গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

সুপ্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আপনি কি গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইটে খোঁজাখুঁজি করছেন? তাহলে বলব আপনি সঠিক ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেছেন। আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করতে চলেছি গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।
তাহলে চলুন সুপ্রিয় পাঠাক, এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পরে আপনি অনেক উপকৃত হবেন।
তাহলে চলুন সুপ্রিয় পাঠাক, এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ও ধৈর্য ধরে পড়ার মাধ্যমে জেনে নিন গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পরে আপনি অনেক উপকৃত হবেন।

গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা

গন্ধ ভাদালি পাতা, যা স্থানীয়ভাবে ভেষজ উদ্ভিদের একটি অংশ হিসেবে পরিচিত, ঔষধি গুণাবলীর জন্য বিখ্যাত। এটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এবং লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা নিচে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলো:

১. জ্বর নিরাময়ে সহায়ক: গন্ধ ভাদালি পাতা জ্বর নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। এর পাতার রস শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সহায়তা করে।

২. ত্বকের সমস্যার চিকিৎসা: পাতার রস ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় যেমন ফোঁড়া, খোস-পাঁচড়া এবং চুলকানিতে কার্যকর। এটি অ্যান্টিসেপ্টিক গুণসম্পন্ন, যা ত্বকে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।

৩. শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করতে: গন্ধ ভাদালি পাতা হাঁপানি, কাশি এবং সর্দি সারাতে ব্যবহৃত হয়। এর রস শ্বাসনালীর প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসকষ্টে আরাম দেয়।

৪. পেটের সমস্যা দূর করতে: পাতার রস গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা এবং হজমে সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এটি অন্ত্রের পরজীবী ধ্বংস করতেও কার্যকর।

৫. বাত এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে: গন্ধ ভাদালি পাতার পেস্ট ব্যথার স্থানে লাগালে প্রদাহ কমে এবং ব্যথা উপশম হয়।

৬. কাটা-ছেঁড়ায় ব্যবহার: পাতার রস কাটা-ছেঁড়া বা ক্ষতস্থানে প্রয়োগ করলে দ্রুত ঘা শুকিয়ে যায়।

৭. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ: গন্ধ ভাদালি পাতায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ব্যবহারের পদ্ধতি: পাতার রস বের করে সরাসরি প্রয়োগ করা যায়। পাতাগুলি পেস্ট করে প্রয়োজনে ব্যথার জায়গায় ব্যবহার করা হয়। চা বা ক্বাথ হিসেবে পান করা যায়।

সতর্কতা: গন্ধ ভাদালি পাতা ব্যবহার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত, কারণ এটি অতিরিক্ত ব্যবহারে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

গন্ধ ভাদালি পাতার অপকারিতা

গন্ধ ভাদালি পাতা সাধারণত অনেক ঔষধি গুণাগুণের জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে অতিরিক্ত বা ভুল উপায়ে ব্যবহারের ফলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা হতে পারে। এগুলো নিম্নরূপ:

১. অতিরিক্ত ব্যবহার থেকে বিষক্রিয়া: গন্ধ ভাদালি পাতায় কিছু সক্রিয় রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা অতিরিক্ত ব্যবহারে শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।

২. ত্বকের জ্বালাপোড়া বা অ্যালার্জি: পাতার রস সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে চুলকানি, লালচে ভাব, বা জ্বালাপোড়ার মতো অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

৩. হজমে সমস্যা: পাতার রস বা চা অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যা, যেমন ডায়রিয়া বা পেটের অস্বস্তি হতে পারে।

৪. রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে: গন্ধ ভাদালি পাতা রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও, যারা নিম্ন রক্তচাপ (হাইপোটেনশন) সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে।

৫. গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ঝুঁকি: গর্ভাবস্থায় এই পাতা ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত, কারণ এটি জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে এবং গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৬. শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে: ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে এর অতিরিক্ত বা ভুল ডোজিং স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

