নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় - নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ জেনে নিন

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে আপনি কি জানতে চাইছেন? যদি জানতে চান তাহলে আমার এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আমার এ পোস্টিট পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার কারণ সম্পর্কে।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায়
পাঠাক, নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে আপনি যদি বিস্তারিতভাবে জানতে চান তাহলে আমার এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন জেনে নিন নরমাল ডেলিভার হওয়ার উপায় ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণগুলো।

উপস্থাপনা

সকল গর্ভবতী মহিলারা নরমাল ডেলিভারি হওয়ার বিষয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। নরমাল ডেলিভারি নির্ভর করে প্রকৃতির উপর। তবে গর্ভকালীন সময়ে কিছু খাবার দাবার, শারীরিক ব্যায়াম এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

আমার এই পোস্টটিতে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করেছি নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় ও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে। আমার এই পোস্টেটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরও জানতে পারবেন নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া, 

নরমাল ডেলিভারির জন্য কি খেতে হবে, নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়, নরমাল ডেলিভারির ব্যথা কেমন এ সকল বিষয়গুলো উপর বিস্তারিত তথ্য। তাহলে চলুন আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

নরমাল ডেলিভারির হওয়ার উপায়

নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক ডেলিভারি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা আল্লাহ প্রদত্ত হয়ে থাকে। সাধারণত মহিলাদের মাসিকের রাস্তা বা যোনিপথ দিয়ে সন্তান প্রসব করাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় নরমাল ডেলিভারি বলা হয়ে থাকে। 

সহজভাবে বলতে গেলে মহিলাদের জরায়ুর মুখ থেকে নবাগত শিশুর মাথা বের হওয়ার যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া তাকেই নরমাল ডেলিভারি বলে। অর্থাৎ জরায়ুর মুখ থেকে শিশুর মাথা বের হলে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব। সকলে চান তাদের নরমাল ডেলিভারি হোক। 

তাই নরমাল ডেলিভারির জন্য কিছু করণীয় বিষয় বা উপায় মেনে চলতে হয়। নরমাল ডেলিভারির জন্য কিছু করণীয় দিক বা নিয়ম রয়েছে। এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভব থাকে। সুপ্রিয় পাঠক তাহলে চলুন জেনে নিন নরমাল ডেলিভারি জন্য করণীয় উপায় গুলো সম্পর্কে।

  • ডায়েটঃ গর্ভাবস্থায় শুয়ে প্রতি একটু বেশি যত্ন নেয়া প্রয়োজন। গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট অনুসরণ করা। এর জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। শাকসবজি এবং তাজা ফলমূল বেশি পরিমাণে খাওয়া। এছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ভিটামিন ক্যালসিয়াম আয়রন সমৃদ্ধ খাবার রাখা। গর্ভবতী মায়েদের সব সময় মনে রাখা উচিত শরীরের পেসি যত শিথিল থাকবে নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভাবনা আরো বৃদ্ধি পাবে।
  • স্ট্রোকঃ নরমাল ডেলিভারির জন্য করনীয় হিসেবে শরিকের সুস্থ এবং সতেজ রাখা অত্যন্ত জরুরী। ট্রেস বার চিন্তা বাড়লে শরীর বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়। গর্ভাবস্থায় স্ট্রেস যতটা পারা যায় কমাতে হবে। সবসময় চেষ্টা করতে হবে হাসি খুশি এবং মনের দিক দিয়ে প্রফুল্ল থাকা।
  • প্রেশার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ নরমাল ডেলিভারির জন্য আরেকটি বিশেষ করণীয় দিক হলো প্রেসার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে।
  • যোগব্যায়ামঃ নরমাল ডেলিভারির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ করণীয় বিষয়টা হল যোগব্যায়াম করা। গর্ভবতী মায়েরা প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে তাদের শরীরে পেশিগুলো শিথিল থাকে এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং স্ট্রোকের হার কমে। তাই নরমাল ডেলিভারির জন্য যোগব্যায়াম করা অত্যন্ত খুব জরুরী।
  • এছাড়াও নরমাল ডেলিভার জন্য করনীয় হিসেবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত চেকআপ করা, গর্ভকালীন জটিলতা গুলো সারিয়ে তোলা এবং প্রয়োজনে হোমিও ঔষধ সেবন করা

