অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ঔষধ খাব বিস্তারিত জানুন
স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাব এই সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? যদি জানতে চান তাহলে আমার এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অতি প্রয়োজনীয় হতে চলেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাব এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাব এই সম্পর্কে জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি আপনাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়তে হবে। তাহলে আপনি বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারবেন স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাব এই সম্পর্কে।
ভূমিকা। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ঔষধ খাব
পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করতে চলেছি স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাব এই সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন তার সাথে আরও জানতে পারবেন স্বপ্নদোষ কি, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়, অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি সমস্যা হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
স্বপ্নদোষ কি
ছেলেরা যখন বয়সন্ধিকালে পৌঁছায় তখন তাদের বীর্যথলি বা অন্ডকোষে শুক্রাণু তৈরি হয়। সময়ের পরিবর্তনে বীর্যথলিতে বীর্য এবং অন্ডকোষে শুক্রাণু জমা হতে থাকে। বীর্যথলির ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর। ঘুমের ঘোরে অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত ঘটার মাধ্যমে বীর্য বা শুক্রাণুর ভারসাম্য বজায় থাকা বা নিয়ন্ত্রিত হওয়াকে স্বপ্নদোষ বলে। পুরুষদের অনেক রোগের মধ্যে স্বপ্নদোষ একটি সাধারণ রোগ। স্বপ্নদোষ বয়সন্ধিকালে শুরু হয়।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ঔষধ খাব
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ঔষধ খাব এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। আমার এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ঔষধ খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ পুরুষদের একটি অতি পরিচিত সমস্যা।
আমাদের আশেপাশে থাকা অনেক পুরুষ এই সমস্যায় ভোগেন। গবেষণায় দেখা যায় অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ সমস্যায় ভোগেন ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী পুরুষেরা। সাধারণত শরীরে হরমোন পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ সাধারণত বয়সন্ধিকালের প্রথম দিকে, যৌন আকাঙ্খার কারণে রাতে ঘুমের ঘোরে এই স্বপ্নদোষ হয়।
শুধুমাত্র শরীরে হরমোন পরিবর্তনের কারণে স্বপ্নদোষ হয় না আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এই কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পর্নোগ্রাফি দেখা, যৌন উত্তেজনা মূলক আলাপ-আলোচনা করা, অতিরিক্ত হস্তমৈথুন, বিভিন্ন রকম সেক্স চটি গল্প পড়া ইত্যাদির কারণে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ কোন পুরুষের কাছেই ভালো বিষয় হিসেবে বিবেচিত হয় না। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে পুরুষরা বিব্রত বোধ করে। এ সমস্যার কারণে পুরুষেরা কি ওষুধ খাবেন সেটা ভেবে থাকেন। তাই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি ওষুধ খাবেন এটা সম্পূর্ণ নির্ভর কর একজন বিশেষজ্ঞ যৌন ও চর্ম চিকিৎসকের উপর।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করলে দ্রুত সুস্থ হবেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোন ওষুধ সেবন করা মোটেও উচিত না। অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে বিশেষ কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো সেবন করলে আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবেন। আপনি চাইলে এলোপ্যাথিক ঔষধ অথবা আয়ুর্বেদিক ঔষধ সেবা করতে পারেন। তাহলে চলুন জেনে নিন অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের কিছু এলোপ্যাথিক ও হোমিও ওষুধের নাম-
- এলোপ্যাথিকঃ নিউটোন, নারভেন্ট, এনডিউরেক্স।
- হোমিওঃ Arg Met, Salix nig, Nat phos, Selenium.
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষের জন্য প্রথমে ওষুধ সেবন না করে ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। স্বপ্নদোষ একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। প্রায় সকল পুরুষকে এই স্বপ্নদোষের সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায়গুলো আপনাদের সাথে আলোচনা করব। দৈনন্দিন জীবন যাপনে নিম্নোক্ত কাজগুলোর মাধ্যমে আপনি সহজে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তাহলে চলুন সুপ্রিয় পাঠক জেনে নিন অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
- ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক চলাঃ অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রধান উপায় হলো ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক জীবন যাপন করা। প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার অভ্যাস গড়ুন।বিভিন্ন রকম ইসলামিক বইগুলো পড়ুন এবং বিশিষ্ট বক্তাদের ওয়াজ শুনুন। দেখবেন অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাল্লাহ।
- প্রস্রাব করে নেওয়াঃ রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে নেয়া ভালো। কারণ প্রসবের চাপ বেশি থাকলে রাত্রে স্বপ্নদোষ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করে নেওয়া উত্তম।
- ঘুমানোর পূর্বে হাটাহাটি করাঃ রাতে ঘুমানোর পূর্বে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা উচিত। রাত্রে খাওয়া দাওয়ার কিছুক্ষণ পর হাটাহাটি করলে ঘুম ভালো হয়। এছাড়া প্রতিদিন কিছু যোগব্যায়াম করলে স্বপ্নদোষ হাওয়া আরেকটা কমে যায়।
