গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা
সুপ্রিয় পাঠক মন্ডলী, গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে আপনি কি আগ্রহী? এখন শীতকাল এই সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করার আনন্দটাই অন্যরকম। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
তাহলে, চলুন এই আর্টিকেলটি ধৈর্য ধরে এবং পুরোটা পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জেনে নিন গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা। চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেলটির এর প্রতিবেদনটিতে এখন আমি আপনার সাথে আলোচনা করতে চলেছি গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা সম্পর্কে। গরম পানি দিয়ে গোসল করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:
১. মাংসপেশি ও জয়েন্টের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে: গরম পানির তাপে মাংসপেশি শিথিল হয় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে জয়েন্টের ব্যথা ও মাংসপেশির স্টিফনেস কমে যায় এবং মাংসপেশির স্টিফনেস বা শক্ত ভাব দূর হয়।। ব্যায়ামের পরের ক্লান্তি দূর করতে কার্যকর।
২. রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে: গরম পানি দিয়ে গোসল করলে রক্তনালীগুলো প্রসারিত হয়। যা সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। রক্ত চলাচল উন্নত হওয়ার কারণে শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। এছাড়াও হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
৩. ত্বকের যত্নে সহায়ক: গরম পানির ভাপ ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলে দেয়। যা, ত্বক থেকে ময়লা এবং টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক মসৃণ ও স্বাস্থ্যকর হয়। ব্রণ বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যার ঝুঁকি কমায়।
৪. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ দূর করে: গরম পানির তাপে শরীর আরাম অনুভব করে। যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। স্নায়ু শিথিল হয় এবং মেজাজ ভালো হয়। এটি স্নায়ুগুলোর ওপর শিথিল প্রভাব ফেলে। উদ্বেগ এবং মানসিক চাপ কমিয়ে মনের প্রশান্তি এনে দেয়।
৫. ঠান্ডা ও সর্দি উপশমে কার্যকর: গরম পানি দিয়ে গোসল করলে নাকের ভেতরের শ্লেষ্মা পাতলা হয়। যা সর্দি দূর করতে সহায়ক। বুকে জমে থাকা কফ বা সর্দি কমায়। শ্বাসপ্রশ্বাস সহজ হয় এবং গলা ব্যথা কমে।
৬. গভীর ঘুমে সহায়ক: গরম পানির তাপে শরীর শিথিল হয়। তাই ঘুমের আগে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পায় এবং দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে।
৭. শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে: গরম পানিতে গোসল করলে ঘামের মাধ্যমে টক্সিন বের হয়ে যায়। যা শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।
৮. শরীর ডিটক্সিফাই করে: গরম পানিতে গোসল করার ফলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়। এটি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্বাস্থ্যকে আরও সতেজ রাখে।
৯. ঠান্ডা আবহাওয়ায় আরাম দেয়: শীতকালে গরম পানিতে গোসল শরীরকে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করে।এটি শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখে। শীতজনিত সমস্যা কমায়।
গরম পানি দিয়ে গোসল দৈনন্দিন জীবনের একটি আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস। এটি শরীর এবং মন উভয়ের জন্য উপকারী।
গরম পানি দিয়ে গোসল করার অপকারিতা
গরম পানি দিয়ে গোসল করার অনেক উপকারিতা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে এটি ক্ষতিকর হতে পারে। গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেলস এর এখন এ প্রতিবেদনটির মাধ্যমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে গরম পানি দিয়ে গোসল করার অপকারিতা। অপকারিতাগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো:
১. ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া: অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ক্ষয় হয়ে যায়।ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস ত্বকের সংবেদনশীলতা বাড়ায়।
২. চুলের ক্ষতি: গরম পানি চুলের স্কাল্পের প্রাকৃতিক তেল দূর করে, যা চুল শুষ্ক এবং ভঙ্গুর করে তোলে।এটি চুল পড়ার সমস্যাও বাড়াতে পারে।
৩. রক্তচাপের সমস্যা: বেশি গরম পানিতে গোসল রক্তচাপ হঠাৎ কমিয়ে দিতে পারে। যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি বিপদজনক হতে পারে।
৪. ত্বকের রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি: সংবেদনশীল ত্বকে অতিরিক্ত গরম পানি একজিমা, চুলকানি বা লালচে ভাব বাড়িয়ে দিতে পারে। গরম পানির কারণে ত্বক ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৫. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা: অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্যহীন করতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।
৬. হৃদরোগের ঝুঁকি: দীর্ঘ সময় ধরে গরম পানিতে গোসল করলে হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ পড়তে পারে।বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ।
৭. বার্ধক্যের লক্ষণ ত্বরান্বিত করা: গরম পানি প্রাকৃতিক কোলাজেন ক্ষয় করে, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস করে। এটি দ্রুত বার্ধক্যের লক্ষণ, যেমন বলিরেখা বা ঝুলে যাওয়া ত্বক, বৃদ্ধি করতে পারে।
৮. স্নায়ুতন্ত্রের উপর চাপ: গরম পানির তাপমাত্রা বেশি হলে এটি স্নায়ুতে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।কখনও কখনও মাথা ঘোরা বা ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে।
৯. চোখ ও সংবেদনশীল অঙ্গের জন্য ক্ষতিকর: অতিরিক্ত গরম পানি চোখের সংবেদনশীল অংশ এবং অন্যান্য অঙ্গের চামড়ার ক্ষতি করতে পারে।
ডাক্তারের পরামর্শ: হৃদরোগ বা ত্বকের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গরম পানির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করা উচিত। যথাযথভাবে ব্যবহারে গরম পানি উপকারী, তবে এর অপকারিতা এড়াতে সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি।
শীতকালে গরম পানিতে গোসল, উপকার নাকি ক্ষতি?
