আঁচিল দূর করার উপায় জানুন।
পাঠক, আপনি কি আচিলের সমস্যায় ভুগছেন? এবং আপনি কি শরীর থেকে আচিল দূর করতে চান? তাহলে আপনাকে এই ওয়েবসাইটে স্বাগতম। এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আচিল দূর করার উপায়।
অনেকেই আচিল দূর করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোজাখুজি করেন। কিন্তু সঠিক তথ্য পাই না। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন আচিল দূর করার উপায়। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হবেন।
উপস্থাপনা
আঁচিল হলো ত্বকের উপর তৈরি হওয়া ছোট, শক্ত এবং খসখসে একটি বৃদ্ধি। যা সাধারণত মানব প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) সংক্রমণের কারণে হয়। এই ভাইরাস ত্বকের কোষের বৃদ্ধি বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে আঁচিল সৃষ্টি হয়। আঁচিল বিভিন্ন আকার ও স্থানে হতে পারে, যেমন হাতে, পায়ে, মুখে, এমনকি শরীরের অন্যান্য অংশেও।
এগুলো সাধারণত বেদনাদায়ক নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি সংক্রমণ বা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঁচিল হলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি পড়তে হয়। নিম্নে আঁচিল দূর করার উপায় গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
আচিল দূর করার উপায়
আঁচিল নামক চর্মরোগটির সাথে আমরা কমবেশি সকলেই অনেক বেশি পরিচিত। কারো যদি শরীরের বিভিন্ন অংশে আঁচিল হয় এবং সঠিক সময় যদি এর চিকিৎসা না করা হয়। তবে সমস্ত শরীরে আঁচিল ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই এই আঁচিল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের সকলেরই আঁচিল দূর করার উপায় গুলো জানতে হবে। নিচে হাসিল দূর করার উপায় গুলো উল্লেখ করা হলো-
১. স্যালিসাইলিক অ্যাসিড: সালিসাইলিক অ্যাসিড প্রায়ই আচিল দূর করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি একটি অ্যাসিড যা আচিলের উপর প্রয়োগ করলে ধীরে ধীরে ত্বকের অতিরিক্ত কোষকে নরম করে এবং আচিলটি অদৃশ্য হতে সাহায্য করে।
এটি সাধারণত মলম বা তরল আকারে পাওয়া যায়। ব্যবহার: প্রতিদিন রাতে আচিলের উপর স্যালিসাইলিক অ্যাসিড লাগিয়ে সুরক্ষা প্যাঁচ দিয়ে রাখতে পারেন। কিছু সপ্তাহের মধ্যে আচিলটি ধীরে ধীরে কমে যাবে।
২. ক্রায়োথেরাপি (হিমিক্রমণ): ক্রায়োথেরাপি একটি চিকিৎসামূলক পদ্ধতি যেখানে আচিলের উপর তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করে তা ঠান্ডা করা হয়। এতে আচিলের কোষগুলো বরফ হয়ে মরে যায় এবং আচিলটি সরে যায়। এটি একটি সাধারণ পদ্ধতি যা ডাক্তারের অধীনে করা হয়।
৩. আপেল সিডার ভিনেগার: আপেল সিডার ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আচিলের উপর প্রয়োগ করলে তা শুকিয়ে যায় এবং ধীরে ধীরে দূর হতে সহায়ক। সেজা সাদা ভিনেগারও এই কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যবহার: তুলা বা প্যাডের মাধ্যমে ভিনেগার আচিলের উপর লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে রেখে দিন।
৪. ম্যালোলিক অ্যাসিড: এটি এক ধরনের অ্যাসিড যা আচিলের ওপর ব্যবহৃত হলে ত্বককে নরম করে এবং আচিলের পরিমাণ কমিয়ে আনে। বিশেষত, আপেল বা অন্যান্য ফলের নির্যাসে এটি পাওয়া যায়।
৫. ডাক্তারি চিকিৎসা: যদি আচিল গুলির মধ্যে কোনো পরিবর্তন ঘটে বা অনেক দিন ধরে যায়, তাহলে ডাক্তার বা ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তারা আপনাকে লেজার থেরাপি, ইলেকট্রোকিউটরি বা অন্যান্য শক্তিশালী চিকিৎসা পদ্ধতি প্রস্তাব করতে পারেন।
