হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা জেনে নিন
পাঠক, হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা জানার জন্য আপনি কি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করছেন? যদি খোঁজাখুঁজি করে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক ওয়েব সাইটে প্রবেশ করেছেন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে। আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নটির উত্তর জানতে আমার এই আর্টিকেলটির সাথেই থাকুন।
হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা অনেক। প্রাচীনকাল থেকে লজ্জাবতী গাছের শিকড় বিভিন্ন রকম রোগ নিরাময়ের জন্য আয়ুর্বেদিক ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করার চেষ্টা করেছি হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে বিস্তারিত আলোচনার সাথে থাকুন।
আরম্ভ
হাতিশুর নামটি শুনলে অন্যরকম মনে হয়। এই উদ্ভিদে ইনডিসিন, পাইরোলিজিডিন এলকালয়েড্স ও হেলিওট্রিন নামক নানারকম জৈব উপদান রয়েছে। হাতিশুঁর Boraginaceae পরিবারের অর্ন্তভুক্ত। হাতিশুর গাছে সারা বছর ফুল ফোটে কিন্তু বর্ষাকালে বেশি ফুল দেখতে পাওয়া যায়। এই গাছটির শিকড়ের উপকারিতা অনেক।
আরও পড়ুনঃ লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা জেনে নিন
আর্টিকেলটির প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা। আরোও জানতে পারবেন হাতের শুর গাছ কি, হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম এবং হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায়। এ সকল বিষয়গুলো জানার জন্য আমার এই আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়ুন।
হাতির শুঁড় গাছ কি
হাতিশুর একপ্রকার একবর্ষজীবী আগাছা জাতীয় ছোট উদ্ভিদ। এই গাছটি হাতিশুঁড়ি, হাতিশুণ্ডি, হস্তীশুণ্ডী, শ্রীহস্তিনী, মহাশুণ্ডী ইত্যাদি নামেও বেশ পরিচিত। হাতির শুঁড় গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Heliotropium indicum। আর এই গাছটির ইংরেজি নাম Indian heliotrope, Indian Turnsole। হাতির শুঁড় গাছ ১৫ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এই গাছের পাতা ডিম্বাকার ও গাঢ সবুজ এবং পাতাগুলো অমসৃণ ও খসখসে।
আরও পড়ুনঃ এলোভেরা দিয়ে মেছতা দূর করার উপায়
হাতির শুঁড় গাছের কান্ডের শিশে লম্বা ও বাঁকানো পুষ্পদ জুড়ে ছোট ছোট সাদা ফুল ফোটে। বাঁকা পুষ্পদণ্ড দেখতে কিছুটা হাতির সুরের মতো বলে এর নাম হাতিশুর। এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার সমস্ত অংশ যেমন পাতা, কাণ্ড ও শিকড় ব্যবহৃত হয়। এই গুল্ম জাতীয় ছোট উদ্ভিদটি প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই গাছটির সহজলভ্য। সহজে হাতের কাছে পাওয়া যায়। তাই এই গাছের ব্যবহার ও ব্যাপক।
হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা
হাতিশপুর গাছের শিকড়ে উপকারিতা অনেক। প্রাচীনকাল থেকেই এই গাছের শিকড় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। অনেকেই হাতিশুর কাছে শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না। সে সফল ব্যক্তিদের কথা বিবেচনা করে আমার আজকের এই প্রতিবেদনটিতে আমি আলোচনা করতে চলেছি হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা। সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী চলুন জেনে নিন হাতিশুর কাছে শিকড়ে উপকারিতা গুলো
ছত্রাক জনিত সংক্রমনেঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যাদের শরীরে ছত্রাক জনিত সংক্রমনের কারণে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাল চাকা চাকা দাগ দেখা দেয়। শরীরে এই চাকা চাকা দাগ দূর করতে হাতিশুর গাছের শেকর নিয়ে পিষে রস বানিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে ছত্রাক জনিত সংক্রমণ ঐটা কমে যায়।
আরও পড়ুনঃ চর্মরোগে নিম পাতার ব্যভার জেনে নিন
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতেঃ যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে দীর্ঘদিন ধরে হাতিশুর গাছের শিকড় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যাদের বিভিন্ন রকম জনসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তারা হাতিশুর গাছের শিকড় সেবন করতে পারেন। যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে ও যৌন সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি হাতিশুর নিয়ে সেখানে কিছুতা মধু মিশিয়ে চিবিয়ে রস পান করুন। দেখবেন আপনার যৌন শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন রকম যৌন সমস্যা দূর হবে ইনশাআল্লাহ।
