চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার জেনে নিন

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? এছাড়া আপনি কি চর্মরোগ নিয়ে খুব সমস্যায় আছেন? তাহলে আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। আজকের আমার এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
তাই চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার জানার জন্য এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে আপনাকে পড়তে হবে। কেননা আমার এ আর্টিকেলটিতে আমি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে জেনে নিন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার।

ভূমিকা

আজকের এই আর্টিকেলে চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করব। এই টিপস গুলো আপনি অবলম্বন করে চর্মরোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন। উদ্ভিদবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মতে নিম এমন একটা গাছ যার শিকর থেকে শুরু করে ফল, পাতা ও কাণ্ড প্রত্যেকটি জিনিসই হাজারো ওষুধি গুণে ভরপুর। নিম গাছের প্রতিটি অংশই এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ।


যা শরীরের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ সহজে দূর করতে এবং এলার্জি নিরাময়ে খুব কার্যকরী। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার। আরো জানতে পারবেন চর্মরোগ দেখতে কেমন ও চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার এবং তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার। তাহলে চলুন মূল আলোচনার মাধ্যমে জেনে নিন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার।

চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার

মানুষের শরীরের ত্বক বা চামড়া হলো মানব দেহকে সুরক্ষা দানকারী একটি বড় অঙ্গ। ত্বক বা চামড়ায় অস্বস্তি বা বিরূপ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান যেমন ফোলা ভাব, চুলকানি, জ্বালাপোড়া ও লালচে বা ফুসকুড়ির মত দেখা দেয় যা ত্বকের স্বাভাবিক অবস্থাকে আকারে প্রভাবিত করে। আর এটাই চর্ম রোগ। চর্মরোগ ছোট বড় সকল বয়সের মানুষের হয়ে থাকে।

এ রোগের সাথে আমরা সকলে কমবেশি পরিচিত। এই রোগ হলে ভুক্তভোগী রোগীরা খুব অস্বস্তি বোধ করে। চর্মরোগ শরীরের বিভিন্ন অংশে অথবা পুরো শরীরে হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের চিকিৎসা না করলে এই রোগটি মারাত্মক আকার ধারণ করে জীবন হুমকির দিকে ঠেলে দেয়। চর্মরোগ একেক জনের একেক রকমের হয়ে থাকে। 

কারো কারো সমস্ত শরীর চুলকায় এবং জ্বালাপোড়া করে আবার কারো ক্ষেত্রে হাত-পা ফুলে যায়। চর্মরোগ সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়া ও ধুলাবালির জন্য হয়ে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় চর্ম রোগের চিকিৎসা না করলে ধীরে ধীরে এই রোগটি বিস্তার লাভ করে। ফলে এই রোগটি থেকে সুস্থতা লাভ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়।

অনেকে চর্ম রোগের জন্য বিভিন্ন রকম ওষুধ সেবন করে। ওষুধ সেবনের ফলে চরম রোগ ক্ষণিকের জন্য ভালো হলেও পরবর্তীতে আবার শরীরে বিভিন্ন অংশে চর্মরোগ দেখা দেয়। তাই চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার করে ঘরোয়া পদ্ধতিতে সহজে এই রোগ দূর করা সম্ভব। নিমের পাতায় রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি উপাদান যা চর্মরোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।

আপনি যদি চর্মরোগে নিমপাতার ব্যবহার অর্থাৎ নিম পাতার রস সেবন করার অভ্যাস করেন। তাহলে আপনার শরীর থেকে চর্মরোগকে নির্মূল হবে। প্রাচীনকাল থেকেই চর্মরোগের জন্য নিম পাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। এই রোগে নিম পাতার ব্যবহার খুব প্রচলিত। আপনার নিজের অথবা আপনার পরিবারে কারোও যদি চর্মরোগ হয়ে থাকে।
তবে চরমরোগ দূর করতে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য বেশ কয়েকটা নিমপাতা নিয়ে সেগুলো পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর পাতাগুলোকে ভাটাতে পিষে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এবং সেই নিম পাতার পেস্ট শরীরে যে স্থানে চর্মরোগ হয়েছে সেখানে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। 

