থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য আপনি কি অনুসন্ধান করছেন? যদি অনুসন্ধান করে থাকেন তাহলে আমার এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন  থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতাসম্পর্কে।
থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা
তাই সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনি যদি  থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে আমার এই পোস্টটি ধৈর্য ধরে সম্পূর্ণ পড়ুন। আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লাগবে। তাহলে চলুন সময় নষ্ট না করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

উপস্থাপনা

শরীর সুস্থ ও সবর রাখতে থানকুনি পাতার কোনো জুড়ি নেই। থানকুনি পাতা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ। যার উপকারিতার কথা অনেক। অতীতে থানকুনি পাতা প্রায় সকল বাড়ির আশেপাশে পাওয়া যেত। বর্তমানে থানকুনি পাতা সচরাচর তেমন চোখে পড়ে না। তবে অনেকেই এখন বাসা বাড়িতে টবে বা বাড়ির পাশে থাকা জায়গায় থানকুনি পাতা চাষ করছে।
 

থানকুনি পাতা চাষের প্রধান কারন হল এর হাজারো ঔষধি গুণ। আজকের এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চলেছি থানকুনি পাতার উপকারিতা অপকারিতা ও থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয় ও থানকুনি পাতার চা এবং থানকুনি পাতার ব্যবহৃত অংশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

থানকুনি পাতা

থানকুনির ইংরেজি নাম Indian Pennywort ও বৈজ্ঞানিক নাম Centella asiatica Urban। থানকুনি Apiaceae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এটি একটি বর্ষজীবী লতা জাতীয় উদ্ভিদ। বিভিন্ন অঞ্চল ভেদে থানকুনি বিভিন্ন নামে পরিচিত। অঞ্চলভেদে এই নামগুলো হল টেয়া,মানকি, তিতুরা ইত্যাদি। আয়ুর্বেদে ত্বাষ্ট্র নামে থানকুনি পরিচিত। আদ্র অঞ্চল গুলোতে থানকুনি ভালো জন্মে। 


সাধারণত বসন্তকালে থানকুনি লতায় ফুল আসে এবং গ্রীষ্মকালে এই গাছে ফল পাকে। প্রতিটি গিট থেকে শিকড় বের হয় এবং সেই শিকড়সহ লতা এনে আদ্র ভূমিতে লাগালে বা রোপন করলে থানকুনি আবার জন্মে। আমাদের দেশের মাটির থানকুনি র জন্মানোর জন্য বেশ উপযোগী। গ্রামাঞ্চলে যেখানে সেখানে থানকুনি জন্মাতে দেখতে পাওয়া যায়।

থানকুনি পাতার ১২টি উপকারিতা

প্রাচীনকাল থেকেই থানকুনি পাতা অতি পরিচিত একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ। গ্রামাঞ্চলে ক্ষেতের ধারে, জমির আইলে, পুকুর ও জলাশয়ের পাড়ে এ ভেষজ উদ্ভিদটি দেখতে পাওয়া যায়। থানকুনি পাতার রয়েছে বিভিন্ন রকম ভেষজ উপাদান। 


প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রকম রোগ সারাতে থানকুনি পাতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। থানকুনি পাতার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। আজকের এই আর্টিকেলটিতে থানকুনি পাতার উপকারিতার কথা তুলে ধরা হলো। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক থানকুনি পাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সম্পর্কে।

১। ক্ষত সারাতে সাহায্য করেঃ শরীরে কোন স্থান কেটে গেলে এবং সেখানে ক্ষত হলে সেই ক্ষত সারাতে থানকুনি পাতা সাহায্য করে। থানকুনির পাতাতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা খুব দ্রুত ক্ষত নিরাময়ে কার্যকরী। থানকুনি পাতা বেটে অথবা শুকনো থানকুনির র গুঁড়া ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষতস্থানের ব্যথা দূর হওয়ার সাথে সাথে রক্ত পড়াও বন্ধ হয়।

২। আলসার ও মূত্রনালীর সংক্রমণ দূর করেঃ পেটের যে কোন রকম সমস্যা দূর করতে এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধ করতে থানকুনির পাতা ভিষন কার্যকরী। থানকুনির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যর জন্য খুব দ্রুত পেটের আলসার সম্মত প্রণালী সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।


৩। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করেঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেকে আছেন যারা হজম সমস্যায় ভুগছেন। থানকুনি পাতায় থাকা বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য থানকুনি পাতার সাথে এক চিমটি লবণ দিয়ে রস করে খেতে হবে। 