শরীরে আঘাতে ফুলে গেলেঃ বিভিন্ন রকম খেলাধুলা, দৌড়াদৌড়ি ও ও বিভিন্ন রকম কাজ কর্মের মাধ্যমে শরীরের কথা আঘাত পেলে ফুলে যায়। শরীরে এই ফোলা ভাব দূর করতে হাতে সুদ আছে শিকড় খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। আঘাতের কারণে শরীরের কোন অংশ ফুলে গেলে ফোলা অংশে হাতিশুর গাছের শিকড় বা পাতা বেটে ব্যবহার করলে কলা ভাব দূর হয়।
জ্বর ও সর্দি কাশিতেঃ জ্বর ও সর্দি কাশিত নিরাময়ে হাতিশুর গাছের শিকড় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই জ্বর ও সর্দি কাশিত ঘরোয়া ভাবে দূর করতে হাতিশুর গাছের শিকড়ের মূল তুলে নিয়ে এসে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পরিষ্কার করা মূল পানিতে দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পানি হালকা কুসুম অবস্থায় পান করলে জ্বর ও সর্দি অনেকটা কমে যাবে।
দাঁত ও মাড়ির সমস্যাঃ অনেকে দাঁতের মাড়ি ফোলা সমস্যায় ভূগে থাকেন। দাঁতের মাড়ি বা গোড়া ফুলার কারনে প্রচন্ড ব্যথা হয় এবং অস্বস্তি লাগে। তাই যাদের দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন রকম সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য হাতিশুর গাছের শিকর খুব উপকারী। দাঁতের মাড়ি ফোলা সমস্যা দূর করতে হাতিশুর গাছের শিকড় চাবালে ব্যথা অনেকটা কমে যায় এবং দাঁতের মাড়ি ফলাও কমে।
চোখের সমস্যা দূর করতেঃ ধুলাবালি ও বিভিন্ন কারণে মাঝেমধ্যে চোখ টকটকে লাল হয়ে ওঠে। চোখের এই সমস্যাগুলো দূর করতে হাতিশুর গাছের শিকড় ব্যবহার করা হয়।
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম
আতিশুর গাছের শিকড় খেলে বিভিন্ন রকম অসুখ বিসুখ দূর হয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা জানেন না হাতিশুর গাছের শিকড় কিভাবে খেতে হয়। আপনি যদি ঘরোয়া ভাবে বিভিন্ন রকম অসুখ থেকে মুক্তি পেতে চান। তবে আপনাকে অবশ্যই হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে।
কেননা সঠিক নিয়মে এই গাছের শিকড় খেলে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি যদি যৌন রোগের সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলেও হাতে হাতিশুর গাছের শিকড় সেবন করতে পারেন।হাতিশুর গাছের শিকড় সাধারনত বেটে পেস্ট করে বা চিবিয়ে খাওয়া হয়। এই শিকড়ের উপকারিতা ভালোভাবে পেতে হলে সকালে খালি পেটে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
এজন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথমেই এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করতে হবে। এরপর হাতিশুর গাছের শিকড় বা মূল ২ ইঞ্চি থেকে ৩ ইঞ্চি কেটে নিয়ে তাতে মধু মিশিয়ে চিবিয়ে রস করে খেয়ে ফেলতে হবে। হাতিশুর গাছের শিকড় ও মধু চিবিয়ে খাওয়ার এক থেকে দেড় ঘন্টা পর অন্য ভারী খাবার খেতে হবে।
আপনার বাসায় মধু যদি না থাকে তবে শুধু হাতিশুর গাছের শিকড় চিপে রস করে খেলেও চলবে। আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে সকালে খালি পেটে বা বাসি পেটে এটি খেতে হবে। এভাবে এই গাছের শিকড় সেবন করলে বিভিন্ন রকম অসুখ-বিসুখ তো দূর হবে সাথে সাথে আপনার যৌন শক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায়
হাতিশুর গাছ কোথায় পাওয়া যায় এই প্রশ্নটা সবার মনে কম বেশি ঘোরাঘুরি করে। এই গাছটি পুরনো দালান ঘেঁষে কিংবা রাস্তার ধারে অন্য আগাছার মাঝে ঝোপঝাড়ে দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত যে সকল জায়গায় একটু জংলা অবস্থায় থাকে সেখানে এই গাছটিকে জন্মাতে দেখা যায়। হাতিশুর গাছটি মূলত এশিয়া মহাদেশের উদ্ভিদ। এই গাছটি এসে মহাদেশে প্রায় প্রতিটি দেশেই জঙ্গল ওঝোক ছাড়ে পাওয়া যায়।
হাতিশুর গাছের ছবি
মন্তব্য
পাঠক, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারী ও ধৈর্য ধরে পড়েছেন। পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে জানতে পেরেছেন লজ্জাবতী গাছের শিকড়ের উপকারিতা গুলো সম্পর্কে। আপনার যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে। তবে আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন।
এই রকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার www.sumonworld.com ওয়েবসাইটটি পরিদর্শন করুন। আপনি চাইলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আবারও দেখা হবে নতুন কোন এক আর্টিকেলের মাধ্যমে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভাল থাকুন এবং প্রিয়জনদের ভালবাসুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url