গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় বিস্তারিত জানুন
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এসব সম্পর্কে জানার জন্য আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে করছেন? যদি খোঁজাখুঁজি করে থাকেন তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য প্রয়োজনীয় হতে চলেছে। এ আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়।
সুপ্রিয় পাঠক, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এই সম্পর্কে জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। আমার এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করেছি গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয় এরকম প্রশ্ন অনেক মা বোনই করে থাকেন। গর্ভবস্থায় মা-বোনদের এটি একটি সাধারন প্রশ্ন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়।
আরোও জানতে পারবেন গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল, গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয় এবং গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়। এই সকল বিষয়গুলোর বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে চলুন ধৈর্য ধরে আলোচনা গুলো পড়ে নিন।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
স্বাভাবিকের চেয়ে গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন ক্ষুদা একটু বেশি লাগে। তাই গর্ভবতী মায়েদের সঠিক সময়ে পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কারণ গর্ভবতী মায়ের সাথে সাথে গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য এই খাবার বেশ দরকারি। বর্তমান সময়ে কম-বেশি সকলেই চান যে তার অনাগত সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হোক।
গর্বের সন্তান যাতে ফর্সা হয় তার জন্য গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা বিভিন্ন রকম পুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকে। এর সাথে সাথে তাদের জীবনযাপনের পরিবর্তন করে।পৃথিবীর ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হবে কিনা এটা খাদ্যের উপর তেমন প্রভাব ফেলে না। বরং গর্ভের সন্তান ফর্সা হবে কিনা এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে বাবা ও মায়ের জিন এর উপর।
তবে বয়োজ্যেষ্ঠদের মতে এবং প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী যে সকল খাবারগুলো খেলে গর্ভের সন্তান ফর্সা হবে এমন কিছু খাবারের নাম আমার এই প্রতিবেদনটিতে আমি আলোচনা করতে চলেছি।আপনি যদি আপনার বয়োজ্যেষ্ঠ দাদা-দাদীদের কথা প্রচলিত কথা বিশ্বাস করেন তাহলে এই খাবারগুলো খেয়ে দেখতে পারেন। খাবারগুলো হলঃ
- নারিকেলঃ গর্ব অবস্থায় আপনি যদি চান যে আপনার গর্ভের সন্তান ফর্সা হোক তবে নারিকেলের ভিতরের সাদা অংশটা পরিমাণ মতো খেতে পারেন। নারিকেলের ভিতরে সাদা অংশটা গর্ভে থাকা সন্তানকে ফর্সা করতে অনেক সাহায্য করে।
- জাফরানঃ জাফরান একটি আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে পরিচিত। মূলত জাফরান খাদ্যের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহার করা হয়। জাফরা্নের দাম অনেক বেশি হলেও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা জাফরান খেয়ে থাকেন। জাফরান গর্ভাবস্থায় থাকা অনাগত সন্তানের গায়ের ময়লা দূর করে এবং গায়ের রং ফর্সা করে।
- দুধঃ ছোট থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ সবার জন্য দুধ একটি আদর্শ খাবার। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের দুধ খাওয়া খুব জরুরী। গর্ভাবস্থায় মায়েরা পরিমাণ মতো প্রতিদিন দুধ পান করলে গর্ভের বাড়ন্ত ভ্রুণ গঠিত হয় এবং গর্ভে থাকা সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হয়।
- ডিমঃ ডিমের সাদা অংশ গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। অনেকে মনে করেন ডিমের সাদা অংশ গর্ভে থাকা সন্তানের গায়ের রং ফর্সা করতে সাহায্য করে। এজন্য গর্ভবতী মায়েরা প্রতিদিন ডিম খেয়ে থাকেন।
