গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ৭টি উপকারিতা জনে নিন
সুপ্রিয় পাঠক, আপনি কি গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোজাখুজি করছেন। তাহলে বলবো আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। আমার আজকের এই আরর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
আমরা কমবেশি সবাই বিটরুটের তরকারির সাথে পরিচিত। বিটরুটের তরকারি আমাদের কম বেশি সকলেই খেতে খুব পছন্দ করি। আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ৭টি উপকারিতা। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ভূমিকা
বিটরুট প্রধানত শীতকালীন একটি সবজি। শীতকালিন সবজি হলেও বর্তমানে বিটরুট সারা বছর কম বেশি পাওয়া যায় স্থানীয় সবজির বাজার গুলোতে। এই সবজিটি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর। এই সবজিটি দেখতে ড্রাগন ফলের মত লাল টকটকে ও আকর্ষণীয়।
দেখতে লাল টকটকে ও আকর্ষণীয় হওয়ার কারণে এই সবজিটিকে অনেকে ফল ভেবে থাকেন। বিটরুট দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। তাই বিটরুটকে সুপার ফুড বলে আখ্যায়িত করা হয়।
এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা, বিটরুট এর পুষ্টিগুণ, বিটরুট খাওয়ার নিয়ম ও বিটরুট এর দাম কত এবং বিটরুট জুস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা
বিটরুট একটি পুষ্টি উপাদানের সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজিটি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এই সবজিটির নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের চাহিদা পূরণ হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে। তবে স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে গর্ভাবস্থায় বিটরুট বিশেষভাবে উপকারী।
বিটরুটের সবজিতে যেহেতু বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে তাই গর্ভাবস্থায় এই সবজি খেলে বিভিন্ন রকম উপকারিতা পাওয়া যায়। সুপ্রিয় পাঠক, তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি সে সম্পর্কে।
১। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ গর্ভকালীন সময়ে মেয়েদের বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। এ সকল জটিলতার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য অন্যতম। প্রায় অধিকাংশ গর্ভবতী মহিলা এই সমস্যায় ভুগেন। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো যন্ত্রণাদায়ক রোগ নির্মূলে বিটরুট সাহায্য করে। তাই এই অবস্থায় বিটরুট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
২। রক্তশূন্যতা দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। বিটরুটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাই নিয়মিত খেলে গর্ভবতী মহিলাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং রক্তশূন্যতা ঝুঁকি কমায়। তাই গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা দূর করতে নিয়মিত বিদ্যুৎ খাওয়ার অভ্যাস করুন।
৩। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বৃদ্ধি পায়। এই অবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে বিতর্ক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই গর্ভাবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিটরুট খাওয়া জরুরি।
৪। শরীরের শক্তি জোগায়ঃ বিটরুট শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিটরুটে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান ভরপুর রয়েছে তাই শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে শরীরকে সুস্থ সবল রাখে এবং শরীরের শক্তি জগিয়ে শরীরকে কর্মক্ষম রাখে। এছাড়াও শরীরকে সতেজ রাখে।
৫। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ বিটরুটে আঁশ রয়েছে। তাই বিটরুট আঁস যুক্ত খাবার হওয়ার কারণে খাদ্য হজম হতে সহায়তা করে। নিয়মিত বিটরুট খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় একই সাথে খাদ্য দ্রুত হজম হওয়ার কারণে কোষ্টকাঠিন্য বা পেটের বিভিন্ন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৬। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ বিটরুট দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিটরুট খেলে শুধু শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পায় না একই সাথে এটি চোখের জন্য বেশ উপকারী। বর্তমান সময়ে ছোট-বড় সকলের দৃষ্টিশক্তি জনিত সমস্যা রয়েছে। বিটরুট দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর করে গর্ভবতী মহিলাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুব কার্যকরী।
