পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় জানুন।
পাঠক, পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় জানার জন্য আপনি কি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোজাখুজি করছেন? তাহলে আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। আজকের এই প্রতিবেদনদেনটি মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়।
চলুন, এই প্রতিবেদনটি প্রথম থকে শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়। তাহলে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় এর মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
উপস্থাপনা। পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি?
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব (Male Infertility) হলো এমন একটি শারীরিক অবস্থা। যেখানে পুরুষ পর্যাপ্ত সক্ষমতা হারায় তার স্ত্রীকে গর্ভধারণ করাতে । অর্থাৎ, স্বাস্থ্যকর ও সক্রিয় বিজ্র পুরুষের বীর্য বা স্পার্ম থাকা সত্ত্বেও নারী সঙ্গীর গর্ভধারণে ব্যর্থ হতে পারে।
সাধারণত এক বছর ধরে নিয়মিত, সুরক্ষিত বিহীন শারীরিক মিলনের পরও যদি কোনো দম্পতি গর্ভধারণে সফল না হয়। তবে এ অবস্থাকে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। তাই পুরুষের বন্ধুত্ব দূর করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে অনুসন্ধান করেন। আমার অনেক পুরুষ আছেন যারা এ বিষয়টি নিয়ে অনেক লজ্জাবোধ করে।
যার কারণে তারা সকলের সাথে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বিব্রতবোধ করেন। সেই সকল পুরুষ ভাইদের জন্য আজকের এই প্রতিবেদনটি। পুরুষ বন্ধত্ব দূর করার উপায় জেনে আশা করি আপনি উপকৃত হবেন।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব (infertility) দূর করার জন্য বিভিন্ন উপায় আছে এবং এগুলো নির্ভর করে সমস্যার ধরন ও চিকিৎসা প্রয়োজনের উপর। এখানে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার কিছু প্রাকৃতিক ও চিকিৎসাগত উপায় ও পদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হলো-
১. খাদ্য ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন
- পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ: সুষম খাদ্য গ্রহণ যেমন প্রোটিন, ভিটামিন সি, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম ইত্যাদি, যা স্পার্ম উৎপাদনে সহায়ক।
- শরীরচর্চা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ: নিয়মিত ব্যায়াম, অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ: এগুলো শরীরের ক্ষতি করে এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়। ভাই ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে হবে
২. ভেষজ চিকিৎসা
- অশ্বগন্ধা: গবেষণায় দেখা গেছে, অশ্বগন্ধা স্পার্ম সংখ্যা ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।
- শতাবারী ও শিলাজিৎ: এগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক যৌন স্বাস্থ্য বৃদ্ধিকারক উপাদান আছে। যা স্পার্ম উৎপাদনে সহায়ক।
- মধু ও কালোজিরা: এগুলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
৩. চিকিৎসা এবং আধুনিক থেরাপি
- হরমোন চিকিৎসা: যদি হরমোনের ঘাটতি থাকে। তবে টেস্টোস্টেরন বা অন্যান্য হরমোন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে।
- কৃত্রিম গর্ভধারণ (IVF): জটিলতার ক্ষেত্রে আইভিএফ একটি উপযুক্ত পদ্ধতি হতে পারে।
- ইন্ট্রাসাইটোপ্লাসমিক স্পার্ম ইনজেকশন (ICSI): এটি একটি আধুনিক প্রক্রিয়া, যেখানে সরাসরি ডিম্বাণুতে স্পার্ম ইনজেক্ট করা হয়।
৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, ও পর্যাপ্ত ঘুম সহায়ক হতে পারে। মানসিক চাপ স্পার্মের মান এবং সংখ্যা কমাতে প্রভাব ফেলে।
