গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি?
পাঠক, গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি? এই বিষয়ে জানার জন্য আপনি কি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করছেন? যদি খোঁজাখুঁজি করে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক ওয়েব সাইটে প্রবেশ করেছেন। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি এ সম্পর্কে।
আমরা কমবেশি সবাই ইসবগুলের ভুসি সাথে পরিচিত। ইসবগুলের ভুসি আমরা কম বেশি সকলেই খেয়ে থাকি। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি? এ সম্পর্কে জানার জন্য আমার আজকের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে আর্টিকেলটি সাথেই থাকুন।
ভূমিকা
ইসবগুলের ভুসি সাধারণত এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার যা সাইলিয়াম (প্ল্যান্টাগো ওভাটা) বীজের খোসা। যা সাধারণত রেচন বা লেক্সোটিক হিসেবে পরিচিত। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে ইসবগুলের ভুষি মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিবিদদের মতে খাওয়া ঠিক পূর্বে ইসুব করে ভুসি পানিতে মিশে খাওয়া উচিত।
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি? আরোও জানতে পারবেন ইসবগুলের পুষ্টি উপাদান ও গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করি সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লাগবে। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় চাওয়া যাক।
ইসবগুলের পুষ্টি উপাদান
ইসবগুলের ভূসিতে বহু পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। বিভিন্ন রকম রোগ ব্যাধি নিরাময়ে যেমনঃ মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ, হাট বা হৃদপিণ্ড এবং অগ্নাশয় সুস্থ রাখতে ইসবগুলের ভুসির ভূমিকা অপরিসীম। তাই আমাদের সকলের ইসবগুলের ভুসির পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানা দরকার। কেননা এই সকল পুষ্টি উপাদান মানব শরীরের বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে। ১ টেবিল চা চামচ ইসবগুলের ভুসিতে থাকে-
- ৫৩ শতাংশ ক্যালোরি
- ০০ শতাংশ ফ্যাট
- ১৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম
- ১৫ গ্রাম শর্করা
- ৩০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম
- ০.৯ মিলিগ্রাম আয়রন।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি
আমাদের মাঝে এমন অনেকে আছেন যাদের মধ্যে প্রশ্ন থাকে যে গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি? উত্তর জানার পূর্বে আমাদের সকলের আগে জেনে নিতে হবে গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়াটা কতটা নিরাপদ। সুপ্রিয় পাঠক তাহলে জেনে নিন আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের উত্তরটি।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং খাওয়ার যোগ্য। ইসবগুলের ভুসি রেচন হিসেবে কাজ করে অর্থাৎ আমরা যে সকল খাবারগুলো খায় সেগুলো পরিপাক ও হজমে সাহায্য করে। গর্ভ অবস্থায় কমবেশি সকল মহিলারা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভুগে থাকেন।
তাই গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য মত যন্ত্রণাদায়ক রোগ থেকে মুক্তি পেতে সবচেয়ে কার্যকরী উপাদান হিসেবে ইসবগুলের ভুসির ভূমিকা, অপরিসীম। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ভাবে প্রতিদিন পরিমাণ মতো ইসবগুলের ভুষি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খেলে ফলাফল খুব ভালো পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা অনেক এবং সেটা হতে হবে পরিমাণ মতো। এমন অনেক মা-বোনেরা আছেন যারা গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে তেমন বিস্তারিতভাবে জানেন না। ফলে এই ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা থেকে তারা তারা সুফল লাভ করতে পারেন না।
তাই গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে এবং সঠিক পরিমাণে সঠিক নিয়মে তা খেতে হবে। সুপ্রিয় পাঠক, চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এবং সময় নষ্ট না করে গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার উপকারিতা ফুলো জেনে নিন।
প্রসাবে জ্বালাপোড়া রোধ করতেঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া প্রসাবে ইনফেকশন সহ বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা ও সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলাদের ইসবগুলের ভুসি খেলে প্রসাবের জ্বালাপোড়া হয়টা কম হয়।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলারা যদি নিয়মিত পরিমাণ মতো ইসবগুলের ভুসি খান তবে তাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। আর শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কম হলে হার্টের সমস্যা দূর হয় এবং হার্ট ভালো থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের একটি অতি পরিচিত রোগ বা সমস্যা হল কোষ্ঠকাঠিন্য। এই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় কমবেশি সকল গর্ভবতী মহিলারা ভোগেন। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত সবগুলো ভুষি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য মত কঠিন সমস্যা দূর হয়। কেননা ইসবগুলের ভুসি হিসেবে কাজ করে যা খাদ্য পরিপাক ও হজমে সাহায্য করে। তাই সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়।
গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করতেঃ গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি গ্যাস্টিকের মতো সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন রকম অতিরিক্ত তেলে ভাজা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে ইসুবগুলের ভুসি একটি উপকারী উপাদান। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিরাময় বা দূর করতে এবং পাকস্থলীতে খাদ্য হজমে সহায়তা করে ইসবগুলের ভুসি।
গর্ভের শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ গর্ভাবস্থায় গর্ভে থাকা শিশুর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশে জন্য একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হল ইসুবগুলের ভুসি। তাই গর্ভকালীন সময়ে গর্ভের শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য ইসবগুলের ভুসি উপকারিতা অনেক।
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি কিভাবে খেতে হয় অনেক গর্ভবতী মহিলায় তা জানেন না। সাধারণত সকল বয়সের মানুষ ইসবগুলের ভুষি বিভিন্নভাবে খেতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় এসব গুলের ভুষি খাওয়ার বিষয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। গর্ভবতী নারীরা চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইসবগুলের ভুসি গর্ভাবস্থায় খেতে পারেন।
কেননা গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি সঠিক নিয়মে খেলে এর উপকারিতা সঠিকভাবে পাওয়া যায়। আজকের এ প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে।
রাত্রে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে এক গ্লাস হালকা কুসুম পানিতে তে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে একটু নাড়ার পর ভুসিগুলো ভিজে যখন ফুলে ফুলে উঠবে তখন খেতে পারেন। আপনি চাইলে গর্ভাবস্থায়এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম দুধের সাথে এক থেকে দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে সেখানে একটু মিষ্টি ভাব নিয়ে আসার জন্য এক চা চামচ মধু দিতে পারেন।
এভাবে ইসবগুলের ভুসির সাথে মধু মিশেও আপনি খেতে পারেন। গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম মেনে গর্ভবতী মহিলারা যদি সকালে খালি পেটে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারে তাহলে সব থেকে বেশি কার্যকারিতা পাওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় চীনের পরিবর্তে আখের গুড় কিছুটা পরিমাণ নিয়ে ইসুবগুলের ভুষি পানিতে ভিজিয়ে রেখে খেলে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের প্রসাবে জ্বালাপোড়া সমস্যা অনেক কমে যায়। তবে প্রসবের জ্বালাপোড়া দূর হয়ে গেলে সবগুলো ভুষি হালকা কুসুম গরম পানি ও দুধের সাথে খাওয়াটায় সবচেয়ে ভালো উপায়।
শেষ কথা
সুপ্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলের একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আশা করি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জেনেছেন গর্ভাবস্থায় ইসবগুলের ভুসি খাওয়া যাবে কি এ সম্পর্কে তথ্যগুলো। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারাযদি সামান্য পরিমাণ উপকৃত হয়ে থাকেন।
তবে আমার এই ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত পরিদর্শন করুন এবং প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন। এ রকম আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। আবারও দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলের মাধ্যমে। ভালো থাকুন ও প্রিয়জনদের ভালোবাসুন। আল্লাহ হাফেজ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url