জুমার নামাজ মোট কত রাকাত কি কি

জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি এ বিষয়ে আপনি কি জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করছেন? তাহলে আপনি সঠিক ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছেন। আজকের এই পোস্টটিতে জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি এই সমস্ত বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ পোস্টটি জুড়ে আলোচনা করা হয়েছে।
জুমার নামাজ মোট কত রাকাত কি কি
তাহলে চলুন আজকের এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য্যধরে পাড়ার মাধ্যমে জেনে নিন জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি। আশা করি এই এই পোস্টটি পড়তে আপনার ভালো লাগবে। চলুন সময় নষ্ট না করে জেনে নিন জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি সে সম্পর্কে।

ভূমিকা

জুমার দিন হল আল্লাহর দেয়া দিনগুলোর মধ্যে সবথেকে শ্রেষ্ঠতম দিন। ইসলামে জুমার দিনের মর্যাদার কথা বলে শেষ করা যাবে না। সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোর মধ্যে শুক্রবার কে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ তায়ালা। এজন্য শুক্রবার কে সপ্তাহের ঈদের দিন বলা হয়। 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, পৃথিবীর যত দিন সূর্য উদিত হবে তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হল শুক্রবার। এই দিনে অর্থাৎ শুক্রবারে হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং জান্নাতে প্রেরণ করা হয়েছিল। আবার এই দিনে হযরত আদম (আঃ) কে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছিল। 

আবার কিয়ামত সংঘটিত হবে এই শুক্রবারের দিনে। এজন্যই আল্লাহর কাছে জুমার দিন অধিক সম্মানিত। আজকের এই পোস্টটিতে আলোচনা করা হয়েছে জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি, জুম্মার নামাজ কি? ও জুমার নামাজ পড়ার নিয়ম এবং জুমার দিনের সূরা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।তাহলে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

জুমার নামাজ কি

জুমুআহ শব্দটি আরবী শব্দ। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় জুমা অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া ও কাতারবদ্ধ হওয়া। সপ্তাহের এই একটি নির্দিষ্ট দিন অর্থাৎ শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুমিন-মুসল্লিদের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে সকলে একত্রিত হয়ে জামাতের সাথে কাতারবদ্ধ হয়ে।

জোহর নামাজের পরিবর্তে যে সালাত আদায় করা হয় তাকেই জুমার সালাত বা নামাজ বলে। নামাজের সময় একই হলেও যোহরের সাথে জুমার নামাজের নিয়মগত বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। জুমার নামাজ একাকী আদায় করা যায় না।

জুমার নামাজ মোট কত রাকাত কি কি

যোহর নামাজের ওয়াক্ত যখন শুরু হয় ঠিক সে সময় জুমার নামাজ শুরু হয়। জুমার দিন গোসল ও ওযুর মাধ্যমে পাক পবিত্র হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পড়ে আজানের সাথে সাথে মসজিদে উপস্থিত থেকে নামাজ আদায় করার বিধান রয়েছে। অনেকে আমরা জুমার নামাজ আদায় করি কিন্তু জানিনা জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি? 

প্রাণপ্রিয় মুমিন ও মুসল্লীগণ আজকের এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। জুমার নামাজ মোট ১০ রাকাত। ৪ রাকাত কাবলার জুমাআ সুন্নত, ২ রাকাত ফরজ, ৪ রাকাত বাদাল জুমাআ সুন্নত।

জুমার নামাজ পড়ার নিয়ম

ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক, জুমার নামাজ দুই রাকাত ফরজ। এছাড়া জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজে সাথে চার রাকাত কাবলার জুম্মা এবং পরে চার রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নত নামাজ) আদায় করতে হয়। এছাড়াও মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত দুখলিল মসজিদ নামাজ আদায় করা সুন্নত। 

জোহরের নামাজের মত কোন ব্যাক্তি চাইলে এ সময় অতিরিক্ত নফল নামাজ আদায় করতে পারে। এই সকল নামাজ জুমার নামাজের অংশ নয় এবং এ সকল নফল নামাজকে জুমার অংশ হিসেবে পড়া হয় না। কোন ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছায় এই নফল নামাজগুলো পড়ে তবে সে পড়তে পারে। 

আর যদি না পড়ে তবে তা দোষের না। জুমার নামাজের জন্য সর্বপ্রথম শর্ত হলো এই নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা। জামাতের সাথে জুমার নামাজ আদায় করার বিধান রয়েছে। জুমার নামাজ একাকী আদায় করা যায় না। পবিত্র কোরআনে জুমার নামাজের সময় হলে সকল প্রকার কাজ বন্ধ করে নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়ার প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। 