এগুলো ছাড়াও, সঠিক চিকিৎসা নিতে হলে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় জানা যেমন জরুরী ঠিক তেমনি পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণগুলো জানা অত্যন্ত জরুরী। কেননা এই লক্ষণ গুলি সম্পর্কে ধারণা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করে পুরুষ বন্ধুত্ব দূর করা সম্ভব। বর্তমান সময়ে পুরুষ বন্ধুত্বের জন্য অনেক আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণগুলো প্রায়ই স্পষ্ট না হলেও কিছু সংকেত রয়েছে। যা এই সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। বন্ধ্যাত্বের সমস্যার ক্ষেত্রে পুরুষের শরীরে কিছু অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক লক্ষণ দেখা যেতে পারে।পুরুষের বন্ধুত্বের লক্ষণ গুলো হল-
১. স্পার্ম সংক্রান্ত সমস্যা
- স্পার্মের সংখ্যা কম হওয়া: স্বাভাবিকের চেয়ে কম স্পার্ম থাকলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস পেতে পারে।
- স্পার্মের গতি বা গতিশীলতা কম: যদি স্পার্ম ঠিকমতো সাঁতরাতে না পারে। তবে ডিম্বাণুতে পৌঁছানো কঠিন হয়।
- স্পার্মের গঠন বা আকৃতির সমস্যা: অনেক সময় স্পার্মের আকৃতিগত সমস্যা থাকলে তারা সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
২. যৌন সমস্যা
- লিবিডো বা যৌন আকাঙ্ক্ষা হ্রাস: টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির কারণে অনেক সময় যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যেতে পারে।
- ইরেকটাইল ডিসফাংশন: লিঙ্গের পর্যাপ্ত উত্থান না হওয়া, যা যৌনমিলনের জন্য প্রয়োজনীয়।
- ইজাকুলেশনের সমস্যাগুলো: দ্রুত বীর্যপাত (premature ejaculation) বা দেরিতে বীর্যপাত ইত্যাদি সমস্যা থাকতে পারে।
৩. হরমোনগত সমস্যা
- টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি: টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে গেলে শরীরে শক্তির অভাব, মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে।
- স্তনের বৃদ্ধি (গাইনোকোমাস্টিয়া): অনেক সময় হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে পুরুষদের স্তনের আকার বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪. অন্যান্য শারীরিক লক্ষণ
- টেস্টিকুলার পেইন বা ফোলাভাব: টেস্টিকেল বা অণ্ডকোষে ব্যথা বা ফোলাভাব দেখা যেতে পারে, যা অনেক সময় বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।
- চুল পড়া বা শরীরে লোম কমে যাওয়া: হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুল পড়া বা লোম কমে যেতে পারে।
৫. মানসিক চাপ ও ক্লান্তি
বন্ধ্যাত্বের কারণে অনেক পুরুষ মানসিক চাপে থাকেন, যা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে এবং অন্যান্য লক্ষণগুলোকেও বাড়িয়ে তুলতে পারে। এগুলো ছাড়াও, বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নির্ধারণের জন্য সঠিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমন স্পার্ম বিশ্লেষণ এবং হরমোন টেস্ট।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি রয়েছে। পুরুষের বন্ধুত্ব দূর করার উপায় এর অংশ হিসেবে এই পরীক্ষাগুলো করা অত্যন্ত জরুরী। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নির্দেশনায় করা হয়ে থাকে। যা নির্ধারণ করতে সাহায্য করে বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ। এখানে কিছু প্রধান পরীক্ষা ও সেগুলোর প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:
১. স্পার্ম বিশ্লেষণ (Semen Analysis): উদ্দেশ্য: স্পার্মের সংখ্যা, গঠন, গতি ও গুণগত মান যাচাই করা।প্রক্রিয়া: এক থেকে দুইবার স্পার্ম নমুনা নেওয়া হয়। নমুনাগুলি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষায় স্পার্মের সংখ্যা, গতিশীলতা (motility), আকৃতি (morphology) এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করা হয়।
২. হরমোন পরীক্ষা (Hormone Testing):উদ্দেশ্য: টেস্টোস্টেরন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের মাত্রা পরিমাপ করা। প্রক্রিয়া: সাধারণত রক্তের নমুনা নিয়ে এটি করা হয়। লুটিনাইজিং হরমোন (LH), ফোলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH), প্রোল্যাক্টিন ও টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এই পরীক্ষায় দেখা যায়, কোনো হরমোনের ভারসাম্যহীনতা রয়েছে কিনা।