- বাদামঃ যেকোনো ধরনের বাদাম যেমন চিনা বাদাম, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম এ সকল বাদামগুলো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা খেলে সন্তানের গায়ের রং ফর্সা হয়। অনেকে আবার বাদাম বেটে পেস্ট করে দুধের সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। তাই গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার জন্য আপনি চাইলে প্রতিদিন পরিমাণ মতো বাদাম খেতে পারেন।
- কামলা লেবুঃ টক জাতীয় যতগুলো রসালো ফল রয়েছে তার মধ্যে কমলালেবু সবচেয়ে দরকারি ফল গর্ভবতী মায়েদের জন্য। কামলালেবু তে ভিটামিন সি ভরপুর থাকে তাই গর্ভের সন্তান ফর্সা করতে কমলালেবু সহায়ক।
- ঘিঃ প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী গর্ভের সন্তান ফর্সা করতে ঘি কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাই গর্ভের সন্তান ফর্সা যেন হয় তার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ঘি রাখতে পারেন।
সকল গর্ভবতী মায়েদের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগতভাবে আমি বলতে চাই যে, গর্ভবতী মায়েদের এই প্রত্যাশাটি থাকা উচিত যেন তার গর্বের সন্তান সুস্থ ও সবলভাবে গর্ভে বেড়ে ওঠে এবং সুস্থভাবে পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ঠ হয়। কারণ সন্তান তো সন্তানই। সে কালো কিংবা ফর্সা হোক।
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল সম্পর্কে অনেক মা ও বোনেরা জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুজি করেন। আমারে প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল সম্পর্কে।
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার কিছু আমল রয়েছে যেগুলো গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন সময় এ আমলগুলো প্রতিদিন করতে হয়। গর্ভবতী মা ও বোনদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর এ সকল আমলগুলো করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়
কেননা মহান আল্লাহ তাআলা একজন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজি ব্যক্তির দোয়া সব থেকে বেশি কবুল করেন। এজন্য নামাজ আদায়ের পরে এই আমলগুলো করা উচিত। গর্ভে সন্তান আসার এক মাস পর থেকে নিম্নক্ত এই আমগুলো করলে গর্ভবতী মায়ের গর্বের সন্তান ফর্সা হয়। নিম্নে গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল গুলো আলোচনা করা হলো।
- প্রথম মাসে সূরা-আল ইমরান পড়লে সন্তান দামী হবে।
- দ্বিতীয় মাসে সূরা-ইউসুফ পড়লে সন্তান সুন্দর হবে।
- তৃতীয় মাসে সূরা মারিয়াম পড়লে সন্তান সহিষ্ণু হবে।
- চতুর্থ মাসে সূরা-লোকমান পড়লে সন্তান বুদ্ধিমান হবে।
- পঞ্চম মাসে সূরা মুহাম্মদ পড়লে সন্তান চরিত্রবান হবে।
- ষষ্ঠ মাসে সূরা ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে।
- সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দ্বশম মাসে সূরা-ইউসুফ, মুহাম্মদ এবং ইব্রাহিম কিছু কিছু পড়তে হবে।
গর্ভাবস্থায় মায়েরা ওযু করে পাক পবিত্র হয়ে কোরআন তেলাওয়াত করার পাশাপাশি উপরোক্ত এই আমলগুলো করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান ভালো ও শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ্য থাকবে এবং সুন্দর ভাবে পৃথিবীর বুকে ভূমিষ্ঠ জন্ম হবে।
গর্ভবস্থায় এ সকল আমলগুলোর সাথে সাথে কোরআন তেলাওয়াত করলে। ২০ তম সপ্তাহ হলে গর্ভে থাকা সন্তান শোনার ক্ষমতা অর্জন করে তাই গর্ভবতী মায়েরা কোরআন তেলাওয়াত করলে গর্ভে্র সন্তান এর মাঝেও কোরআনের সম্পর্ক জুড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়
অনেকে প্রশ্ন করেন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চায় মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় সন্তানের মস্তিষ্ক বিকশিত হয়। এর জন্য গর্ভকালীন সময় মায়েদের খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। গর্ভাবস্থায় থাকাকালীন মায়েরা এ সকল খাবারগুলো খেলে গর্ভে থাকা বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকশিত হয় এবং বাচ্চা মেধাবী হয়। সুপ্রিয় পাঠক তাহলে চলুন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা মেধাবী হয়।