তবে কোনো ব্যক্তি যদি যুক্তিসঙ্গত কারণবশত (যেমনঃ খুব অসুস্থ ব্যক্তি) জুমা আদায় করতে না পারে তবে তার ক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করার নিয়ম রয়েছে। তাছাড়া কিছু ক্ষেত্রে সুস্থ ব্যক্তির উপর, যেমন ভ্রমণকারী (মুসাফির) অবস্থায় জুমার আবশ্যকতা থাকে না এবং সেক্ষেত্রে জোহরের নামাজ আদায় করলে তা গ্রহণীয় হয়। তবে ভ্রমণকারী চাইলে জুমা আদায় করতে পারে।

চার রাকাত কাবলাল জুমার নিয়ত

বাংলা উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকাআতি ছালাতি কাব্‌লাল জুমুয়াতি, সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তয়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।

অর্থঃ আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে চার রাকায়াত কাবলাল জুম্মার সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবর।

জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন্‌ উসকিতা আন্‌ জিম্মাতী ফারদুজ্জহ্‌রি, বি-আদায়ি রাকয়াতাই ছালাতিল্‌ জুমুয়াতি, ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।

অর্থঃ আমার উপর জুহরের ফরজ নামাজ আদায়ের যে দায়িত্ব রয়েছে, আমি কেবলামুখী হয়ে, জুম্মার দুই রাকায়াত ফরজ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে তা পালনের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবর।

চার রাকাত বাদাল জুমার নিয়ত

বাংলা উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকাআতি ছালাতি বাদাল জুমুয়াতি, সুন্নাতি রাসূলিল্লাহি তয়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল্‌ ক্বাবাতিশ্‌ শারীফাতি আল্লাহু আক্‌বার।

অর্থঃ আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহ্‌র ওয়াস্তে চার রাকায়াত বাদাল জুম্মা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজের নিয়ত করলাম। আল্লাহু আকবর।জুমার নামাজ কি ওয়াজিব
জুমার দিনের আমল
পবিত্র এই দিনটিতে বিশেষ কিছু আমল রয়েছে। এই আমলগুলো

রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ১০৪৭)।

এমনিতেই তিরমিজি শরিফের হাদিস অনুযায়ী আমরা জানতে পারি, যে ব্যক্তি দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার উপর ১০টি রহমত নাযিল করবেন। সুতরাং আমাদের জুমার দিন অন্যান্য আমলের সাথে সাথে বেশি বেশি দরুদ পাঠ করতে হবে। জুমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা করে প্রতিটি মুসলিমের উচিত এই দিনটিকে কাজে লাগানো।

জুমার দিনের সূরা

জুমার দিনের বিভিন্ন রকম আমল রয়েছে এবং এগুলোর ফজিলতও অনেক। এই আমলগুলোর মধ্যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ আমল হচ্ছে জুমার দিনে বেশি বেশি সূরা তেলাওয়াত করা। এই সকল সূরা গুলার মধ্যে যে সুরাটি বেশি বেশি পাঠ বা তেলাওয়াত করা হয় সেগুলোর মধ্যে "সূরা কাহাফ" অন্যতম।

"সূরা কাহাফ" পবিত্র আল কোরআনের ১৫ তম পারার ১৮ তম সূরা এই সূরাটি। কোন ব্যক্তি যদি "সূরা কাহাফ" সম্পূর্ণ পাঠ করতে না পারে তবে সে যেন এই সূরার প্রথম এবং শেষ ১০ আয়াত তেলাওয়াত করে। কোন ব্যক্তি যদি "সূরা কাহাফ" এর প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করে। তবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে মুক্তি পাবে। 

এছাড়াও জুমার দিনে "সূরা কাহাফ" তেলাওয়াত করার অনেক অর্থ ফজিলত রয়েছে। যে ব্যক্তি জুম্মার দিনে এই সূরা পড়বে তার ঈমানের নূর এক জুমা হতে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। আবার কোন ব্যক্তি যদি জুমার রাত্রিতে "সূরা কাহাফ" পাঠ করে তবে তার জন্য সেই অবস্থানে জায়গা হতে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নূর হবে।

মন্তব্য

প্রাণপ্রিয় মুসল্লী ভাই ও বোনেরা, আশা করি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছন এবং পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি। এ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি যদি সামান্য উপকৃত হয়ে থাকেন তবে এই পোস্টটি আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন।

জুমার নামাজ মোট কত রাকাত ও কি কি তাদেরও জানার সুযোগ করে দিন এই পোস্টটি শেয়ারের মাধ্যমে। আরো নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন। আবারও দেখা হবে নতুন কোন এক আর্টিকেল এর মাধ্যমে। সুস্থ্য থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
(০৮৯)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url