- পর্নোগ্রাফি থেকে বিরত থাকাঃ আপনি যদি অতিরিক্ত স্বপ্ন দেশ থেকে প্রকৃতভাবে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পর্নোগ্রাফি দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে। অনেকেই ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে পর্নোগ্রাফি দেখে থাকে ফলে স্বপ্নদোষ হয়। তাই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে হলে পর্নোগ্রাফি বা অশ্লীল ভিডিও কে না বলুন।
- পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাঃ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকার মাধ্যমে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অজু করে পাক পবিত্র হয়ে ঘুমাতে যাওয়া উচিত। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পাক-পবিত্র অবস্থায় থাকলে স্বপ্ন সম্ভাবনা থাকে না। আপনি চাইলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সূরা ইখলাস, সূরা নাস, সুরা ফালাক তিনবার পড়ে শরীরে তিনবার ফু দিয়ে ঘুমান। আপনি চাইলে আইতাল কুরসি পড়েও ঘুমাতে পারেন।
- হস্তমৈথুন করা থেকে বিরত থাকাঃ যে সকল পুরুষদের মাঝে হস্তমৈথুন করার অভ্যাস বিদ্যমান রয়েছে। তারা যত দ্রুত সম্ভব এই বদ অভ্যাস পরিহার করুন। হস্তমৈথুনের মতবাদ অভ্যাস পরিহার করলে অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি মিলবে।
- খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করাঃ অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পেতে হলে খাদ্যাভাসের কিছু পরিবর্তন আনা অতি জরুরী। কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেয়ে রাত্রে ঘুমাতে যাওয়া মোটে উচিত না।যেমনঃ ডিম, গরম দুধ ও অতিরিক্ত পরিমাণে গরুর মাংস। এ সকল উচ্চ রক্তচাপ বিশিষ্ট খাবার গুলো রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে খেলে স্বপ্নদোস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ সকল খাবার খাওয়াতে বিরত থাকতে হবে।
- উপুর বা চিত হয়ে না ঘুমানোঃ অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপর বা চিত হয়ে ঘুমানো মোটেও ঠিক না। তাই উপর বা চিত হয়ে না ঘুমিয়ে একদিকে অর্থাৎ ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করা উচিত।
- নিজেকে ব্যস্ত রাখাঃ অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। নিজের পছন্দের কাজগুলো সম্পূর্ণ করার জন্য সময় দিতে হবে। মন ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে।
অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে কি সমস্যা হয়
আমাদের পুরুষ সমাজে একটি ভুল ধারণা রয়েছে সেটি হল অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে স্বাস্থ্য ভেঙে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে । রাত্রে ঘুমের ঘরে স্বপ্নদোষ হওয়াটা সম্পূর্ণ একটি প্রাকৃতিক বিষয়। কিন্তু অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে এবং সেটা যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলে তবে সময়ের ও স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তাই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হলে বিভিন্ন রকম সমস্যাগুলো দেখা দেয়। সমস্যা গুলো হলোঃ
- শারীরিকভাবে দুর্বলতা দেখা দেয়
- মাথা ঝিমঝিমি করে ও মাথা ব্যথা হয়
- চোখে ঝাপসা দেখা যায়
- হঠাৎ বর্ষা অবস্থায় উঠলে মাথা ঘুরে
- স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে
- বীর্য পাতলা হয়ে যেতে থাকে
- লিঙ্গের শিথিলতা দেখা দেয়
- লিঙ্গের উত্থান জনিত সমস্যা হয়
- দ্রুত বীর্যপাত সমস্যা সৃষ্টি হয়
- পুরুষাঙ্গ বক্রতা দেখা যায়
- পুরুষাঙ্গ গোড়া চিকন হয়ে যায়
- পা এবং হাতের গিরায় ব্যথা অনুভূত হয়
- কাজে মন বসে না এবং শরীর একটুতেই ক্লান্ত হয়ে যায়
স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তির দোয়া
স্বপ্নদোষ থেকে মুক্ত হওয়ার শরীয়ত ও ইসলাম সম্মত উপায় সম্পর্কে জেনে নিন। ঘুমানোর আগে ওযূ করে পাক পবিত্র হয়ে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে। ওজু করলে শরীর পবিত্র হয় যার ফলে শয়তান দূরে থাকে এবং স্বপ্নদষ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। এছাড়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই হাতের তালু একত্রে করে বিসমিল্লাহ বলে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস তিনবার পাঠ করে হাতের তালুতে ফু দিয়ে পুরো শরীর মুছে দিতে হবে।আরও পড়ুনঃ ইসলামে সপ্তাহে কতবার সহবাস করা উচিত
এবং এর সাথে আয়তাল কুরসি পাঠ করে ঘুমাতে যেতে হবে। এছাড়াও যাদের অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হয় সে সকল ব্যক্তিগণ নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করে ঘুমাতে গেলে আল্লাহর রহমতে স্বপ্নদোষ থেকে মুক্তি পাবে। নিম্নে দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ দেয়া হলো - উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আউযুবিকা মিনাল এহ্তেলামি ওয়া মিন্ সুইল এহ্তিলামি ওয়াল মানামি ওয়া আন্ ইয়ালআবা বিশ্শাইত্বানু ফিল ইয়াক্বযাতি ওয়াল মানামি ।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, আশা করি আমারে আর্ট খেলতে আপনার পড়তে ভালো লেগেছে এবং আপনি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। যদি পড়ে থাকেন এবং পড়ার মাধ্যমে যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আমার এই আর্টিকেলটি আপনার প্রিয় বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শেয়ার করুন। আপনি চাইলে কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত লিখে প্রকাশ করতে পারেন। এরকম আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url