ডিভোর্সের কারণ, ডিভোর্স থেকে বাচতে করণীয়।
ডিভোর্সের কারণ, ডিভোর্স থেকে বাচতে করণীয় কি এই বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে আজকের এই আর্টিকেলে। শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বে ডিভোর্স মহামারী আকার ধারণ করেছে। ধনী-গরীব ও নিম্নবিত্ত সকল পরিবারে ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে এবং বহু পরিবার তছনছ হচ্ছে।
আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন ডিভোর্সের কারণ, ডিভোর্স থেকে বাচতে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। আশা করি আজকালটি পড়তে আপনার ভালোই লাগবে।
ডিভোর্স কি?
ডিভোর্স হল বিবাহিত দম্পতির মধ্যে সম্পর্কের বিচ্ছেদ। এটি এক ধরনের আইনি প্রক্রিয়া যা তাদের বৈবাহিক বন্ধনকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে দেয়। এই প্রক্রিয়ায়, দম্পতি আদালতের মাধ্যমে তাদের বিবাহের বৈধতা বাতিল করে এবং আলাদা হয়ে যায়। ডিভোর্সের প্রক্রিয়া বিভিন্ন দেশে এবং আদালতের নিয়ম অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।
সাধারণত, ডিভোর্সের জন্য একজন পক্ষ আদালতে আবেদন করে এবং প্রমাণ করতে হয় যে বিবাহে কোনো গুরুতর সমস্যা রয়েছে যা সম্পর্ক বজায় রাখার পক্ষে অনুপযুক্ত। প্রক্রিয়াটি বেশ কিছু আইনি ধাপের মধ্যে দিয়ে যায়, যেমনঃ বিবাহের অবস্থা, সম্পত্তি ও দায়বদ্ধতা বিতরণ, এবং সন্তানদের অভিভাবকত্ব ইত্যাদি।
একবার ডিভোর্সের আবেদন মঞ্জুর হলে, দু’পক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহিত জীবন থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। ডিভোর্স প্রক্রিয়া মাঝে মাঝে মানসিক ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, এবং এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ডিভোর্সের কারণ
ডিভোর্সের কারণ নানা ধরনের হতে পারে এবং এসব কারণ দম্পতির সম্পর্কের পরিবর্তন বা মানসিক অস্থিরতার কারণে ঘটে। এখানে ডিভোর্সের কিছু সাধারণ কারণ দেওয়া হল:
১। অন বিরত সমস্যার উদ্ভব: ছোটখাটো সমস্যাগুলোর উপেক্ষা বা সমাধান না করলে তা বড় আকার ধারণ করতে পারে এবং সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা ও বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
২। বিশ্বাসের অভাব: একে অপরের প্রতি বিশ্বাসের অভাব বা বিশ্বাসভঙ্গ সম্পর্কের জন্য মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
৩। অর্থনৈতিক চাপ: অর্থনৈতিক সমস্যাগুলি সম্পর্কের মধ্যে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যা বিবাহিত জীবনে বিরোধের কারণ হতে পারে।
৪। মৌলিক অমিল: জীবনযাপনের জন্য মৌলিক মুল্যবোধ এবং উদ্দেশ্যের মধ্যে অমিল থাকা সম্পর্কের স্থায়ীত্বে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৫। বিকৃত যোগাযোগ: সম্পর্কের মধ্যে সঠিক যোগাযোগের অভাব বা বার বার ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে।
৬। অসন্তুষ্টি: একে অপরের সঙ্গে সন্তুষ্টির অভাব বা আশানুরূপ সঙ্গ পাওয়ার অভাব সম্পর্কের চাপে রাখতে পারে।
৭। অভিভাবকত্বের সমস্যা: সন্তানদের ক্ষেত্রে অভিভাবকত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব বা মতবিরোধ সম্পর্কের ক্ষেত্রে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।
৮। আসক্তি বা নির্যাতন: মাদকদ্রব্যের আসক্তি বা শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন সম্পর্কের মধ্যে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
৯। অসঙ্গতি: ব্যক্তিত্বের বৈচিত্র্য বা পারিবারিক পটভূমি সম্পর্কের মধ্যে অসঙ্গতি সৃষ্টি করতে পারে।
১০। অবৈধ সম্পর্ক: বিশ্বাসভঙ্গের ফলে সৃষ্ট অবৈধ সম্পর্ক বা পরকীয়া সম্পর্কের ভিতরে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