শীতকালে গরম পানিতে গোসল করার ক্ষেত্রে উপকারিতা ও অপকারিতা বা ক্ষতি দুটোই রয়েছে। এটি আপনার শরীরের অবস্থা, ত্বকের ধরন এবং ব্যবহারের পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে। নিয়ম মেনে শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করলে অনেক উপকারিতা যেমন মিলবে ঠিক তেমনি নিয়ম ও সাবধানতা অবলম্বন না করে শীতকালে গরম পানি নিয়ে গোসল করলে ক্ষতি সম্মুখীন হতে পারে।
শীতকালে গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা
১. শরীরকে উষ্ণ রাখে
২. রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে
৩. সর্দি-কাশি উপশমে কার্যকর
৪. মাংসপেশি ও জয়েন্টের আরাম
৫. ঘুম ভালো হয়
শীতকালে গরম পানিতে গোসলের ক্ষতি
১. ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে
২. চুলের ক্ষতি
৩. রক্তচাপের সমস্যা
৪. ত্বকের জ্বালাপোড়া বা লালচে ভাব
শীতকালে গরম পানিতে গোসল শরীরের জন্য আরামদায়ক এবং উপকারী হতে পারে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি ক্ষতির কারণ হতে পারে। সঠিক পদ্ধতিতে গরম পানিতে গোসল করলে আপনি এর উপকারিতা উপভোগ করতে পারবেন।
গরম পানি দিয়ে গোসল করার নিয়ম
উপরের প্রতিবেদন গুলো পড়ার মাধ্যমে ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা। এখন এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে জানবেন গরম পানি দিয়ে গোসল করার নিয়ম।
গরম পানি দিয়ে গোসল করার ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে এর উপকারিতা পাওয়া যায় এবং সম্ভাব্য ক্ষতি এড়ানো যায়। নিচে গরম পানি দিয়ে গোসল করার সঠিক নিয়ম বর্ণনা করা হলো:
১. পানির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন: গরম পানির তাপমাত্রা ৩৭°-৪০° সেলসিয়াসের মধ্যে রাখুন। পানি অতিরিক্ত গরম হওয়া উচিত নয়, যা ত্বক পোড়াতে পারে বা শুষ্কতা বাড়াতে পারে।
২. গোসলের সময় নির্ধারণ করুন: গরম পানিতে গোসল ১০-১৫ মিনিটের বেশি করা উচিত নয়। বেশি সময় ধরে গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হতে পারে।
৩. গোসলের সঠিক ক্রম অনুসরণ করুন
- চুল ধোয়ার আগে স্কাল্প ভিজিয়ে নিন: প্রথমে গরম পানি দিয়ে চুল ও মাথার ত্বক ধীরে ধীরে ভিজিয়ে নিন। অতিরিক্ত গরম পানি সরাসরি মাথায় ঢালবেন না।
- শরীরের নিচের অংশ থেকে ধোয়া শুরু করুন: গোসল শুরু করুন পায়ের নিচের দিক থেকে এবং ধীরে ধীরে শরীরের উপরের অংশে যান।
- মুখ ও সংবেদনশীল অংশের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন: মুখ, গলা ও অন্যান্য সংবেদনশীল অংশে খুব বেশি গরম পানি ব্যবহার করবেন না।
৪. ত্বক ও চুলের যত্ন নিন: মাইল্ড সাবান বা শ্যাম্পু ব্যবহার করুন: গরম পানিতে ত্বক ও চুল সহজে শুষ্ক হয়ে যায়, তাই হাইড্রেটিং সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। গোসলের পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন: ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সঙ্গে সঙ্গে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
৫. সঠিক সময়ে গরম পানিতে গোসল করুন
- সকালে: শীতকালে সকালে গরম পানিতে গোসল শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।
- রাতে: ঘুমানোর আগে গরম পানিতে গোসল শরীরকে শিথিল করে এবং ভালো ঘুম আনতে সহায়ক।
৬. স্বাস্থ্যগত সমস্যা থাকলে সতর্ক থাকুন: যদি আপনার রক্তচাপের সমস্যা, ত্বকের সংবেদনশীলতা, বা হৃদরোগ থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গরম পানির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করুন। গর্ভবতী নারীদেরও অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার এড়ানো উচিত।
