সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সেভেন আপ আমরা সকলেই খেতে খুন পচ্ছন্দ করি। আর সেয়াটা যদি হয় দাওয়াতের বাসায় তাহলেতো কোন কথাই নাই। দাওয়াতের খাবার দাবার শেষে সেভেন আপ চাইই চাই। কিন্তু সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা অনেকেই জানি না।
আমাদের মধ্যে যারা সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানি না তাদের জন্য আজকের এই পোস্টটি। কেননা আজকেই এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা
সেভেন আপ একটি কার্বোনেটেড সফট ড্রিংক, যা সাধারণত ঠান্ডা পানীয় হিসেবে উপভোগ করা হয়। তবে এটি কোনো পুষ্টিকর পানীয় নয় এবং নিয়মিত পান করা স্বাস্থ্যকর বিকল্প নয়। তবুও, কিছু ক্ষেত্রে এটি কিছু উপকারিতা দিতে পারে, যেমন—
অ্যাসিডিটি ও হজমে সহায়তা: মাঝেমধ্যে সেভেন আপ পান করলে গ্যাস বা বদহজমজনিত অস্বস্তি সাময়িকভাবে কমতে পারে।
বমিভাব কমাতে সাহায্য: কিছু লোক হালকা বমিভাব বা অস্বস্তি অনুভব করলে ঠান্ডা সেভেন আপ পান করলে স্বস্তি পেতে পারেন।
শরীরকে রিফ্রেশ করে: গরমের দিনে ঠান্ডা সেভেন আপ পান করলে সাময়িকভাবে সতেজতা অনুভূত হতে পারে।
শক্তি বৃদ্ধি: এতে প্রচুর চিনি থাকে, যা দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে (তবে এটি স্বাস্থ্যকর নয়)।
তাত্ক্ষণিক সতেজতা: ৭ আপ লেবুর স্বাদের কারণে তাজা এবং সতেজ অনুভূতি প্রদান করে। এটি বিশেষভাবে গরম আবহাওয়ায় তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করতে পারে।
সোশ্যাল ইভেন্টে অংশগ্রহণ: ৭ আপ সাধারণত সামাজিক অনুষ্ঠানে এবং পার্টিতে পরিবেশন করা হয়, যা সামাজিক মেলামেশায় সাহায্য করে এবং আনন্দময় পরিবেশ তৈরি করে।
পেটের অস্বস্তি কমানো: কিছু লোক মনে করেন যে ফিজি ড্রিঙ্কস, যেমন ৭ আপ, পেটের গ্যাস এবং অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। এটি পেটের সমস্যা থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারে।
স্বাদ ও গন্ধ: ৭ আপ-এর লেবুর স্বাদ এবং সুগন্ধ অনেকের কাছে প্রিয়। এটি খাবারের সাথে মিশিয়ে বা এককভাবে উপভোগ করা যেতে পারে।
মনের প্রশান্তি: ৭ আপ খাওয়া কিছু মানুষের জন্য মনকে প্রশান্তি প্রদান করতে পারে এবং একটি আনন্দদায়ক অনুভূতি দিতে পারে।
সতর্কতা: স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য বেশি পরিমাণে সফট ড্রিংক পান না করে লেবু পানি, ডাবের পানি বা হালকা ভেষজ পানীয় বেছে নেওয়া ভালো।
সেভেন আপ খাওয়ার অপকারিতা
সেভেন আপ এবং অন্যান্য সফট ড্রিংক নিয়মিত পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা হলো:
১. অতিরিক্ত চিনি ও ওজন বৃদ্ধি: সেভেন আপে উচ্চমাত্রার চিনি থাকে, যা অতিরিক্ত ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
২. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: নিয়মিত সফট ড্রিংক পান করলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৩. দাঁতের ক্ষতি: সেভেন আপে থাকা চিনি ও অ্যাসিড দাঁতের এনামেল নষ্ট করে, ফলে দাঁতের ক্ষয় এবং ক্যাভিটির সমস্যা হতে পারে।
৪. হজমের সমস্যা ও অ্যাসিডিটি: সেভেন আপের কার্বনেশন (গ্যাসযুক্ত হওয়া) এবং অ্যাসিডিক উপাদান পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি, গ্যাস বা বদহজম সৃষ্টি করতে পারে।
৫. কিডনির ক্ষতি: গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত সফট ড্রিংক পান করলে কিডনির কার্যকারিতা কমতে পারে এবং কিডনির পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৬. হাড়ের জন্য ক্ষতিকর: এতে ফসফরিক অ্যাসিড থাকতে পারে, যা শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণে বাধা দেয় এবং দীর্ঘমেয়াদে হাড় দুর্বল করতে পারে।
৭. হৃদরোগের ঝুঁকি: অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সেভেন আপ মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে, তবে নিয়মিত পান করলে দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
সেভেন আপের উপাদান
সেভেন আপের মূল উপাদানগুলো হলো:
- কার্বোনেটেড পানি – এতে কার্বন ডাই অক্সাইড মিশ্রিত থাকে, যা পানীয়টিকে গ্যাসযুক্ত ও ঝাঁঝালো করে।
- হাই ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ (High Fructose Corn Syrup) বা চিনি – এটি পানীয়টিকে মিষ্টি স্বাদ দেয়।
- সাইট্রিক অ্যাসিড (Citric Acid) – এটি টক স্বাদ যোগ করে এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম ফ্লেভার – সাধারণত লেবু ও লাইম ফ্লেভার ব্যবহৃত হয়।
- সোডিয়াম সাইট্রেট (Sodium Citrate) – এটি পানীয়ের অম্লত্ব নিয়ন্ত্রণ করে।
- পটাশিয়াম বেনজোয়েট (Potassium Benzoate) – এটি সংরক্ষণকারী পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা পানীয়টিকে দীর্ঘ সময় সতেজ রাখে।
ডায়েট সেভেন আপে চিনি বাদ দিয়ে অ্যাসপারটেম বা অন্যকোনো কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করা হয়, যা ক্যালোরি কম রাখতে সাহায্য করে।
সেভেন আপ এর দাম কত
সেভেন আপের দাম বিভিন্ন স্থানে এবং প্যাকেজিংয়ের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত ১ লিটার সেভেন আপের দাম প্রায় ৭০ টাকা এবং ২ লিটার সেভেন আপের দাম ১৩০ টাকা এবং ৫০০ মিলিলিটার বোতলের দাম প্রায় ৩৫-৪০ টাকা হতে পারে।
তবে, স্থানীয় বাজার, দোকান বা সুপারমার্কেটের উপর ভিত্তি করে এই দাম কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। সুনির্দিষ্ট দামের জন্য বাংলাদেশের বা রাজশাহীর স্থানীয় দোকান বা সুপারমার্কেটে খোঁজ নেওয়া উত্তম।
মন্তব্য। সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সেভেন আপ প্রেমি ভাই ও বোনেরা আজকের এই পোস্টটির একেবারে শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আশা করি পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং পড়ার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা।
পোস্টটিনপড়ে ভালো লাগলে প্রিয়জনদের সাথে সেয়ার করুন। ধন্যবাদ এতোক্ষণ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে সেভেন আপ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত পোস্টটির সাথে থাকার জন্য।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url