৭। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের উচ্চ রক্তচাপের মত সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় বিভিন্ন রকম খাওয়া-দাওয়া ফলে রক্তের শর্করার পরিমাণ দিতে পারে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ হয় এবং সেখান থেকে বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতার কিছু হয়। তাই গর্ভাবস্থায় যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত বিটরুটে সবজি খেতে পারেন। বিটরু্টের সবজি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সহায়তা করে।
বিটরুট এর পুষ্টিগুণ
বিটরুট দেখতে যেমন আকর্ষণীয় ঠিক তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। বিটরুটের সবজি দেখতে যেমন লোভনীয় খেতে তেমন খুব সুস্বাদু। ভিটামিন ও খনিজ উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি। প্রায় ১ পরিমাণ কাপ বিটরুটে রয়েছে আয়রন, জিঙ্ক, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপারের, ম্যাঙ্গানিজ, ফোলেট, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এছাড়াও রয়েছে-
- ৪৩ ক্যালোরি
- ৮৮ শতাংশ পানি
- ১.৬ গ্রাম প্রোটিন
- ৯.৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
- ৬.৮ গ্রাম চিনি
- ২.৮ গ্রাম ফাইবার ও
- ০.২ গ্রাম ফ্যাট
বিটরুট খাওয়ার নিয়ম
বিটরুট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেক পাঠক জানতে চান। তাই যে সকল পাঠক বিটরুট খাওয়ার নিয়ম জানতে চান তাদের জন্য আমার এই প্রতিবেদনটি সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। আসলে বিটরুট খাওয়ার তেমন বাধা ধরা নিয়ম নাই বললেই চলে। বিটরুট বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়।
সাধারণত বিটরুট পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে সরাসরি পিস বা স্লাইড করে কেটে খাওয়া হয়। অনেকে আবার এটি সবজির মত রান্না করে খেয়ে থাকেন। কেউ কেউ ভাতের সাথে সালাদ হিসেবেও খায়। আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা বিটরুটের রস পানীয় খান।
বিটরুট বা বিটরুটের রসদিনে যে কোন সময় খাওয়া যায় এর জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় বা নিয়ম নাই। কেননা বিটরুট খাওয়া শোয়রের জন্য বেশি উপকারী। তার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় বিটরুট রাখলে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি মিলবে।
বিটরুট এর দাম কত
বিটরুট একটি মৌসুমীর সবজি। সাধারণত শীতকালে পুষ্টিগুনে ভরপুর এই সবজিটি পাওয়া যায়। এই সবজিটির মৌসুমে এটি প্রতি কেজি প্রায় ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। তবে বাজারে চাহিদার উপর ভিত্তি করে এবং স্থানভেদে এই সবজিটির দাম কম বেশি হতে পারে।
বর্তমান সময়ে এই সবজিটির চাহিদা যেহেতু ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এর উৎপাদনও বাড়ছে এবং মানুষের ক্রয় ক্ষমতার সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। এই সবজি সহজলভ্য এবং দামেও মোটামুটি কম। তাই সকলের কাছে এই সবজিটি জনপ্রিয়তা অর্জন করছে।
বিটরুটের সবজি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়। ঠিক তেমনি অন্যান্য সবজির সাথে এটি মিশিয়ে রান্না করলে সেই রান্না করা সবজিটিও দেখতে যেমন আকর্ষণীয় হয় খেতেও তেমন সুস্বাদু হয়। তবে বলে রাখা ভালো বছরের অন্যান্য সময় এই সবজিটির দাম প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠানামা করে থাকে।
বিটরুট জুস খাওয়ার নিয়ম
শেষ কথা
পাঠক, আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে আপনারা জানতে পেরেছেন গর্ভাবস্থায় বিটরুট খাওয়ার ৭টি উপকারিতা সম্পর্কে। এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ। এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন।
তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনারা আপনাদের প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। আরো গুরুত্বপূর্ণ নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.sumonworld.com এ প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন। আপনারা চাইলে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url