৭. ড্রাগ ইন্টার‌্যাকশন: গন্ধ ভাদালি পাতা কিছু ওষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা স্নায়ুর সমস্যার জন্য ওষুধ গ্রহণ করেন, তাহলে এটি ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারে।

সতর্কতা: পরিমিত পরিমাণে এবং সঠিক উপায়ে এটি ব্যবহার করা উচিত। ব্যবহারের আগে একজন ভেষজ বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারে বা কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে অবিলম্বে ব্যবহার বন্ধ করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

গন্ধ ভাদালি পাতা খাওয়ার নিয়ম

গন্ধ ভাদালি পাতা খাওয়ার নিয়ম এবং পরিমাণ অবশ্যই সঠিকভাবে অনুসরণ করা উচিত, কারণ অতিরিক্ত বা ভুল উপায়ে খাওয়ার ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। নিচে গন্ধ ভাদালি পাতা খাওয়ার কিছু সাধারণ নিয়ম দেয়া হলো:

১. পাতার রস (Juice) খাওয়া
  • প্রস্তুতি: প্রথমে গন্ধ ভাদালি পাতাগুলো ভালভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করুন। এরপর পাতা গুলিকে পিষে রস বের করুন।
  • পরিমাণ: দৈনিক ১-২ চা চামচ রস সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। তবে, পেটের অবস্থা অনুযায়ী পরিমাণ পরিবর্তন করা যেতে পারে। 
  • ফলস্বরূপ: এটি হজম, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সারাতে সহায়ক।

২. গন্ধ ভাদালি পাতা ক্বাথ (Herbal Decoction)

  • প্রস্তুতি: ১০-১৫টি গন্ধ ভাদালি পাতা নিয়ে ২ কাপ পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। পানি অর্ধেক হয়ে এলে গ্যাস বন্ধ করে ক্বাথ ছেঁকে নিন। পরিমাণ: ১ কাপ ক্বাথ দিনে ১-২ বার খাওয়া যেতে পারে।
  • ফলস্বরূপ: ক্বাথের মধ্যে উপস্থিত ঔষধি গুণাগুণ শরীরে দ্রুত প্রবাহিত হয়, যা শ্বাসযন্ত্র, হজমের সমস্যা এবং জ্বরের চিকিৎসায় কার্যকর।

৩. গন্ধ ভাদালি পাতা চা

  • প্রস্তুতি: পাতা ৫-৭টি সেদ্ধ পানি দিয়ে ৫-১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন। এর মধ্যে যদি চাইলে মধু বা লেবুর রসও মেশাতে পারেন।
  • পরিমাণ: ১ কাপ চা দিনে ১-২ বার খেতে পারেন।
  • ফলস্বরূপ: এটি শরীরকে সতেজ রাখে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়ক।

৪. পাতা সেদ্ধ করে খাওয়া

  • প্রস্তুতি: গন্ধ ভাদালি পাতা সেদ্ধ করে এর শাক বা তরকারি হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
  • পরিমাণ: প্রতিদিন ১-২ টি সেদ্ধ পাতা খাওয়া যেতে পারে।
  • ফলস্বরূপ: শাক খাওয়ার ফলে এটি শরীরে শক্তি প্রদান করে এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সুবিধা দেয়।
৫. সতর্কতা
  • পরিমাণ: গন্ধ ভাদালি পাতা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • প্রতিক্রিয়া: এটি যাদের অ্যালার্জি বা প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে, তাদের জন্য ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত।
  • বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: পাতা ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যদি আপনি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা বা ঔষধ ব্যবহার করেন।
গন্ধ ভাদালি পাতা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে এটি আপনার স্বাস্থ্য উপকারে আসবে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে বা ভুল ব্যবহারে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