৭. অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার করবেন না: শরীর লালচে বা জ্বালাপোড়া অনুভূত হলে পানি আরও ঠাণ্ডা করে নিন। গরম পানির ভাপ খুব কাছ থেকে শ্বাস নেওয়া এড়িয়ে চলুন, বিশেষত সর্দি বা হাঁপানি থাকলে।
৮. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা: শিশুদের জন্য পানি হালকা গরম রাখুন। প্রথমে নিজে পরীক্ষা করে নিন যে পানি ত্বকের জন্য সহনশীল কিনা।
গরম পানি দিয়ে গোসল করলে শরীর আরাম পায় এবং শীতকালে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। তবে, সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা এবং নিয়ম মেনে গোসল করা খুবই জরুরি, যাতে ত্বক ও শরীরের ক্ষতি না হয়।
মাথায় গরম পানি দিলে কি হয়
গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পাশাপাশি আমাদের জানতে হবে মাথায় গরম পানি দিলে কি হয় সে সম্পর্কে। মাথায় গরম পানি দেওয়ার কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। এটি চুল ও স্ক্যাল্পের জন্য ভালো হতে পারে, তবে অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহারে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
মাথায় গরম পানি দেওয়ার উপকারিতা
১. স্ক্যাল্প পরিষ্কার করে: গরম পানি স্ক্যাল্পের ময়লা ও তেল সহজে পরিষ্কার করে। এটি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
২. স্ট্রেস কমায়: গরম পানি মাথায় দিলে মাংসপেশি শিথিল হয় এবং মানসিক চাপ কমে। এটি রিলাক্সেশন দেয়, যা মাথার ব্যথা উপশমে সহায়ক হতে পারে।
৩. খুশকি কমাতে সহায়ক: হালকা গরম পানি স্ক্যাল্পকে পরিষ্কার করে এবং খুশকির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। শুষ্ক ও জমে থাকা মৃত ত্বকের কোষ সহজে দূর হয়।
মাথায় গরম পানি দেওয়ার ক্ষতি
১. স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে: বেশি গরম পানি স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল দূর করে, যা স্ক্যাল্প ও চুলকে শুষ্ক ও রুক্ষ করে তুলতে পারে। এটি চুল ভেঙে যাওয়া ও চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
২. চুলের শুষ্কতা ও ক্ষতি: গরম পানি চুলের কিউটিকল খুলে দেয়, যা চুলকে দুর্বল এবং ভঙ্গুর করে তোলে। নিয়মিত গরম পানি ব্যবহারে চুলের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যেতে পারে।
৩. স্ক্যাল্পে জ্বালাপোড়া বা সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি: অতিরিক্ত গরম পানি সংবেদনশীল স্ক্যাল্পে জ্বালাপোড়া, চুলকানি বা লালচে ভাব তৈরি করতে পারে।
৪. চুল পড়ার ঝুঁকি বাড়ায়: গরম পানির কারণে স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালনে সমস্যা হলে চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে।
সতর্কতা: তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন। অতিরিক্ত গরম পানি সরাসরি মাথায় ব্যবহার করবেন না। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। মাথা ধোয়ার জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। এটি চুল পরিষ্কার রাখে এবং স্ক্যাল্প শুষ্ক করে না। শেষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
গরম পানির পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুলে কিউটিকল বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল শক্তিশালী হয়। প্রয়োজনে শুধুমাত্র শীতকালে বা যখন স্ক্যাল্প পরিষ্কার করার প্রয়োজন, তখনই গরম পানি ব্যবহার করুন।
গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা সর্ম্পকিত প্রশ্ন ও তার উত্তর
প্রশ্ন ১: গরম পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরে কী প্রভাব ফেলে?