- প্রটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম ও বিভিন্ন প্রকারের ডাল এবং গরুর কলিজা ইত্যাদি খেলে বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকাশিত হয় এবং বাচ্চা মেধাবী হয়।
- আয়রন ও ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, শুকনো ফল, শাকসবজি যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ফলিক এসিড আছে সেগুলো গর্ভাবস্থায় খাওয়া। এ সকল খাবারগুলো গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্ক বিকশিত হয় এবং গর্বের সন্তান মেধাবী হয়।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন পালংশাক, বাঁধাকপি, টমেটো ও ব্রকলিগ এ সকল সবুজ শাকসবজি গুলো গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্ক বিকশিত হয় এবং সন্তানের স্মৃতিশক্তি বাড়ে ও সন্তান মেধাবী হয়।
- ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন পনির, গরুর মাংস, গরুর কলিজা, খাসির কলিজা এই খাবারগুলো গর্ভবতী মায়েদের গর্ভে থাকা সন্তানের মস্তিষ্ক বিকাশের সাহায্য করে এবং গর্ভের সন্তানকে মেধাবী করে। এছাড়া গর্ব অবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা আলো থেকেও ভিটামিন ডি এর চাহিদা পূরণ করতে পারে।
- কপার ও জিংকসমৃদ্ধ খাবার যেমন বিভিন্ন ধরনের বাদাম, মটরশুঁটির, ছোলা, শস্য জাতীয় খাবার ও বিট এ সকল খাবারগুলো গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত। কারণ এ সকল খাবার গুলো কপার ও জিংক সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্ক বিকাশিত হতে সাহায্য করে এবং গর্ভের সন্তান মেধাবী হয়।
- গর্ভাবস্থায় আয়োডিনযুক্ত খাবার খেলে গর্ভে থাকা সন্তানের মস্তিষ্ক বিকশিত হয় এবং মস্তিষ্কের কোষ সঠিকভাবে বাড়ে। বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ, কুসুমসহ ডিম, কলিজা, গলদা ও বাগদা চিংড়ি এবং ভুট্টাতে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে। এ সকল আয়োডিনযুক্ত খাবারগুলো গর্ভাবস্থায় খেলে গর্ভের সন্তানের মেধা বিকশিত হয়।
গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয়
গর্ভবস্থায় মহিলারা টক খেতে পছন্দ করে না এমন গর্ভবতী মহিলা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। গর্ভাবস্থায় মহিলাদের টক জাতীয় খাবারের প্রতি একটা বিশেষ আকর্ষণ কাজ করে। গর্ভাবস্থায় টক জাতীয় খাবার খাওয়া একটা স্বাভাবিক বিষয়। গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয় এই সম্পর্কে অনেকে জানার জন্য প্রশ্ন করে থাকে।
গর্ভাবস্থায় টক খেলে কি হয় আমাদের প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আশা করি আপনারা জানতে পারবেন। গর্ভাবস্থায় টকের প্রতি আকর্ষণ বাড়ার মূল কারণ হলো এ সময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে এক ধরনের হরমোনের পরিবর্তন হয়। এ সময় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে ফ্লুইড বা সোডিয়াম নিঃসরণ।
গর্ভাবস্থায় টক ফল খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তবে সব সময় মনে রাখা উচিত অতিরিক্ত পরিমাণে টপ জাতীয় ফল না খাওয়াটাই ভালো। অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় খাবারের প্রতি কোন রুচি থাকে না এবং মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
প্রথম ২ থেকে ৩ মাস গর্ভবতী মহিলাদের বমি বমি ভাব হয় এবং বমি হয়। তাই গর্ভাবস্থায় বমি ভাব দূর করতে এবং মাথা ঘোরা কমাতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় পরিমাণ মতো টক ফল খাওয়া উচিত। আশা করি আপনারা আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন গর্ভ অবস্থায় টক খেলে কি হয় সে সম্পর্কে।
লেখকের শেষ কথা
আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে আপনি জানতে পেরেছেন গর্ভবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আমারই আর্টিকেলটি সবার সাথে শেয়ার করুন। এরকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url