এছাড়া, আচিল গুলো কখনোই নিজে ছিঁড়বেন না, কারণ এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঘন ঘন হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন এবং আচিলের সাথে কোনও কিছুতে হাত দেবেন না। এই পদ্ধতিগুলি আচিলের ধরন এবং জায়গা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে, তাই প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আঁচিল দূর করার ক্রিম
আঁচিল দূর করার উপায় গুলো অবলম্বন করার পাশাপাশি আঁচিল দূর করতে আঁচিল দূর করার ক্রিম প্রয়োজন ব্যবহার করতে হবে। আঁচিল দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম এবং মলম পাওয়া যায়। যা চিকিৎসকরা বা ওষুধের দোকান থেকে কিনতে পারেন। নিচে কিছু পরিচিত এবং কার্যকরী আঁচিল দূর করার ক্রিমের নাম দেওয়য়া হলো-
১. ডারমোকল (Dermocol): এটি একটি স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম, যা আঁচিলের ওপর ব্যবহৃত হয়। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ত্বকের অতিরিক্ত কোষগুলো নরম করে এবং আঁচিলের আকার কমিয়ে আনে। এটি সহজে পাওয়া যায় এবং ব্যবহার সহজ।
২. ক্রাই-ফ্রি (Cry-Free): এই ক্রিমটি ক্রায়োথেরাপির মতো কার্যকরী, যেখানে আঁচিলের ওপর একটি ঠাণ্ডা প্রভাব তৈরি করা হয়। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশে আঁচিল দূর করতে সহায়তা করে এবং টিউব আকারে পাওয়া যায়।
৩. বেনজোক্লিন (Benzoclin): এটি একটি স্যালিসাইলিক অ্যাসিড এবং বেঞ্জোয়াইল পারঅক্সাইড মিশ্রিত ক্রিম, যা ত্বকের সমস্যা যেমন আঁচিল, পিম্পল বা ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে।
৪. কনডাইলক্স (Condylox): এটি এক ধরনের ক্রিম যা সাধারণত হারপিস সিমপ্লেক্স বা আঁচিলের জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে পডোফিলোটোক্সিন থাকে, যা আঁচিলের কোষগুলির বৃদ্ধি আটকায়।
৫. স্যালিসাইলিক অ্যাসিড মলম (Salicylic Acid Ointment): স্যালিসাইলিক অ্যাসিড অনেক ধরনের আঁচিল এবং ত্বকের সমস্যা দূর করতে কার্যকরী। এটি অ্যালকোহল, মিষ্টি তেল বা অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে মিশ্রিত হয়ে মলম আকারে পাওয়া যায়। এটি আঁচিলের উপর লাগানোর পর ধীরে ধীরে ত্বক থেকে আঁচিলের কোষগুলি মরে যায়।
ব্যবহারের পরামর্শ:
- খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করুন: ক্রিমটি সরাসরি আঁচিলের উপর লাগানোর আগে, খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করে পরীক্ষা করুন যেন কোনো অ্যালার্জি বা প্রতিক্রিয়া না হয়।
- প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করুন: এই ক্রিমগুলি অধিকাংশ সময় ধীরে ধীরে কাজ করে, তাই নিয়মিত এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
- ত্বক পরিষ্কার রাখুন: আঁচিলের জায়গাটি পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন, যাতে ক্রিমটি কার্যকরী হয়।
যদিও এই ক্রিমগুলি সাধারণত নিরাপদ, তবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষত যদি আঁচিলটি অনেক বড় বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
আঁচিল দূর করার দোয়া
আঁচিল দূর করার উপায় এই প্রতিবেদনটির এই অংশে আপনি জানতে পারবেন আঁচিল দূর করার দোয়া। আঁচিল দূর করার জন্য ইসলামিক দোয়া বা আমল সম্পর্কে কোন নির্দিষ্ট হাদিস বা কিতাবে বর্ণিত হয়নি।
