগটি চিহ্নিত করতে পারবেন। এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করে সুস্থ হয়ে যাবেন। তাই ইউরিন ইনফেকশন এর লক্ষণগুলো আমার আপনার আমাদের সবার জেনে রাখা উচিত।
কেননা কোন রোগের লক্ষণগুলো পূর্বে থেকে জানা থাকলে সেই রোগটি থেকে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব। নিম্নে ইউরিয়া ইনফেকশনের কিছু সাধারণ লক্ষণগুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। প্রাণপ্রিয় ভাই ও বোনেরা তাহলে চলুন জেনে নিন ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণসমূহঃ
- ইউরিন ইনফেকশনের প্রধান লক্ষণ হল প্রসাব করার সময় প্রস্রাবের নালীতে জ্বালাপোড়া করে।
- স্বাভাবিকের তুলনায় ঘন ঘন প্রসাব হয় এবং রাতে প্রসাবে বেগ আরো বেড়ে যায়।
- প্রস্রাব করার সময় প্রস্রাব থেকে দুর্গন্ধ বের হয় এবং প্রসাব কিছুটা ঘোলাটে হয়।
- কারো কারো ক্ষেত্রে প্রসাবের বেগ আটকিয়ে রাখতে সমস্যা হয়।
- শরীরে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে এবং প্রসাবের সাথে রক্ত বের হয়।
- তলপেটে ব্যথা অনুভূত হয় এবং বমি বমি ভাব লাগে।
- শরীরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যেতে পারে।
প্রস্রাবে ইনফেকশন হলে কি খেতে হয়
সাধারণত পানি কম খাওয়ার কারণে এবং ব্যাকটেরিয়া আক্রমণের কারণে প্রসাব ইনফেকশন হয়। তাই প্রসাব ইনফেকশনের জন্য ঘন ঘন ঔষধ সেবন না করে ঘরোয়াভাবে কিছু খাবার খেয়ে ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায়। তাই ইউরিন বা প্রসাবে ইনফেকশন প্রতিরোধ করার জন্য কি খেতে হয় এমন কিছু খাবারের নাম আপনাদের মাঝে তুলে তুলে ধরলাম। খাবারগুলো হলো-
ব্রোকলিঃ ব্রোকলি এই সবুজ সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিন সি ব্যাকটেরিনের বিরুদ্ধে লড়ে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ইনফেকশন দূর করে।
দারুচিনিঃ দারুচিনিতে রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা শরীরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে। তাই দারুচিনি খেলে ইউরিন বা প্রসাবে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
রসুনঃ রসুনে অ্যালিসিন নামক উপাদান রয়েছে যা ব্যাকটেরিয়া ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ই.কলি নামক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে ইনফেকশন রোধ করতে সাহায্য করে রসুন।
পেঁপেঃ পেঁপেতে ভিটামিন সি ও ক্যারোটিওয়েড রয়েছে যা শরীরে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে দেয় না। তাই পেঁপে খেলে প্রসাবে ইনফেকশন হয় না।
পানিঃ ইউরিন বা প্রসাব ইনফেকশন সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করুন।
ইউরিন ইনফেকশনের চিকিৎসা
ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণগুলো বুঝতে পারার সাথে সাথে কোন সময় নষ্ট না করে একজন বিশেষজ্ঞ ইউরোলজিস্ট বা মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন এবং পরামর্শ নিন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিন পরীক্ষা করুন এবং ঔষধ সেবন করুন। সাধারণত ইউরিন ইনফেকশন হলে চিকিৎসকগণ প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন।
অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধগুলো একটা কোর্স বা সময় থাকে যেটা সম্পূর্ণ করতে হয়। তাই ডাক্তারের দেয়া ওষুধগুলো নিয়মিত সেবন করুন দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। আর যদি ঔষধের কোর্স সম্পূর্ন করার পরেও আপনি সুস্থ না হন। তাহলে পুনরায় ওই চিকিৎসকের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন।
রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ
আপনি কি রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বা ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অনুসন্ধান করছেন। আপনার জানার সুবিধার্থে রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বা ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নাম এবং এই সকল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রাজশাহীর কোন কোন হাসপাতালগুলোতে বসেন নিম্নে তা আলোচনা করা হলো। প্রয়োজনে আপনি এ সকল ডাক্তারের সিরিয়াল নিয়ে ইউরিন ইনফেকশনের চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হতে পারেন।
১। ডাঃ মোঃ গোলাম মোস্তফা
- এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য) এমএস (ইউরোলজি-সি)
- আবাসিক সার্জন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- চেম্বারে তথ্যসমূহঃ স্থান- রাজশাহী মেট্রোপলিটন হাসপাতাল সি এন বি (দশতলা ভবনের সামনে) কাজি হাটা, লক্ষীপুর, রাজশাহী।
- রোগী দেখার সময়ঃ শনি - বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা - ৮টা পর্যন্ত। শুক্রবার বন্ধ
২। এ.বি.এম. গোলাম রব্বানী
- এমবিবিএস, এফসিপিএস (সার্জারি) , এমএস (ইউরোলজি)
- প্রধান (প্রাক্তন), রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- চেম্বারে তথ্যসমূহঃ স্থান- মাইক্রোপাথ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী
- রোগী দেখার সময়ঃ শনি - বৃহস্পতিবার সুকাল ৯ টা - ১১.৩০। এবং দুপুর ২.৩০ - রাত ৯টা পর্যন্ত।
৩। ডাঃ মোঃ সোহরাব হোসেন সৌরভ
- সহযোগী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- চেম্বারে তথ্যসমূহঃ স্থান- ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী।
- রোগী দেখার সময়ঃ শুক্রবার সকাল ৯.৩০ - সন্ধ্যা ৬.০০টা পর্যন্ত।
৪। অধ্যাপক আবুল কাশেম সরকার
- প্রধান (প্রাক্তন), রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- চেম্বারে তথ্যসমূহঃ স্থান- জনপ্রিয় ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী।
- রোগী দেখার সময়ঃ শনিবার-শুক্রবার রাত ৮.০০ - রাত ১০ পর্যন্ত।
- এবং শুক্রবার সকাল ১০.০০ - দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত।
৫। ডাঃ এম এ বারী
- এমবিবিএস, এমএস (ইউরোলজি)
- সার্জারি আউটডোর, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
- চেম্বারে তথ্যসমূহঃ স্থান-জম জম ইসলামী হাসপাতাল লিমিটেড, কজিহাতা, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী।
- রোগী দেখার সময়ঃ শনিবার-বৃহস্পতিবার দুপুর ২.৩০ - বিকাল ৪.০০ পর্যন্ত।
মন্তব্য
এই আর্টিকেলটির একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। পাঠক মহোদয়, আশা করি আপনি আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন ইউরিন ইনফেকশনের ওষুধের নাম ও রাজশাহীতে মূত্রব্যবস্থা বিশেষজ্ঞ সম্পর্কে। গুরুত্বপূর্ণ আরোও আর্টিকেল পড়তে আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিদিন ভিজিট করুন। আবারও দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলের মাধ্যমে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url