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ

নরমাল ডেলিভারির জন্য করনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে শুধু জানলেই হবে না। আমাদেরকে নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কেও বাস্তব জ্ঞান অর্জন করতে হবে। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ গুলো সম্পর্কে জানা থাকলে গর্ভকালীন অবস্থায় অনেক সমস্যা থেকে সহজে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

গর্ভাবস্থায় একেবারে শেষ প্রান্তের দিকে এমন কিছু কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখলে সহজে বোঝা যায় যে নরমাল ডেলিভারি হবে কিনা। এই লক্ষণ গুলো সম্পর্কে গর্ভবতী মায়েদের পূর্ব থেকে জানা থাকলে তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়।। মমতাময়ী মা ও বোনেরা তাহলে চলুন জেনে নিন নরমাল ডেলিভারি হওয়ার কিছু লক্ষণগুলো।

  • বাচ্চার মাথা ও দেহ জরায়ুর নিচের দিকে নেমে আসে
  • ঘন ঘন পায়খানার বেগ পাবে
  • গর্ভের সন্তান কিছুটা নিচে আসে
  • জরায়ুমুখ পাতলা ও প্রসারিত হয়
  • পিঠে এবং কমও কোমরের চারপাশ প্রচন্ড ব্যথা করে
  • তলপেটে প্রচন্ড চাপ অনুভব হয়
  • স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে স্রাব বের হয়
  • পেটে ব্যথা, মাসিকের ব্যথার মতো অনুভব হয়
  • সাদা বা গোলাপি রঙের স্রাব বের হয়
  • যোনি পথ দিয়ে রক্তপাত হয়
  • শরীরে অস্থিরতা বেড়ে যায়

নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া

নরমাল ডেলিভারি সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপর। একজন গর্ভবতী মাকে নরমাল ডেলিভারির সময় যে পরিমাণ কষ্ট ও যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় এই যন্ত্রণা বা কষ্ট পৃথিবীর কোন কষ্টের সমান না। এতটাই কষ্ট সহ্য করতে হয়। বিভিন্ন হাদিসে এসেছে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ইসলাম এরশাদ করেছেন করেন, মহান আল্লাহ তাআলার ৯৯টি গুণবাচক নাম আছে।

যে ব্যক্তি আল্লাহর এই গুণবাচক নামগুলো জিকির করবে সে জান্নাতে যাবে। এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আল্লাহর এই গুণবাচক নাম গুলোর আলাদা আলাদা ফজিলত ও উপকারিতা রয়েছে। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন রকম বালা-মুসিবত থেকে রক্ষা করে। 

আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ টি নামের মধ্যে (আল -মুবদিয়ু) একটি। এই পবিত্র নামটি আমলের মাধ্যমে একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভের সন্তান হেফাজত এবং নিরাপদে থাকে ও নারীদের সন্তান প্রসব সহজ হয়। এছাড়াও নরমাল ডেলিভারি হওয়ার দোয়া সমূহের মধ্যে নিম্নলিখিত সূরাগুলোর আয়াত রয়েছে।

সুরা রাদের ৮ নং আয়াতঃ 
অনুবাদঃ প্রত্যেক নারী যে গর্ব ধারণ করে আল্লাহ তা জানেন এবং মাতৃগর্ভে যা কমে ও বাড়ে তাও এবং তার নিকট প্রত্যেক জিনিসের এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে ।

সুরা ফাতিরের ১১ নং আয়াতঃ
অনুবাদঃ আল্লাহ তোমাদেরকে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তারপর শুক্রবিন্দু দ্বারা। তারপর তোমাদেরকে জোড়া জোড়া বানিয়ে দিয়েছেন। নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং যা সে প্রসব করে তা আল্লাহ তাআলার জ্ঞাতসারেই করে।