এই রস শরীরের মধ্যে দিয়ে গিয়ে পাকস্থলীর এসিড ক্ষরণের মাত্রা বৃদ্ধি করবে। এর ফলে খুব অল্প সময়ে হজমের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। তাই নিয়মিত থানকুনি পাতার রস পান করুন এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি করে সুস্থ থাকুন। তাই হজম শক্তি ভালো রাখার জন্য থানকুনির পাতা খুব উপকারী।

৪। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য একটি অতি পরিচিত রোগ। এই রোগটি ছোট বড় সকল বয়সী মানুষের হয়ে থাকে। এ রোগটি খুব বেদনাদায়ক রোগ। যারা কোষ্ঠকাঠির মত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য থানকুনি পাতা এক বিশেষ মহা ঔষধ। নিয়মিত থানকুনি পাতার রস সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিনের মতো সমস্যা দূর হয়।

৫। অনিদ্রার সমস্যা দূর করেঃ রাতে ঠিকমত ঘুম না হওয়া অনেকেরই একটি বড় সমস্যা। রাত্রে পর্যাপ্ত না ঘুমানোর ফলে মানুষ শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর ফলে শরীরে দেখা দেয় ক্লান্তি ভাব এবং শরীর নিস্তেজ হওয়ার পাশাপাশি মাথা ব্যাথা শুরু হয়। এর ফলে কাজকর্মে মন বসে না। 

থানকুনি পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান। ফলে প্রতিদিন দুই থেকে চার চামচ থানকুনি পাতার রস ও মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের শরীরের নার্ভার সিস্টেম শান্ত থাকে এবং মানসিক চাপ হ্রাস পায়। এর ফলস্বরূপ ঘুম ভালো হয় এবং কাজকর্মে মন বসে।

৬। শরীরের রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখেঃ অনেকের থ্রম্বোসিস নামক এক ধরনের সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যার কারণে শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিকভাবে হয় না। এছাড়াও অনেকের বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতার কারণে শরীরের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে না। তাই প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় থানকুনি পাতার রস রাখলে রক্ত পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ থাকে এবং রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়।

৭। মানসিক অবসাদ দূর করেঃ যে সকল ব্যক্তি মানসিক অবসাদে ভোগেন তাদের অবসাদ দূর করার জন্য কার্যকর ভেষজ ওষুধ হল থানকুনি পাতার রস। থানকুনি পাতার রস স্ট্রেস হরমোন ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর ফলে মানসিক চাপ এবং অস্থিরতা প্রশমিত হয়।

৮। যৌন সমস্যা দূর করেঃ যৌন সমস্যা দূর করতে থানকুনি পাতার উপকারিতা অপরিসীম। নিয়মিত ভাবে থানকুনি পাতার রস খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই যে সকল পুরুষ যৌন অক্ষমতায় ভুগে থাকেন তাদের থানকুনি পাতার রস খাওয়া উচিত। এই সমস্যা দূর করতে এক গ্লাস দুধের সাথে থানকুনি পাতার রস মিশিয়ে খেলে যৌন অনীহা দূর হয়।

৯। ত্বকের বলিরেখা দূর করেঃ বায়ু দূষণ ও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির কারণে তাকে অকালে বুড়িয়ে যাওয়া ভাব বা বলি দেখা দেখা দেয়। তাই ত্বকের বলি রেখাএবং ত্বকে বুড়ো ভাব জোর করতে থানকুনি পাতার রস খুব কার্যকরী। এই পাতার রস ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ও ত্বকে পুষ্টি প্রদান করে। এর ফলে ত্বকের বলিরেখা রোধ করে। এবং একই সাথে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে ও ত্বকের বয়স্ক ভাব দূর হয়।

১০। মস্তিষ্ক বিকাশে সাহায্য করেঃ নিয়মিত থানকুনি পাতা খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পেন্টাসাক্লিক ট্রিটারপেনস নামক উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি করে। এর ফলে ব্রেনসিল চমৎকারভাবে উন্নত হয় এবং স্মৃতিশক্তি উন্নতির সাথে সাথে বুদ্ধির ধারাও বৃদ্ধি পায়। তাই মস্তিষ্কের বিকাশে থানকুনি পাতার ভূমিকা পালন করে।

১১। ঠান্ডা জনিত রোগ ব্যাধি দূর করেঃ ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রকম রোগব্যাধি দূর করতে থানকুনির পাতা খুব উপকারী। এই ঠান্ডা জনিত রোগ গুলো হল জ্বর, কাশি ও সর্দি। এই ঠান্ডা জনিত রোগ গুলো হওয়ার আশঙ্কা কমায় থানকুনি পাতা। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে থানকুনি পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে এ সকল রোগগুলো হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