এভাবে সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন নিম পাতার পেস্ট চর্মরোগে আক্রান্ত স্থানে লাগালে সহজে চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিম পাতার পেস্ট চর্ম রোগে আক্রান্ত স্থানে লাগানো ছাড়াও আপনি চাইলে নিম পাতার জুস করে প্রতিদিন সকালে বাঁশি পেটে পান করতে পারেন। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন সকালে বাসি পেটে নিমপাতার জুস খেলে শরীরের ভিতর আস্তে আস্তে থেকে চর্মরোগ দূর হয়ে যাবে।

চর্মরোগের ছবি





চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার

আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে নিম পাতার ঔষধি গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই নিম পাতা বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও অ্যালার্জি ও চর্মরোগে নিম পাতা ব্যবহারের সাথে সাথে ত্বক ও চুলের যত্নেও নিম পাতার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। চুলের যত্নে নিমপাতা ব্যবহারের ফলে একটি উপকার নয় একসাথে অনেকগুলো উপকার পাওয়া যায়। তাহলে চলুন সুপ্রিয় পাঠক চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করতে হয় তা জেনে নিন।

খুশকি দূর করতে নিম পাতা ব্যবহার

চুলের যত্নের তথা খুশকি দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার করা হয়। চুলের সৌন্দর্য নষ্ট এবং অতিরিক্ত চুল পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ খুশকি। এই খুশকি জনিত সমস্যা দূর করতে পারলে সহজেই চুলের বেশিরভাগ সমস্যাগুলো সমাধান করা সম্ভব। নিম পাতাতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান রয়েছে যা মাথা ত্বকের জন্য খুব উপকারী। 

তাই মাথার খুশকি দূর করতে নিমের পাতা পাঠাতে বেটে পেস তৈরি করতে হবে। এরপর নিম পাতার পেস্টে অল্প পরিমাণ পানি মিশিয়ে হালকা করে সমস্ত চুলে ভালোভাবে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর মাথা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে নিমপাতার পেস্ট বানিয়ে সপ্তাহে দুইবার মাথায় ব্যবহার করলে সহজে খুশকি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

উকুন তাড়াতে নিম পাতার ব্যবহার


উকুনের সমস্যা একটি বিরক্তিকর সমস্যা। মাথার ত্বকে উকুন হলে খুব বিব্রতকর লাগে। বিশেষ করে মেয়েরা এ সমস্যাযর সম্মুখীন হন। উকুন একটি পরজীবী। উকুন মানুষের মাথার ত্বক থেকে রক্ত খেয়ে জীবনধারণ করে। এর ফলে মাথা ত্বকে খাবা ক্ষত সৃষ্টি হয়। সেই সাথে মাথা খুব চুলকায়। এই উকুনের কারণে চুলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়। 

অনেকে মাথার উকুন দূর করার জন্য ইংলিশ উকুননাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করে। কিন্তু এই শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চিরতরে উকুন নির্মূল করা সম্ভব হয় না। এই সমস্যায় নিম পাতার ব্যবহার সবচেয়ে কার্যকরী। মাথার ত্বক ও চুল থেকে উকুন দূর করতে চাইলে একটি পাত্রে আধা কাপ নারিকেল তেলে ২০ থেকে ২৫ টি নিমপাতা নিতে হবে। 

এরপর নারিকেল তেল ও নিমপাতা একসাথে হালকা আচে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এরপর তেল থেকে নিমপাতা ছেঁকে আলাদা করে তেল টুকু একটি বোতলে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতিদিন রাতে ঘুমোনোর আগে নিমপাতা তেল ভালোভাবে মাথার ত্বকে ও চুলে মাসাজ করে ঘুমিয়ে যেতে হবে। পরের দিন সকালে মাথা ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন নিম পাতা তেল ব্যবহার করলে উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