নরমাল ডেলিভারির জন্য কি খেতে হবে

নরমাল ডেলিভারি হওয়া যেহেতু একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। কিন্তু বর্তমান সময়ে নরমাল ডেলিভারির প্রবণতা একেবারে কমে গেছে বললেই চলে। বর্তমান সময়ে সিজারে প্রবণতা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই নরমাল ডেলিভারি হওয়ার জন্য কিছু খাবার রয়েছে। এই খাবারগুলো গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলারা যদি নিয়মিত খান তাহলে তাদের নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভাবনা থাকে। নরমাল ডেলিভারির জন্য কি খেতে হবে নিম্নে সে সকল খাবার গুলো সম্পর্কে জেনে নিন।

  • দই
  • সুপ
  • কলা
  • কলিজা
  • খেজুর
  • বাদাম
  • গরুর দুধ
  • মিষ্টি আলু
  • তাজা ফলমূল
  • বীজ জাতীয় খাবার
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি
  • প্রোটিন যুক্ত খাবার

নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়

গর্ভবতী মায়েদের গর্ভকালীন সময় একটা সাধারন প্রশ্ন থাকে যে নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়? সাধারণভাবে বলতে গেলে ৩৭ সপ্তাহ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে যেকোনো সময় বেশিরভাগ শিশুর নরমাল ডেলিভারি বা স্বাভাবিক প্রসব হয়ে থাকে। অর্থাৎ ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহ এর মাঝের পাঁচ সপ্তাহের যেকোনো সময় নরমাল ডেলিভারি হয়। 

৩৭ সপ্তাহের আগে যে সকল শিশু জন্মগ্রহণ করে তাদেরকে প্রিম্যাচিওর বলা হয়। এ সকল শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিচর্চা ও সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। অপরদিকে যে সকল শিশু গর্ভাবস্থা থেকে যদি ৪২ সপ্তাহ পর জন্মগ্রহণ করে সেক্ষেত্রে তাকে দীর্ঘায়িত করা গর্ভাবস্থা বলা হয়। 

নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয় এটার কোন সুনির্দিষ্ট তারিখ নাই। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ হয়তোবা আপনাকে নরমাল ডেলিভারি তারিখ বলে দিতে পারেন কিন্তু আমাদের মনে রাখা উচিত শতকরা ৪% শিশুর ক্ষেত্রে ডাক্তারের দেওয়া তারিখ অনুযায়ী নরমাল ডেলিভারি হয়।

নরমাল ডেলিভারি ব্যাথা কেমন

একজন গর্ভবতী মায়ের সন্তান ডেলিভারির সময় তীব্র যন্ত্রণা একটি অভিজ্ঞতা। এর কারণ হলো শিশু যখন গর্ভবতী মায়ের যোনি পথ দিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় তখন গর্ভবতী মায়ের যোনিপথে স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রচন্ড চাপের সৃষ্টি হয়। যে সকল মায়েদের যোনিপথ অপ্রস্ত বা ছোট তাদের ক্ষেত্রে ব্যাথার মাত্রা আরও তীব্র হয় এমনকি জনি পথ ছিড়ে যেতে পারে। 

গর্ভবতী মহিলাদের সন্তান ডেলিভারির সময় বিভিন্ন কারণে ব্যথা সৃষ্টি হয়। একজন গর্ভবতী মহিলা সন্তান ডেলিভারির সময় প্রসব বেদনা অনুভব করে তা নির্ভর করে তার গর্ভে থাকা সন্তানের আকার এবং জরায়ুর অভ্যন্তরে অবস্থান, আবেগ, সংকোচন শক্তি উপর। নরমাল ডেলিভারি ব্যাথা প্রথমে শুরু হয় পেটে ব্যথা তারপর পিঠে ব্যথা এবং কিছুক্ষণ পর খিচুনি সহ তীব্র ব্যথা অনুভব হয় এবং এই ব্যাথার সাথে সাথে পরবর্তীতে চাপ দেখ দেয়.

মন্তব্য

সুপ্রিয় পাঠক আশা করি আমাদের পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন নরমাল হওয়ার উপায় ও নরমাল হওয়ার লক্ষণ সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। 

এই পোষ্টটি পড়ে আপনি যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আমার ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন এবং প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। আবারো দেখা হবে নতুন কোন পোস্টের মাধ্যমে। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url