এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার জেনে নিন

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? এছাড়া আপনি কি এলার্জি নিয়ে খুব সমস্যায় আছেন? তাহলে আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। আজকের আমার এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার
তাই এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার জানার জন্য এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে আপনাকে পড়তে হবে। কেননা আমার এ আর্টিকেলটিতে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে জেনে নিন এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার।

ভূমিকা

আজকের এই আর্টিকেলে এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহারের কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করব। এই টিপস গুলো আপনি অবলম্বন করে এলার্জি থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। উদ্ভিদবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে নিম এমন একটা গাছ যার শিকর থেকে শুরু করে ফল, পাতা ও কাণ্ড প্রত্যেকটি জিনিসই হাজারো ওষুধি গুণে ভরপুর। নিম গাছের প্রতিটি অংশই এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ।


যা শরীরের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ সহজে দূর করতে এবং এলার্জি নিরাময়ে খুব কার্যকরী। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার। আরো জানতে পারবেন ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার ও চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার। এবং নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সমূহ। তাহলে চলুন মূল আলোচনার মাধ্যমে জেনে নিন এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার।

এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার

এলার্জি সাথে আমরা কম বেশি সকলেই পরিচিত। ছোট বড় সকল বয়সের এই রোগটি হয়ে থাকে। এলার্জিজনিত সমস্যার কারণে অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকে। এই এলার্জির সমস্যা যে কত বড় সমস্যা সেটা শুধু এলার্জিতে ভুক্তভোগীরা বোঝেন। এলার্জির কারণে আমাদের অনেকের পছন্দের খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয়। 

যেমন- গরুর দুধ, হাঁসের ডিম, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, পুঁটি মাছ, বোয়াল মাছ, বেগুন, কচু, গরুর মাংস ও হাঁসের মাংস ইত্যাদি। এ সকল খাবারগুলো খেলে এলার্জির মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকাতে শুরু করে এবং সঙ্গে সঙ্গে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাকা চাকা লাল হয়ে যায়। অনেকে এলার্জির সমস্যা দূর করার জন্য এলোপ্যাথিক ওষুধ সেবন করেন। 


কিন্তু ওষুধ সেবন করা ছাড়া যে এলার্জি দূর করা সম্ভব এটা অনেকেই জানেনা। এলার্জি দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার করে ঘরোয়া ভাবে খুব সহজে এলার্জি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কেননা নিম পাতায় অ্যান্টি-হিস্টামাইন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এলার্জির লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করে। 

নিম পাতা এলার্জি সৃষ্টিকারী ইমিউনোগ্লোবুলিন ই (IgE) অ্যান্টিবডিগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে। এটি ত্বকের ফোলাভাব, চুলকানি এবং লালভাব কমাতে সাহায্য করে। তাই এলার্জি দূর করতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই ১ থেকে ১.৫ কেজি নিমের পাতা পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে রৌদ্রে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। 

এরপর শুকনো নিমের পাতাগুলো ভালোভাবে পাঠাতে পিষে গুঁড়ো করে নিতে হবে। গুড়ো করা নিমের পাতাগুলো একটা পরিষ্কার কৌটোতে রেখে দিতে হবে। এলার্জি সমস্যা দূর করার জন্য গুঁড়ো করা সেই নিমের পাতা এক চা চামচের তিন ভাগে এক ভাগ নিম পাতা গুঁড়ো এবং এক চা চামচ ইসবগুলের ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।

 তারপর উক্ত নিম পাতা ও ইসবগুলের ভুষির মিশ্রিত ভালোভাবে নেড়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে অথবা রাত্রে শোয়ার আগে খেতে হবে। এই মিশ্রণটি একটানা ২১ দিন খেতে হবে তাহলে আপনি ফলাফল পেতে পারেন। অথবা ভালো কার্যকারিতা পেতে এই মিশ্রণটি এক মাসও খেতে হতে পারে। এভাবে এলার্জিতে নিমপাতা ব্যবহার করলে এলার্জি অনেকটাই কমে যাবে।

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার

ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার খুব উপকারী ও কার্যকরী। পুরুষ ও নারী উভয়ের দাগ হীন ও কোমল ত্বক পাওয়া এটি কাঙ্খিত বিষয়। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে কোমল ত্বক ও দাগহীন ত্বক পাওয়া একটি স্বপ্ন। আমাদের অনিয়মিত জীবনযাপনসহ বিভিন্ন ধরনের দূষণ ও রাসায়নিক যুক্ত কসমেটিকস এবং নকিল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ত্বক প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

বিশেষ করে ব্রণ হলে ত্বকের সৌন্দর্য খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। তাই নকল কসমেটিক ও প্রসাধনী ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার করলে ত্কব হবে মসৃণ, দাগহীন ও উজ্জ্বল। প্রাচীনকাল থেকে ত্বক ও স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বিভিন্ন উপায়ে নিম পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