১১। সামাজিক চাপ: সামাজিক চাপ বা সাংস্কৃতিক প্রত্যাশা সম্পর্কের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
১২। শারীরিক অসুস্থতা: দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক অসুস্থতা সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
১৩। মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা: মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
১৪। অল্প বয়স: অনেক সময় অল্প বয়সে বিবাহ করা সম্পর্কের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে কারণ তখনকার যৌবন জীবন ও দায়িত্ববোধের মধ্যে পার্থক্য থাকে।
১৫। বিভিন্ন লক্ষ্য: জীবনের লক্ষ্য এবং আকাঙ্ক্ষার মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কের স্থায়ীত্বে প্রভাব ফেলতে পারে।
১৬। অযোগ্যতা: একজন সঙ্গী বিয়ের পর সম্পর্কের জন্য অপর্যাপ্ত বা অযোগ্য মনে হতে পারে।
১৭। উপলব্ধি পরিবর্তন: সময়ের সাথে সঙ্গীর সম্পর্কে উপলব্ধি পরিবর্তিত হতে পারে, যা সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
১৮। পরিবারের সদস্যদের চাপ: পারিবারিক সদস্যদের চাপ বা তাদের মতামত সম্পর্কের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
১৯। শারীরিক অক্ষমতা: শারীরিক অক্ষমতা বা যৌন অক্ষমতা সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা তৈরি করতে পারে। যা ডিভোর্সের মূল কারণ বলে বিবেচিত হয়।
২০। বিস্মৃতির অভাব: সম্পর্কের মধ্যে মূল্যবান বিষয়গুলি মনে না রাখা সম্পর্কের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
২১। যৌন অমিল: যৌন সম্পর্কের অমিল বা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
২২। আসক্তি বা অন্যত্র আগ্রহ: একজন সঙ্গীর অন্যত্র আগ্রহ বা আসক্তি সম্পর্কের ভিতরে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
২৩। পারিবারিক ইতিহাস: পূর্ববর্তী পারিবারিক ইতিহাস বা অভিজ্ঞতা সম্পর্কের জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
২৪। স্বাধীনতার অভাব: একে অপরের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা না থাকলে সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে।
২৫। ভিন্ন সংস্কৃতি: ভিন্ন সংস্কৃতি বা ধর্মীয় বিশ্বাস সম্পর্কের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
২৬। শিক্ষাগত অমিল: শিক্ষাগত স্তরের মধ্যে অমিল সম্পর্কের স্থায়ীত্বে প্রভাব ফেলতে পারে।
২৭। মানসিক চাপ: দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
২৮। অভিভাবকত্বের ত্রুটি: সন্তানের প্রতি অপর্যাপ্ত অভিভাবকত্ব সম্পর্কের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
২৯। অগ্রাধিকার পরিবর্তন: সম্পর্কের প্রাধান্য পরিবর্তন সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
৩০। স্বাস্থ্যসেবা সমস্যা: স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।
ডিভোর্সের ফলে কি কি অসুবিধা হয়?
ডিভোর্সের ফলে নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অসুবিধা গুলো হলো:
- মানসিক চাপ: ডিভোর্স মানসিকভাবে অত্যন্ত চাপপূর্ণ হতে পারে এবং হতাশা, উদ্বেগ, ও দুঃখ সৃষ্টি করতে পারে।
- অর্থনৈতিক সমস্যা: দুইটি পৃথক সংসার পরিচালনা করার জন্য অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি হতে পারে।
- সামাজিক অস্বস্তি: ডিভোর্সের কারণে সামাজিকভাবে অসম্মান বা অস্বস্তি হতে পারে, বিশেষ করে সমাজের কিছু অংশে।
- পরিবারের বিচ্ছিন্নতা: পরিবারে সদস্যদের বিচ্ছিন্নতা, যেমন সন্তানদের মধ্যে বিভক্তি ঘটতে পারে।
- সন্তানদের মানসিক প্রভাব: সন্তানেরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে এবং তাদের জীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