১২। চুল পড়া রোধ করেঃ চুল পড়া রোধের জন্য যে সকল পণ্য বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় সেগুলোতে ধান করে নির্যাস ব্যবহার করা হয়। থানকুনির অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান মাথার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও এই পাতাতে রয়েছে ভিটামিন সি যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

এছাড়াও থানকুনির পাতা গ্যাস্টিকের মত বড় সমস্যা দূর করে। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। সুতরাং বলা যায় থানকুনি পাতা বহু রোগের মহা ঔষধ। তাই যে সকল ব্যক্তি বিভিন্ন রকম শারীরিক অসুস্থতায় ভুগে থাকেন তারা নিয়মিতভাবে থানকুনি পাতার রস সেবন করতে পারেন।

থানকুনি পাতার অপকারিতা

থানকুনি পাতার উপকারিতা কথা যেমন বলে শেষ করা যাবেনা। ঠিক তেমনি এর কিছু অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আমরা কম বেশি সকলেই জানি প্রতিটি জিনিসেরই উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। আজ এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আমি আলোচনা করতে চলেছি থানকুনি পাতার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। সেই অপকারিতা গুলো হলঃ

  • যে সকল ব্যক্তিদের এলার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে থানকুনি পাতা সেবন উপকারিতা পাশাপাশি অপকারিতাও হতে পারে। কারো কারো থানকুনি পাতা থেকে এলার্জি হতে পারে। এর ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি ও চুলকানির মত সমস্যা দেখা দেয়।
  • যাদের লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের থানকুনি পাতা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। লিভারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের থানকুনি পাতা সেবন করার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নেয়া উচিত।
  • গর্ভবতী মায়েদের থানকুনি পাতা সেবন করা পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ দিতে হবে। এছাড়াও অপারেশন হয়েছেন এমন রোগীদের থানকুনি পাতা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • থানকুনি পাতা বেশি পরিমাণে খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও বেশি পরিমাণে থানকুনি পাতা খেলে মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব সহ বমি হতে পারে।

থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয়

থানকুনি পাতা প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। বিভিন্ন গুনে ভরপুর থানকুনি পাতা। থানকুনি পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া হয়। বিশেষ করে ভর্তা, ভাজি, বড়া কিংবা সালাদ। সুপ্রিয় পাঠক, তাহলে চলুন থানকুনি পাতা কিভাবে খেতে হয় সে পদ্ধতি গুলো জেনে নিই।

*থানকুনি পাতার ভর্তা

উপকরনঃ থানকুনি পাতার ভর্তা বানানোর জন্য লাগবে ২৫০ গ্রাম থানকুনি পাতা। দুইটি পেঁয়াজকুচি, একটি রসুন কুচি, চার থেকে পাঁচটা কাঁচা মরিচ, সামান্য পরিমাণ আদা কচি স্বাদমতো লবণ ও সরিষার তেল পরিমাণমত।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে থানকুনি পাতা ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে কচি কচি করে কেটে নিতে হবে। এরপর পাটাই বা ব্লেন্ডারে, থানকুনি পাতা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, রসুন, আদা ও লবণ একসাথে মিশিয়ে পিষে নিতে হবে। তারপর সেখানে পরিমাণ মতো তেল দিয়ে ভালোভাবে নেড়ে হয়ে গেল থানকুনি পাতা ভর্তা।

*থানকুনি পাতা ভাজি

উপকরনঃ থানকুনি পাতার ভাজি করার জন্য লাগবে ২৫০ গ্রাম থানকুনি পাতা। দুইটি পেঁয়াজকুচি, একটি রসুন কুচি, চার থেকে পাঁচটা কাঁচা মরিচ, সামান্য পরিমাণ আদা কচি স্বাদমতো লবণ ও সরিষার বা সয়াবিনের তেল পরিমাণমত।

প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে থানকুনি পাতা পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কুচিকুচি করে কেটে নিতে হবে। এরপর চুলায় একটি করায় দিয়ে কড়াইয়ে থানকুনি পাতা পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ, পরিমাণ মতো লবণ ও সামান্য পরিমাণ পানি দিয়ে থানকুনি পাতা ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। 
সিদ্ধ হয়ে গেলে কড়াই থেকে থানকুনি পাতা নামিয়ে অন্য একটি পাত্রে রাখতে হবে। এরপর সে কড়াইয়ে পরিমাণ মতো সরিষা বা সয়াবিন তেল দিয়ে সেখানে রসুন কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। রসুন কুচি গুলো হালকা বাদামী হলে সেখানে সিদ্ধ করা থানকুনি পাতা ঢেলে দিতে হবে। 