তবে সাধারণভাবে শীফা (আরোগ্য) লাভের জন্য আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে দোয়া করা যেতে পারে। এখানে একটি সাধারণ দোয়া এবং আমলের প্রস্তাব দেওয়া হলো যা আল্লাহর সাহায্য কামনা করে:
১। দোয়া: "আল্লাহুম্মা ইন্নী আউজু বিখামিন শেররিহি ওয়া শেররিমাস।" (অর্থ: আল্লাহ, আমি তোমার কাছে শয়তানের ক্ষতি ও তার সাথে সম্পর্কিত সব ক্ষতির থেকে আশ্রয় চাই।)
এটি বিভিন্ন ত্বকজনিত রোগ বা আঁচিল থেকে মুক্তির জন্য পড়া যেতে পারে।
২। আমল: "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বারবার পড়ুন, এই শব্দগুলি তাওহিদের শক্তি প্রকাশ করে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা হয়। এছাড়া "কুল হুয়া আল্লাহু আহাদ" (সুরা ইখলাস) তিনটি, পাঁচটি বা আরও বেশি বার পড়ে আঁচিলের উপর ফুঁক দিলে আল্লাহর রহমত ও বরকত আশা করা যায়।
এছাড়া, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে প্রতিদিনের সাধারণ দোয়া ও তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে শরীরের সব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এটি মনে রাখতে হবে যে, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো চিকিৎসা প্রক্রিয়া বা দোয়া কার্যকর হওয়ার জন্য আল্লাহর ইচ্ছার ওপরই নির্ভরশীল। তাই অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য ও তার ইচ্ছা পেতে প্রার্থনা করুন।
আঁচিল দূর করার এলোপ্যাথিক ঔষধ
আঁচিল (wart) দূর করার জন্য বিভিন্ন এলোপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহৃত হয়। এগুলি সাধারণত ত্বকের সমস্যাগুলোর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত। কিছু পরিচিত এলোপ্যাথিক ঔষধের মধ্যেরয়েছে-
১. স্যালিসাইলিক অ্যাসিড (Salicylic Acid)
২. ক্রায়োথেরাপি (Cryotherapy)
৩. কনডাইলক্স (Condylox)
৪. ইমিউনোথেরাপি (Immunotherapy)
৫. ট্রাইক্রোলোসিক অ্যাসিড (Trichloroacetic Acid)
৬. লেজার থেরাপি (Laser Therapy)
এলোপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহারের আগে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষত যদি আঁচিলটি বড় হয়ে যায়, ব্যথা দেয় বা পরিবর্তন হতে থাকে। আঁচিলের চিকিৎসা শুরু করার পর নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে উপযুক্ত ফলাফল পাওয়া সম্ভব, তবে রোগটি দ্রুত সেরে যাবে এমন গ্যারান্টি নেই।
আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ
আঁচিল (wart) দূর করার জন্য হোমিওপ্যাথিতে কিছু কার্যকরী ঔষধ রয়েছে। তবে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সাধারণত ব্যক্তিগত উপসর্গ এবং অবস্থার ওপর নির্ভরশীল, তাই চিকিৎসকের পরামর্শে ঔষধ ব্যবহার করা উচিত। কিছু সাধারণ হোমিওপ্যাথিক ঔষধ যা আঁচিল দূর করতে সাহায্য করতে পারে:
১. Thuja Occidentalis: এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় হোমিও ঔষধ, যা বিভিন্ন ধরনের আঁচিল (যেমন সাধারণ আঁচিল, গের্মান আঁচিল, ইত্যাদি) দূর করতে ব্যবহৃত হয়। থুজা আঁচিলের সাইজ কমাতে এবং ত্বকের উপর উদ্দীপনা সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার: এটি প্রতিদিন ১-২ বার নেওয়া যেতে পারে, তবে ডোজ এবং পরিমাণ চিকিৎসকের পরামর্শে নির্ভরশীল।
২. Antimonium Crudum: এই ঔষধটি শীথিল এবং শক্ত আঁচিলের জন্য উপকারী হতে পারে। এটি ত্বকে থাকা কঠিন আঁচিলের জন্য উপযুক্ত এবং বিশেষ করে যখন আঁচিলটির মধ্যে ঝাঁঝালো বা বেদনাদায়ক অনুভূতি থাকে। ব্যবহার: এটি দৈনিক ২-৩ বার ব্যবহার করা হয়।