- স্বাস্থ্যগত সমস্যা: মানসিক চাপের কারণে শারীরিক স্বাস্থ্যও প্রভাবিত হতে পারে, যেমন ঘুমের সমস্যা বা হৃৎপিণ্ডের সমস্যা।
- বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি: একা থাকা বা সামাজিক সংযোগের অভাব অনুভূতির জন্ম দিতে পারে।
- ক্যারিয়ার প্রভাব: পারিবারিক সমস্যা ক্যারিয়ারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং কর্মক্ষমতা কমাতে পারে।
- আইনি জটিলতা: ডিভোর্স প্রক্রিয়ায় আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যা সময় ও অর্থের অপচয় ঘটায়।
- সম্পত্তির বিতরণ: সম্পত্তি ও দায়বদ্ধতার বিতরণে অসুবিধা হতে পারে, যা আইনি লড়াইয়ের সৃষ্টি করতে পারে।
- নতুন সম্পর্কের সমস্যা: নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে বা অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতে সমস্যা হতে পারে।
- সামাজিক সম্পর্কের পরিবর্তন: পুরনো বন্ধু ও আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক পরিবর্তিত হতে পারে বা বিচ্ছিন্নতা ঘটতে পারে।
- অভিভাবকত্বের চ্যালেঞ্জ: সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হতে পারে।
- অস্থিরতা: জীবনের অস্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যতের জন্য অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে।
- বিশ্বাসের অভাব: ভবিষ্যতে সম্পর্কের প্রতি বিশ্বাস ও বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব হতে পারে।
ডিভোর্স থেকে বাচতে করণীয়
ডিভোর্স থেকে বাঁচতে এবং সম্পর্ককে শক্তিশালী রাখতে কিছু পদক্ষেপ অনুসরণ করা যেতে পারে। নিম্নে দিবস থেকে বাঁচতে করণীয় কিছু উপায় আলোচনা করা হলো। এই সকল উপায় গুলো অবলম্বন করলে ডিভোর্স থেকে বাঁচা সম্ভব।
১। খোলামেলা যোগাযোগ: সমস্যা সমাধানের জন্য পারস্পরিক খোলামেলা ও সততার সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
২। সমস্যা সমাধানের দক্ষতা: সম্পর্কের সমস্যা সমাধানে দক্ষতা ও সহানুভূতি থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
৩। পরস্পরের প্রতি সম্মান: একে অপরের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা বজায় রাখা প্রয়োজন।
৪। সমঝোতা: সমস্যা সমাধানের জন্য পারস্পরিক সমঝোতা ও যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
৫। পরিবারের সাপোর্ট: পরিবারের সদস্যদের সাপোর্ট এবং পরামর্শ গ্রহণ করা সহায়ক হতে পারে।
৬। বিশ্বাস গড়ে তোলা: সম্পর্কের মধ্যে বিশ্বাস ও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখা উচিত।
৭। মানসিক সুস্থতা: মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া ও মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা উচিত।
৮। জীবনযাপন পরিকল্পনা: জীবনের লক্ষ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে পারস্পরিক আলোচনা করা এবং পরিকল্পনায় সামঞ্জস্য রাখা উচিত।
৯। প্রেমের প্রকাশ: একে অপরের প্রতি প্রেম ও যত্ন প্রকাশ করা সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
১০। সন্তানের যত্ন: সন্তানের প্রতি ভালবাসা ও যত্ন প্রদর্শন এবং তাদের মানসিক অবস্থার প্রতি যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
১১। পরিচর্যা ও সময়: সম্পর্কের জন্য সময় বরাদ্দ করা ও একসাথে গুণগত সময় কাটানো প্রয়োজন।
১২। আইনি পরামর্শ: প্রয়োজনীয় আইনি পরামর্শ গ্রহণ করা এবং সম্পর্কের আইনি বিষয়গুলো বুঝতে সহায়ক হতে পারে।
১৩। শ্রবণ ও সহানুভূতি: একে অপরের মতামত শোনা ও সহানুভূতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে সাহায্য করা।
১৪। সৃজনশীল সমাধান: সমস্যার সৃজনশীল ও কার্যকর সমাধানের চেষ্টা করা।
১৫। স্ব-উন্নয়ন: নিজেকে উন্নত করার চেষ্টা করা ও সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা।
ডিভোর্স ফলে কি কি সামাজিক অপরাধ সংঘটিত হয়?