গন্ধ ভাদালি পাতার গুনাগুন

গন্ধ ভাদালি পাতা (এটি বিভিন্ন স্থানীয় নামেও পরিচিত হতে পারে) ঔষধি গুণাবলীতে সমৃদ্ধ। এই পাতার অনেক প্রাকৃতিক উপকারিতা রয়েছে, যা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়ক। নিচে গন্ধ ভাদালি পাতার কিছু গুনাগুন বর্ণনা করা হলো:

১. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ: গন্ধ ভাদালি পাতায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পদার্থ থাকে যা শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়ক। এটি শরীরের কোষগুলোকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে, যা বয়স বাড়ানোর প্রক্রিয়া ধীর করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

২. এন্টি-ইনফ্লেমেটরি (প্রদাহনাশক) গুণ: পাতায় প্রদাহ কমানোর গুণ রয়েছে, যা শরীরের যেকোনো প্রদাহজনিত সমস্যা, যেমন বাত, স্নায়ু ব্যথা বা জয়েন্টে ব্যথা কমাতে সহায়ক। এটি প্রদাহজনিত রোগের চিকিৎসায় কার্যকর।

৩. শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: গন্ধ ভাদালি পাতা শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় যেমন হাঁপানি, কাশি, সর্দি, বা শ্বাসকষ্টে উপকারী। এটি শ্বাসনালীতে সঞ্চিত শ্লেষ্মা পরিষ্কার করতে সহায়তা করে এবং শ্বাসকষ্টে আরাম দেয়।

৪. হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি: গন্ধ ভাদালি পাতা হজম শক্তি বাড়াতে সহায়ক। এটি গ্যাস্ট্রিক এবং পেটের সমস্যা যেমন পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়ক। এটি খাবারের পুষ্টি শোষণও উন্নত করতে পারে।

৫. ত্বকের যত্ন: গন্ধ ভাদালি পাতা ত্বকের নানা সমস্যা যেমন ফোঁড়া, একজিমা, চুলকানি এবং পিম্পল থেকে মুক্তি দিতে সহায়ক। এটি ত্বকে অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ রাখে, যা ত্বকের প্রদাহ এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

৬. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: এই পাতা শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সহায়ক, বিশেষ করে জ্বরের সময় এটি কার্যকর। পাতা থেকে বের করা রস শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৭. রক্তশুদ্ধি: গন্ধ ভাদালি পাতা রক্তের শুদ্ধকরণে সাহায্য করে। এটি রক্তে জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে।

৮. প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: গন্ধ ভাদালি পাতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক। এটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে, বিশেষত মৌসুমি রোগের বিরুদ্ধে।

৯. ব্যথা উপশম: গন্ধ ভাদালি পাতা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, বিশেষত মাংসপেশি এবং জয়েন্টের ব্যথা। এটি প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে।

১০. ডিটক্সিফাইং (বিষ দূর করা): গন্ধ ভাদালি পাতা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক। এটি দেহকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে এবং শরীরকে পরিষ্কার রাখতে সহায়ক।

১১. হাইপোটেনসিভ (রক্তচাপ কমানো) গুণ: গন্ধ ভাদালি পাতা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা সমাধানে কার্যকর হতে পারে।

১২. এন্টি-ডায়াবেটিক গুণ: গন্ধ ভাদালি পাতা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও উপকারী। এটি রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, তবে এটি ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ব্যবহারের উপায়: গন্ধ ভাদালি পাতা রস, ক্বাথ, চা বা পেস্ট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাতা সেদ্ধ করে বা শুকিয়ে টুকরো করে চা বানিয়ে পান করা যেতে পারে।

গন্ধ ভাদালি পাতার বৈশিষ্ট্য

গন্ধ ভাদালি পাতা একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা ঔষধি গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এটি প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সমাধানে সহায়ক। গন্ধ ভাদালি পাতার কিছু বৈশিষ্ট্য নিচে বর্ণিত হলো:

১. গন্ধযুক্ত: গন্ধ ভাদালি পাতা তার নাম অনুযায়ী একটি সুগন্ধী উদ্ভিদ। এর পাতার মধ্যে একটি মিষ্টি বা তীব্র গন্ধ থাকে, যা এর ঔষধি গুণাগুণের পরিচায়ক হিসেবে কাজ করে।