 বর্তমানেও নিম পাতার ব্যবহারের প্রচলন ব্যাপক। নিমের সবুজ পাতা ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী তাহলে চলুন ব্রনের জন্য নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করতে হয় এ প্রতিবেদনটি পড়ার মাধ্যমে তা জেনে নিন। নিমে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রয়েছে।

তাই ব্রণ দূর করতে চাইলে আপনাকে কিছু নিমপাতা এবং হলুদ নিতে হবে। আপনি চাইলে নিম পাতার গুড়াও ব্যবহার করতে পারেন। তবে কাচা নিমপাতা এবং হলুদ ভালোভাবে পিষে পেস্ট বানিয়ে ত্বকে লাগালে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। নিম পাতা ও হলুদের বানানো পেস্টের সাথে অল্প পরিমাণ পানি মিশিয়ে সমস্ত মুখে ৫ থেকে ১০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।

তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়াও আপনি চাইলে নিমপাতা এবং তুলসি পাতার পেস্ট বানিয়ে ব্রণ দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা ও তুলসির পাতার পেস্ট এর সাথে এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ চন্দন কাঠের গুঁড়ো বা মুলতানি মাটি মিশিয়ে পেস্ট বা প্যাক তৈরি করুন। 

তারপর ওই প্যাকটি আপনার মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এভাবে ব্রণের জন্য নিম পাতার সাথে তুলসী পাতার পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগালে ব্রণ ভালো হওয়ার সাথে সাথে ত্বকের কালো দাগও দূর হয়। মোটকথা ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার খুব ফলদায়ক।

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার এতটাই কার্যকরী যে বলে শেষ করা যাবে না। প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা ওষুধি গুণাগুণের কারণে গ্রামগঞ্জসহ শহর অঞ্চলে এই পাতার ব্যাপক কদর রয়েছে। নিম পাতা অনেক রোগের মহাঔষধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যে সকল ব্যক্তিদের চোখে চুলকানি রয়েছে তারা যদি পানিতে অল্প কয়েকটা নিমপাতা নিয়ে কয়েক মিনিট সিদ্ধ করে নেই।

 তারপর নিমপাতা ও পানির মিশ্রণ হালকা যখন ঠান্ডা হবে তখন সেই পানি দিয়ে চোখে আস্তে আস্তে ঝাপটা দিলে চোখের চুলকানি অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও যাদের শরীরে চুলকানি রয়েছে ও এই চুলকানির ফলে যাদের শরীরে জ্বালাপোড়া করে ও শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে র‌্যাস হয়ে যায়। 

সে সকল ব্যক্তিদের চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সবচেয়ে কার্যকরী। সমস্ত শরীরে চুলকানি দূর করার জন্য আপনাকে গরম পানির মধ্যে কিছু নিম পাতা নিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর নিম পাতা মিশ্রিত ফুটন্ত পানি যখন হালকা ঠান্ডা হবে তখন সেই হালকা কুসুম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। 

আপনি চাইলে শরীরে যে সকল অংশে চুলকানিতে চুলকায় সে সকল অংশ ধুয়ে নিতে পারেন। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নিম পাতা পানি দিয়ে গোসল করলে চুলকানি খুব দ্রুত সেরে যাবে। এছাড়াও চুলের সমস্যা দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার করা হয়। অনেকের মাথায় খুশকি থাকে। এই খুশির সমস্যা দূর করতে নিমপাতা ব্যবহার করা হয়।

নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

নিম পাতার উপকারিতা কথা যেমন বলে শেষ করা যাবেনা। ঠিক তেমনি অপরদিকে এর কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে নিমপাতা খেলে হিতের বিপরীত হতে পারে। আমার এই প্রতিবেদনটিতে আমি আলোচনা করতে চলেছি নিম পাতার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে। পাঠক তাহলে চলুন জেনে নিন নিম পাতার ক্ষতিকর দিক গুলো কি কি সে সম্পর্কে।

  • বেশি পরিমাণে নিমপাতা সেবন করলে গ্যাস্টিকের সমস্যা বেড়ে যায়।
  • অনেকের নিমপাতা খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হয় ও বমি হয় এর সাথে পাতলা পায়খানাও শুরু হয়।
  • অনেকের আবার বেশি পরিমাণে নিমপাতা ব্যবহার করলে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে।
  • কারোও অপারেশন হলে তাকে অন্তত দুই সপ্তাহ পূর্বে থেকে নিম পাতা খাওয়া বাদ দিতে হবে।
  • অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায় এবং বন্ধ্যাত্বের কারণে দাঁড়ায়।
  • গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে নিম পাতা খাওয়া ক্ষতিকর। নিম পাতা খাওয়ার ফলে গর্ভপাত হতে পারে।
  • অতিরক্ত নিম পাতা ব্যবহার করলে ত্বকে ফুস্কুরি উঠে।

মন্তব্য

পাঠক, আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে আপনি জানতে পেরেছেন এলার্জিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় ধরে আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পরে আপনি যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন। 

তাহলে আর্টিকেলটি আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। আরো গুরুত্বপূর্ণ নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.sumonworld.com এ প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন। আপনি চাইলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন। ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url