৩. Causticum: এটি একটি উপকারী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ যা আঁচিলের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় যখন আঁচিলটি ত্বক থেকে খুব গভীরে চলে যায় বা প্রায় সন্নিহিত ত্বকের সংযোগের সঙ্গে মিশে যায়। এটি ত্বকের উত্থান এবং আঁচিলের বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
ব্যবহার: এবং এটি সাধারণত প্রতি ৪-৬ ঘণ্টায় এক বার নেওয়া যেতে পারে।
৪. Medorrhinum: এটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী এবং পুনরাবৃত্ত আঁচিলের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ত্বকের উপরের স্তরের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং আঁচিল কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৫. Cinnabaris: এটি বিশেষভাবে মুখ, চোখ, বা গোপন অঙ্গের আঁচিলের জন্য উপকারী হতে পারে। স্নায়ু সিস্টেমের সহায়তা প্রদান করে এবং এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ত্বকের সমস্যার জন্য উপকারী।
৬. Nitric Acid: যদি আঁচিলটির চারপাশে জ্বালাপোড়া বা আঘাতের অনুভূতি থাকে, তবে Nitric Acid একটি কার্যকরী হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। এটি সাধারণত ছোট, কষ্টকর আঁচিলের জন্য ব্যবহৃত হয়।
পরামর্শ: ডোজ ও ব্যবহারের সময়কাল: হোমিওপ্যাথি ঔষধের ডোজ এবং সময়কাল রোগীর অবস্থান ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহারের আগে একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চিকিৎসক আপনার শারীরিক অবস্থা ও উপসর্গ দেখে উপযুক্ত ঔষধ নির্ধারণ করবেন।
এছাড়া, হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে আঁচিল দূর হতে সময় একটু সময় বেশি লাগতে পারে, তাই ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা চলিয়ে যেতে হবে।
আঁচিল দূর করার ঘরোয়া উপায়
আঁচিল (wart) দূর করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক এবং ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যেগুলি সহজলভ্য এবং সাধারণত নিরাপদ। তবে, এসব পদ্ধতি কাজ করতে কিছুটা সময় নিতে পারে এবং গুরুতর বা দীর্ঘস্থায়ী আঁচিলের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এখানে কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপায় দেওয়া হলো:
১. আপেল সিডার ভিনেগার (Apple Cider Vinegar): আপেল সিডার ভিনেগার তার অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্যের কারণে আঁচিলের উপরের স্তরকে নরম করে এবং এটি ধীরে ধীরে শুকিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
ব্যবহার: একটি তুলার প্যাডে আপেল সিডার ভিনেগার ভিজিয়ে আঁচিলের উপর লাগান। তারপর এটি সুরক্ষা টেপ দিয়ে আটকে রাখুন এবং রাতে এটি রেখে দিন। প্রতিদিন এটি ব্যবহার করলে কিছু সপ্তাহের মধ্যে আঁচিল কমে যেতে পারে।
২. রসুন (Garlic): রসুনের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণ রয়েছে যা আঁচিল কমাতে সহায়ক হতে পারে।
ব্যবহার: এক টুকরো রসুন কুচি করে আঁচিলের ওপর লাগিয়ে একটি ব্যান্ডেজ দিয়ে সুরক্ষিত করুন। এটি দিনভর রাখুন এবং প্রতিদিন এভাবে রসুনের প্রয়োগ চালিয়ে যান। কিছুদিন পর আঁচিল ছোট হয়ে আসবে।
৩. বেকিং সোডা (Baking Soda) এবং কোস্তব (Castor Oil): বেকিং সোডা এবং কোস্তবের মিশ্রণ আঁচিলের উপর প্রয়োগ করা হলে তা ত্বককে স্লাফিং (peel) করতে সাহায্য করে এবং আঁচিল কমাতে সহায়তা করতে পারে।