২. আকৃতি ও রং: গন্ধ ভাদালি পাতা প্রায় ৪-৬ ইঞ্চি লম্বা এবং এর পাতা গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির হতে পারে। পাতা গাড় সবুজ রঙের, যার রৈখিক বা মসৃণ পৃষ্ঠ থাকে।

৩. প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ: গন্ধ ভাদালি পাতায় অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ রয়েছে, যা ক্ষত বা প্রদাহজনিত স্থানে দ্রুত উপশম দিতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের নানা সংক্রমণ বা ফোঁড়া সারাতে ব্যবহৃত হয়।

৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: গন্ধ ভাদালি পাতা প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণে সমৃদ্ধ, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং কোষের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।

৫. এন্টি-ইনফ্লেমেটরি (প্রদাহ কমানো): এই পাতায় প্রদাহ কমানোর গুণ রয়েছে, যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহজনিত সমস্যা যেমন বাত, জয়েন্টের ব্যথা, এবং শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহে কার্যকর।

৬. গরম এবং ঠাণ্ডা প্রকৃতি: গন্ধ ভাদালি পাতা আয়ুর্বেদিকভাবে গরম প্রকৃতির এবং কিছু সময় ঠাণ্ডা গুণও ধারণ করতে পারে, যা শরীরের তাপমাত্রা সমন্বয় করতে সাহায্য করে। এটি শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং গরম সম্পর্কিত রোগে উপকারী।

৭. ভেষজ উপাদানসমৃদ্ধ: গন্ধ ভাদালি পাতা বিভিন্ন প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান ধারণ করে, যেমন: ট্যানিন, ফ্ল্যাভোনয়েড, স্যাপোনিন, এবং অ্যালকালয়েড যা এর ঔষধি গুণাগুণকে শক্তিশালী করে।

৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: গন্ধ ভাদালি পাতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি এবং সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

৯. বিকল্প চিকিৎসায় ব্যবহার: গন্ধ ভাদালি পাতা প্রাকৃতিক চিকিৎসা বা বিকল্প চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। আয়ুর্বেদ, ইউনানি ও অন্যান্য ভেষজ চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায়।

১০. বিষক্রিয়া বা ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্য: গন্ধ ভাদালি পাতা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন বের করার ক্ষমতা রাখে, যা দেহকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে এবং সাধারণ স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে সহায়ক।

১১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: গন্ধ ভাদালি পাতা রক্তে শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।

১২. ব্যথা উপশমকারী: গন্ধ ভাদালি পাতা ব্যথা কমানোর জন্য উপকারী। এটি বিশেষত যন্ত্রণা বা প্রদাহজনিত ব্যথায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে, যেমন গাঁটের ব্যথা বা মাথাব্যথা।

এগুলো হলো গন্ধ ভাদালি পাতার বৈশিষ্ট্য, যা একে একটি প্রাকৃতিক ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত করে তোলে। তবে, ব্যবহারের আগে এর সঠিক পরিমাণ এবং প্রয়োগের পদ্ধতি জানাটা গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যখন এটি চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়।

গাঁদাল পাতার রেসিপি

লেখক এর মন্তব্য। গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

পাঠক, আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারী ও ধৈর্য ধরে পড়েছেন। পড়ার মাধ্যমে ইতিপূর্বে জানতে পেরেছেন গন্ধ ভাদালি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা। আপনাদের যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে। তবে আপনাদের প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করুন।

এই রকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পেতে নিয়মিত আমার www.sumonworld.com ওয়েবসাইটটি পরিদর্শন করুন। আবারও দেখা হবে নতুন কোন এক আর্টিকেলের মাধ্যমে। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ভাল থাকুন এবং প্রিয়জনদের ভালবাসুন। আল্লাহ হাফেজ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url