৩. জেনেটিক টেস্ট (Genetic Testing): উদ্দেশ্য: জেনেটিক বা ক্রোমোসোমের অস্বাভাবিকতা রয়েছে কিনা তা নির্ধারণ করা। প্রক্রিয়া: বিশেষ ধরনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কিছু পুরুষের জেনেটিক সমস্যা থাকে, যেমন ক্লাইনেফেল্টার সিন্ড্রোম, যা বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।
৪. আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা (Ultrasound Imaging): উদ্দেশ্য: টেস্টিকেল ও অন্যান্য যৌন অঙ্গগুলির গঠন পরীক্ষা করা। প্রক্রিয়া: স্ক্রোটাম আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে টেস্টিকেল ও আশেপাশের টিস্যু পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে টেস্টিকেল বা অন্যান্য অঙ্গে কোনো সমস্যা আছে কিনা বোঝা যায়।
৫. টেস্টিকুলার বায়োপসি (Testicular Biopsy): উদ্দেশ্য: স্পার্ম উৎপাদন স্বাভাবিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করা। প্রক্রিয়া: টেস্টিকেল থেকে ছোট্ট একটি টিস্যু নমুনা নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত এই পরীক্ষা তখন করা হয়, যখন স্পার্মের সংখ্যা খুব কম বা নেই।
৬. অ্যান্টিস্পার্ম অ্যান্টিবডি টেস্ট (Antisperm Antibody Test): উদ্দেশ্য: শরীরে কোনো অ্যান্টিস্পার্ম অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে কিনা তা নির্ধারণ করা। প্রক্রিয়া: এই পরীক্ষায় দেখা হয়, শরীরের প্রতিরোধক ব্যবস্থায় স্পার্মকে শত্রু মনে করে কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি করছে কিনা, যা গর্ভধারণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
৭. ডিজিটাল রেক্টাল এক্সাম (DRE) ও প্রসটেট পরীক্ষা: উদ্দেশ্য: প্রস্টেট গ্রন্থি বা পার্শ্ববর্তী টিস্যুগুলির অস্বাভাবিকতা পরীক্ষা করা। প্রক্রিয়া: ডাক্তার প্রস্টেটের আকার, গঠন বা অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা তা নির্ধারণ করেন। প্রস্টেটের সমস্যা স্পার্মের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
৮. ইউরিন টেস্ট (Urine Test) পর ইজাকুলেশন: উদ্দেশ্য: স্পার্ম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যাচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করা। প্রক্রিয়া: ইজাকুলেশনের পরে মূত্রের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হয়, এতে স্পার্ম রয়েছে কিনা। এ ধরনের সমস্যা রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন নামেও পরিচিত।
এই পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে বন্ধ্যাত্বের কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়, যা চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের ঔষধ
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার জন্য কিছু ঔষধ রয়েছে, যা নির্দিষ্ট কারণের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। ডাক্তার সাধারণত রোগীর শারীরিক অবস্থা, হরমোনের মাত্রা এবং স্পার্মের সমস্যার ধরন অনুযায়ী ঔষধ নির্ধারণ করেন। এখানে কিছু সাধারণ ঔষধ ও তাদের কার্যকারিতা উল্লেখ করা হলো:
১. হরমোন থেরাপি:
- গোনাডোট্রপিন ইনজেকশন: যদি শরীরে টেস্টোস্টেরন উৎপাদন কম থাকে। তাহলে গোনাডোট্রপিন ইনজেকশন দেওয়া হয়। এটি স্পার্ম উৎপাদনে সহায়ক।
- ক্লোমিফেন সিট্রেট: এটি একটি ওষুধ যা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। সাধারণত ক্লোমিফেন খেলে হরমোনের ভারসাম্য উন্নত হয় এবং স্পার্মের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
- অ্যানাস্ট্রোজোল: এটি শরীরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমিয়ে টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
২. অ্যান্টিবায়োটিক: যদি কোনো সংক্রমণজনিত সমস্যা থাকে যা স্পার্মের গুণগত মান কমিয়ে দেয়, তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এটি টেস্টিকুলার ইনফেকশন বা প্রস্টেটের সংক্রমণ নিরাময়ে সহায়ক।
৩. অ্যান্টি-ইস্ট্রোজেন (Anti-estrogen) ঔষধ: লেট্রোজোল: এটি ইস্ট্রোজেন কমাতে এবং টেস্টোস্টেরন বাড়াতে সহায়ক। বিশেষ করে টেস্টোস্টেরনের ভারসাম্যহীনতার ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা হয়।
৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্টস: ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিঙ্ক এবং সেলেনিয়াম। এই ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ঔষধ বা সাপ্লিমেন্ট স্পার্মের মান ও গতিশীলতা উন্নত করতে সহায়ক।
এছাড়াও কোএনজাইম কিউ১০ একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা স্পার্মের কোষকে ফ্রি র্যাডিকেল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং স্পার্মের গুণগত মান বাড়ায়।
৫. ডপামিন অ্যাগোনিস্ট (Dopamine Agonists): ব্রোমোক্রিপটিন এবং কাবারগোলিন: প্রোল্যাক্টিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে, এটি বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে। এই ওষুধ প্রোল্যাক্টিন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
৬. প্রাকৃতিক ও ভেষজ উপাদান: অশ্বগন্ধা, শিলাজিৎ, এবং শতাবারী: এগুলো ভেষজ উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় যা প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। বিভিন্ন ভেষজ সাপ্লিমেন্ট স্পার্মের সংখ্যা ও গুণগত মান বাড়াতে সাহায্য করে।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার জন্য ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ সমস্যার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা ভিন্ন ভিন্ন হয়। এছাড়া, বিভিন্ন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পার। যা ডাক্তারের পর্যবেক্ষণ ছাড়া নেওয়া মোটেও উচিত নয়।
বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয়?
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্য কিছু ভিটামিনের অভাব প্রভাব ফেলতে পারে। মূলত, নিচে উল্লেখিত ভিটামিনগুলির অভাব পুরুষদের বন্ধ্যাত্বে ভূমিকা রাখতে পারে। পুরুষের বন্ধুত্ব দূর করার জন্য এ সকল ভিটামিন গুলো অত্যন্ত জরুরী। ভিটামিন গুলো হল-
ভিটামিন D: অভাবের প্রভাব: ভিটামিন D-এর অভাব পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমাতে পারে, যা স্পার্ম উৎপাদনকে প্রভাবিত করে। এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকেও প্রভাবিত করে, যা প্রজনন স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
ভিটামিন C: অভাবের প্রভাব: ভিটামিন C একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ফ্রি র্যাডিকেল ক্ষতির হাত থেকে স্পার্মকে রক্ষা করে। এর অভাব স্পার্মের গুণগত মান কমিয়ে দিতে পারে এবং বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ভিটামিন E: অভাবের প্রভাব: ভিটামিন E অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং স্পার্মের স্বাস্থ্য ও গতিশীলতা রক্ষা করে। এর অভাব স্পার্মের ক্ষতি করতে পারে এবং বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
ভিটামিন B১২: অভাবের প্রভাব: ভিটামিন B12 এর অভাব স্পার্ম উৎপাদনকে প্রভাবিত করতে পারে এবং পুরুষদের সাধারণ প্রজনন স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
জিঙ্ক: যদিও এটি একটি খনিজ, তবে জিঙ্কের অভাবও বন্ধ্যাত্বের সাথে জড়িত। এটি টেস্টোস্টেরন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্পার্মের গুণগত মান উন্নত করে।
সেলেনিয়াম: সেলেনিয়ামের অভাব স্পার্মের গুণগত মানকে প্রভাবিত করতে পারে এবং এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি কমাতে এবং প্রজনন স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। যাতে উপরোক্ত ভিটামিন এবং খনিজগুলোর সঠিক পরিমাণ পাওয়া যায়। যদি প্রয়োজন হয়, ডাক্তার বা পুষ্টিবিদের পরামর্শে সাপ্লিমেন্টও নেওয়া যেতে পারে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রাজশাহী
মন্তব্য।
পাঠক বন্ধুগন, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে আপনি জানতে পেরেছেন পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করুন।
কেননা আপনার শেয়ারের মাধ্যমে তারাও জানতে পারবে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় সম্পর্কে। আরও নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.sumonworld.com প্রতিদিন পরিদর্শন করুন। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভালো থাকবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url