ব্যবহার: এক চা চামচ বেকিং সোডা এবং কোস্তব মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি আঁচিলের উপর লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। এটি প্রতিদিন ব্যবহার করলে আঁচিল শুকিয়ে যাবে।
৪. ভিটামিন সি (Vitamin C): ভিটামিন সি ত্বকের ক্ষত সারাতে সহায়তা করে এবং এটি আঁচিলের চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে।
ব্যবহার: একটি ভিটামিন সি ট্যাবলেটকে গুঁড়ো করে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি আঁচিলের ওপর লাগিয়ে সুরক্ষিত করুন। এটি দিনে একবার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. পেঁপে (Papaya): পেঁপের মধ্যে প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে যা আঁচিলের কোষগুলো ভেঙে ফেলে। এটি প্রাকৃতিকভাবে আঁচিল কমাতে সহায়ক হতে পারে।
ব্যবহার: পেঁপের রস আঁচিলের উপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন এবং তারপর ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন একাধিক বার ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬. প্রাকৃতিক চা গাছের তেল (Tea Tree Oil): চা গাছের তেল অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণসম্পন্ন, যা আঁচিলের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
ব্যবহার: একটি তুলা বা প্যাডে কয়েক ফোঁটা চা গাছের তেল লাগিয়ে আঁচিলের ওপর দিনে ২-৩ বার লাগান। এটি আঁচিল কমাতে সহায়তা করতে পারে।
৭. লেবুর রস (Lemon Juice): লেবুর রসের মধ্যে অ্যাসিডিক গুণ রয়েছে যা আঁচিলকে শুকিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
ব্যবহার: লেবুর রস আঁচিলের উপর সরাসরি লাগিয়ে রাখুন বা তুলার প্যাড ব্যবহার করে আঁচিলের ওপর লাগান। কিছু সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল দেখতে পাবেন।
৮. আলোরোধী পেঁপে বা পেঁপের পাতা (Papaya Leaf): পেঁপের পাতা আঁচিল কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে। এটি প্রাকৃতিকভাবে আঁচিলের উপর কাজ করে।
ব্যবহার: পেঁপের পাতাকে মিহি করে পেস্ট বানিয়ে আঁচিলের উপর লাগিয়ে কিছু সময় রেখে দিন। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে আঁচিল দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
৯. গরম পানি শেক : আঁচিলের ত্বক নরম করার জন্য এটি নিয়মিত গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে।
ব্যবহার: গরম পানিতে আঁচিলটি কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে নরম করলে, পরে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড বা অন্য কোনো চিকিৎসা উপাদান প্রয়োগ করা সহজ হয়।
ঘরোয়া চিকিৎসাগুলি সবসময় নিরাপদ না-ও হতে পারে, বিশেষ করে যদি আঁচিলটি বড় বা সংক্রমিত হয়ে থাকে। আঁচিল যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, আঘাতপ্রাপ্ত বা পরিবর্তন হতে থাকে, তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
উপসংহার
আজকের আলোচ্য বিষয় আচিল দূর করার উপায় ইতিমধ্যে এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। আপনিও চাইলে উপরক্ত আচিল দূর করার উপায় গুলো অবলম্বন করে আপনি আপনার আচিলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আপনি আপনার প্রিয়জনদের সাথে এই আর্টিকেলটি সেয়ার করুন। চাইলে আপনি আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আরও নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমার ওয়েবসাইট www.smonworld.com প্রতিদিন পরিদর্শন করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url