চুলের বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহার

চুলের যত্ন করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সে পুরুষ হোক কিংবা মহিলা চুলের যত্ন নিতে ভুলেন না। চুলের যত্নে তথা চুলের বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সঠিক খাদ্যাভাসের পাশাপাশি চুলের সঠিকভাবে যত্ন নিলে চুলের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হয়ে থাকে। 

তাই প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহার খুব ফলদায়ক। তাই আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের বৃদ্ধিতে নিমপাতার ব্যবহার করতে চান। তাহলে আমার এ প্রতিবেদনটি অনুসরণ করুন। চুলের বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহারের জন্য প্রথমে আপনাকে নিতে হবে আধা থেকে এক কাপ নারিকেল তেল। 
এবং সেখানে মেশাতে হবে এক চা চামচ মেথি ও এক চা চামচ অয়েল তেল। সেখানে কিছু পরিমাণ নিমপাতা দিয়ে একসাথে কিছুক্ষণ জাল দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। এরপর তেল থেকে মেথি ও নিম পাতা ছেঁকে আলাদা করে নিতে হবে। তারপর তৈরিকৃত তেলটি একটি বোতল অথবা পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে। 

সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন তৈরিকৃত তেল দিয়ে মাথায় ভালোভাবে মাসাজ করে কিছুক্ষণ রেখে পরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে চুলের ভিত্তিতে নিমপাতার ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায়।

তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার

তৈলাক্ত তাকে নিম পাতার ব্যবহার যে কতটা উপকারিতা অনেকেরই জানা। তৈলাক্ত ত্বককে নিম পাতার ব্যবহার বহুল পুরনো। নিম পাতা তৈলাক্ত ত্বকে তৈলাক্ত দূর করে তাকে ভালো রাখে এবং ত্বকে থাকা বিভিন্ন রোগ জীবাণু সহজে দূর করে। একই সাথে ত্বকে ফিরিয়ে আনে উজ্জ্বলতা ও মসৃণ ভাব।

তাই তৈলাক্ত তাকে নিমপাতা শুধু ব্যবহার করলে হবে না এর সঠিক পদ্ধতি ও উপায়টি জানতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতার ব্যবহার সকল ঋতুতে কমবেশি করা যায়। সুপ্রিয় পাঠক মহোদয়, তাহলে এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে জেনে নিন তৈলাক্ত ত্বকে নিম পাতা ব্যবহার কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে।

তোকে তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য নিম পাতার ফেসপ্যাক তৈরি করতে হবে। এর জন্য নিমের পাতাকে প্রথমে শুকিয়ে নিতে হবে তারপর পাঠাতে বেটে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এরপর গুঁড়ো করা নিম পাতা নিতে হবে দুই টেবিল চামচ এবং সেখানে যোগ করতে হবে ২ টেবিল চামচ চন্দন পাউডার।

এরপর সেখানে সামান্য পরিমাণ পানি মিশিয়ে এক টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশাতে হবে। এরপর ফেসপ্যাক টি বানিয়ে সমস্ত মুখে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নিম পাতার ফেসপ্যাক ছাড়াও আপনি নিম পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে তারপর ফুটন্ত পানি যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে। 

তখন তৈলাক্ত মুখে ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে নিম পাতার ক্লিনজার তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহার করলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায। আপনি চাইলে তৈলাক্ত ত্বকে এই দুই পদ্ধতিরিতেই নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন। আশা করি প্রতিবেদনটি পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন তৈলাক্ত ত্বকে কিভাবে নিম পাতার ব্যবহার করা হয়।

নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

মন্তব্য

পাঠক, আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে আপনি জানতে পেরেছেন চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে। এতক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় ধরে আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পরে আপনি যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন।

তাহলে আর্টিকেলটি আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। আরো গুরুত্বপূর্ণ নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.sumonworld.com এ প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন। আপনি চাইলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্ট বক্সে লিখতে পারেন। ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url