উত্তর: গরম পানি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, মাংসপেশি শিথিল করে এবং মানসিক চাপ কমায়। তবে অতিরিক্ত গরম পানি ত্বক ও চুল শুষ্ক করতে পারে।
প্রশ্ন ২: গরম পানি দিয়ে গোসল কীভাবে মানসিক চাপ দূর করে?
উত্তর: গরম পানি স্নায়ুকে শিথিল করে এবং শরীরে আরাম এনে দেয়, যা মানসিক চাপ দূর করতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৩: গরম পানিতে গোসল কি ঘুমের জন্য ভালো?
উত্তর: হ্যাঁ, রাতে গরম পানিতে গোসল শরীরকে শিথিল করে এবং গভীর ও প্রশান্ত ঘুমে সহায়তা করে।
প্রশ্ন ৪: গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকে কী সমস্যা হতে পারে?
উত্তর: অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে, যা ত্বককে শুষ্ক এবং রুক্ষ করতে পারে।
প্রশ্ন ৫: গরম পানিতে গোসল কি সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে?
উত্তর: হ্যাঁ, গরম পানির ভাপ শ্বাসনালী পরিষ্কার করে, নাক বন্ধ খুলে দেয় এবং সর্দি-কাশি কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৬: গরম পানিতে গোসল কি চুলের জন্য ভালো?
উত্তর: মোটামুটি ভালো হলেও অতিরিক্ত গরম পানি চুলের স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে এবং চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর করে তুলতে পারে।
প্রশ্ন ৭: গরম পানিতে গোসল কি আর্থ্রাইটিস বা জয়েন্টের ব্যথায় উপকারী?
উত্তর: হ্যাঁ, এটি জয়েন্ট এবং মাংসপেশির ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন ৮: গরম পানি দিয়ে গোসল কি হৃদরোগীদের জন্য নিরাপদ?
উত্তর: মাঝারি তাপমাত্রার গরম পানি নিরাপদ হতে পারে, তবে অতিরিক্ত গরম পানি রক্তচাপের ওঠানামা ঘটাতে পারে, যা হৃদরোগীদের জন্য বিপজ্জনক।
প্রশ্ন ৯: গরম পানিতে গোসল করার সঠিক সময় কী?
উত্তর: সকালে শীতের সময় শরীর উষ্ণ করার জন্য এবং রাতে ভালো ঘুমের জন্য গরম পানিতে গোসল করা উপকারী।
প্রশ্ন ১০: গরম পানিতে গোসল করলে ত্বকের কোলাজেন ক্ষতি হয় কি?
উত্তর: অতিরিক্ত গরম পানি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়, যা ত্বককে দ্রুত বুড়িয়ে যেতে পারে।
প্রশ্ন ১১: গরম পানিতে গোসল কি ডিটক্সিফিকেশনে সাহায্য করে?
উত্তর: হ্যাঁ, গরম পানির তাপে ঘাম হওয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে টক্সিন বের হয়।
প্রশ্ন ১২: গরম পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরে ব্যথা উপশম হয় কেন?
উত্তর:গরম পানি রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে এবং পেশি শিথিল করে ব্যথা কমায়।
প্রশ্ন ১৩: গরম পানিতে গোসল কি ত্বকের জন্য সবসময় ভালো?
উত্তর: না, অতিরিক্ত গরম পানি ত্বক শুষ্ক এবং সংবেদনশীল করে তুলতে পারে।
প্রশ্ন ১৪: গরম পানিতে গোসল কি সর্দি-জ্বরের সময় ক্ষতিকর হতে পারে?
উত্তর: না, সর্দি-জ্বরের সময় গরম পানি আরাম দেয় এবং নাক পরিষ্কার রাখতে সহায়ক।
প্রশ্ন ১৫: গরম পানিতে গোসলের সর্বোচ্চ সময়সীমা কত হওয়া উচিত?
উত্তর: গরম পানিতে ১০-১৫ মিনিটের বেশি সময় না থাকাই ভালো, কারণ দীর্ঘ সময় ত্বকের আর্দ্রতা হারাতে পারে।
এই প্রশ্নোত্তরগুলো গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
উপসংহার
গরম পানি দিয়ে গোসল করার উপকারিতা ও অপকারিতা এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটির একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। এই আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন এবং আপনার যদি আর্টিকেলটি সম্পর্কে কোন মতামত থেকে থাকে তবে কমেন্ট বক্সে জানতে পারেন। এতক্ষন আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে এই আর্টিকেলটির সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url