এরপর পাঁচ থেকে ছয় মিনিট নেড়ে না মেনে নিতে হবে হয়ে গেল ধানকুনি পাতা বাজে। আপনি চাইলে থানকুনি পাতা ভাজিতে আলু অথবা চিংড়ি মাছ যোগ করতে পারে। এতে করে থানকুনি পাতা ভাজির স্বাদ দ্বিগুণ হয়।

*থানকুনি পাতার বড়া

উপকরণঃ থানকুনি পাতা ২০০ গ্রাম , পেঁয়াজ কুচি ২টি, রসুন কুচি ১টি, কাঁচামরিচ কুচি ২/৩টি, হলুদ ১ চামচ, মরিচ গুড়ো ১ চামচ, বেসন ১০০ গ্রাম, স্বাদমত লবণ ও তেল পরিমাণমত।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে থানকুনি পাতা পরিস্কার পানিতে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। এরপর থানকুনি পাতা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, হলুদ, বেসন ও স্বাগত লবণ একসাথে মিশিয়ে ভালোভাবে মাখাইয়ে নিতে হবে।

 তারপর একটি পাত্রে তেল গরম করে সেই তেলে উপকানকুনি পাতার সাথে মিশানো উপকরণগুলো দিয়ে বরাবর পিয়াজের মত বানিয়ে গরম তেলে ভেজে পরিবেশন করুন থানকুনি পাতার বড়া।

* থানকুনি পাতার জুস

উপকরণঃ থানকুনি পাতা ১০০ গ্রাম ও মধু এক চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে থানকুনি পাতা পরিস্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে কুচ কুচ করে কেটে সিলপাটা বা ব্লেন্ডারের পিছে পেস্ট করে নিতে হবে। তারপর ছাকনি দিয়ে পেস্ট করা পাতা ছেঁকে রস বের করতে হবে। এরপর সে রসের সাথে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে তৈরি করুন থানকুনি পাতার জুস। আপনারা সুস্থ-সবর রাখতে সাহায্য করবে।

থানকুনি পাতার চা

নবর্তমান সময়ে থানকুনি পাতার চা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাড়া ও মহল্লার চায়ের দোকানগুলোতে থানকুনি পাতার চা দেখতে পাওয়া যায়। থানকুনি পাতার চা যেহেতু শরীরের জন্য খুব উপকারী। তাই সকল বয়সের মানুষ থানকুনি পাতার চা খেতে চায় দোকানগুলোতে ভিড় করে।
কেননা থানকুনি পাতার চা পেটের বিভিন্ন রকম অসুখ যেমন বদহজম, ডায়রিয়া, আমাশয় ও পেটে ব্যথার মত সমস্যা সারিয়ে তোলে। এজন্য থানকুনি পাতার চা সকলের খুব পছন্দের। চায়ের দোকানগুলোতে থানকুনি পাতা চা খাওয়ার পাশাপাশি অনেকেই নিজ বাড়িতেও এই পাতার চা করে খেয়ে থাকেন। 

এই পাতার নির্যাস এতটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী যে শরীরের বিভিন্ন রকম চর্মরোগ সহ ত্বকের যত্নে খুব কার্যকরী। সুতরাং বিভিন্ন রকম শারীরিক ব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পেতে থানকুনি পাতার চা খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং সুস্থ থাকুন।

থানকুনি পাতার ব্যবহৃত অংশ

উপসংহার

প্রিয় পাঠাক বন্ধু, এতক্ষণ আমি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের জানাতে চেষ্টা করেছি থানকুনি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আশা করি উক্ত আলোচনা থেকে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। আপনারা হয়তোবা জানেন প্রতিটি জিনিসের যেমন উপকারিতা আছে ঠিক তার অপকারিতাও আছে। দুইটি দিক বিবেচনা করে আপনাদের থানকুনি পাতা খাওয় উচিত।

তাহলে এর ফলটিও ভালো পাবেন। আমার এই পোস্টট পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আর অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে ছড়িয়ে দিতে ভুলবেন না। আবারও দেখা হবে কোন এক নতুন পোষ্টের মাধ্যমে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে এখানে শেষ করলাম। আল্লাহ হাফেজ।।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url