ডিভোর্সের ফলে কিছু সামাজিক অপরাধ সংঘটিত হতে পারে। এই সকল সামাজিক অপরাধ গুলো দিন দিন বড় আকার ধারণ করে। আজকের এই প্রতিবেদন মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে ডিভোর্সের ফলে কি কি সামাজিক অপরাধ সংগঠিত হয় সে সম্পর্কে। সামাজিক অপরাধগুলো উল্লেখ করা হলো। যেমন:
- বিপথগমন: সম্পর্কের অস্থিরতা ও মানসিক চাপ পুরুষ ও মহিলাদের অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- গৃহহীনতা: ডিভোর্সের পর বাসস্থানের অভাবে গৃহহীনতা বা অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- সন্তান অবহেলা: সন্তানের যথাযথ অভিভাবকত্বের অভাব তাদের অপরাধমূলক আচরণের দিকে ধাবিত করতে পারে।
- অর্থনৈতিক অপরাধ: অর্থনৈতিক চাপের কারণে কিছু ব্যক্তি অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে।
- মাদকাসক্তি: মানসিক চাপের ফলে মাদকাসক্তির প্রবণতা বাড়তে পারে, যা সামাজিক অপরাধের কারণ হতে পারে।
- পরিবারিক সহিংসতা: সম্পর্কের উত্তেজনা ও বিরোধ পারিবারিক সহিংসতার কারণ হতে পারে।
- অপরাধমূলক সন্ত্রাস: সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং মানসিক চাপ কিছু ক্ষেত্রে অপরাধমূলক সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে পারে।
- দুর্বৃত্তায়ন: সামাজিক ও পারিবারিক অস্থিরতার কারণে কিছু ব্যক্তি দুর্বৃত্তায়ন করতে পারে।
- সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতার কারণে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়তে পারে।
- বিচ্ছিন্নতা: বিচ্ছিন্ন পরিবারে বেড়ে ওঠা শিশুদের মাঝে অপরাধ প্রবণতার হার বেশি হতে পারে।
ডিভোর্সে বাংলাদেশের আইন
বাংলাদেশে ডিভোর্সের আইন মূলত " মুসলিম পার্সোনাল ল থেকে", " হিন্দু আইন", এবং "বিশেষ বিবাহ আইন" অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এখানে কিছু ডিভোর্সে বাংলাদেশের আইনের মূল বিষয়গুলো উল্লেখ করা হলো:
মুসলিম পার্সোনাল ল (মুসলিম আইন): মুসলিম দম্পতিদের জন্য, ডিভোর্সের প্রক্রিয়া শরিয়া আইন অনুসারে পরিচালিত হয়। পুরুষদের জন্য একতরফা ডিভোর্স (তালাক) ঘোষণা করা সম্ভব, তবে নারীদের ক্ষেত্রে ফাসখ (বিচ্ছেদ) বা তালাকের জন্য আদালতে আবেদন করতে হয়।
হিন্দু আইন: হিন্দু দম্পতিদের জন্য, ডিভোর্সের প্রক্রিয়া "হিন্দু বিবাহ আইন ১৯৫৫" অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এই আইনে, ডিভোর্সের জন্য একটি পক্ষকে আদালতে আবেদন করতে হয় এবং আদালত সম্পর্কের অবস্থা ও কারণ বিবেচনা করে।
বিশেষ বিবাহ আইন: যারা আন্তঃধর্মীয় বিবাহ করেছে তাদের জন্য "বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৫৬" প্রয়োগ হয়। এই আইনে, ডিভোর্সের জন্য আদালতে আবেদন করতে হয় এবং বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সম্পত্তি ও দায়বদ্ধতা: ডিভোর্সের পর সম্পত্তি ও দায়বদ্ধতা ভাগ করার বিষয়ে আইনগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতে সিদ্ধান্ত আসে।
সন্তানদের অভিভাবকত্ব: সন্তানের অভিভাবকত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আদালত নেয়, যা সন্তানের মঙ্গলময় ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রাখে।
মোহর: মুসলিম বিবাহে মোহর সম্পর্কিত বিষয় ডিভোর্সের সময়ে বিবেচনায় রাখা হয়।
আইনি পরামর্শ: ডিভোর্স প্রক্রিয়ার সময় আইনি পরামর্শ গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়।
আদালতের নির্দেশ: আদালত ডিভোর্সের ক্ষেত্রে সংবিধিবদ্ধ নির্দেশনা প্রদান করে, যা সম্পর্কের সকল দিক বিবেচনায় নেয়।
মধ্যস্থতা: আদালত মাঝেমধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন বা সমঝোতার জন্য মধ্যস্থতা করতে পারে।
ফি ও খরচ: ডিভোর্স প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত আইনি ফি ও খরচ বোঝা ও প্রস্তুত থাকা জরুরি।
মন্তব্য
সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী, ডিভোর্সের কারণ, ও ডিভোর্স থেকে বাঁচতে করণীয় সম্পর্কে ইতিমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন। আরও জানতে পেরেছেন ডিভোর্সের ফলে কি কি অসুবিধা হয় ও ডিভোর্সের ফলে কি কি সামাজিক অপরাধ সংঘটিত হয় এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। এতক্ষণ এই আর্টিকেলটির সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার মতামত থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আরোও নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট প্রতিদিন পরিদর্শন করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url